সারাদেশ

‘সমাবেশে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো’

ডেস্ক রিপোর্ট: কুড়িগ্রাম ৩ আসনে প্রচারণা শেষে নৌকা-ট্রাকের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার অপেক্ষায় ভোটাররা। তবে আগামী ৭ জানুয়ারি ট্রাক মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হারাতে আত্নবিশ্বাসী নৌকা। এই আসনে মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে (গবা) ও ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. মো. আককাছ আলী সরকার এগিয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে নৌকার মাঝিকে এগিয়ে রাখতে চাচ্ছেন এই এলাকার ভোটাররা।

এই আসনটির এবারের নৌকার মাঝি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে (গবা) প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য। পাশাপাশি তিনি উলিপুর উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি এবং উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ পেশায় ব্যবসায়ী এবং উলিপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে তার নামে একটি মোড় (গবার মোড়) রয়েছে।

অপরদিকে, ভোটের মাঠে নৌকার পাশাপাশি সক্রিয় ট্রাক মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আলহাজ্ব ডা.মোহাম্মদ আককাছ আলী সরকার একজন চিকিৎসক, সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ। তিনি রংপুরের প্রাইম মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক। রাজনৈতিক জীবনের শুরু লগ্নে তিনি জাতীয় পার্টির (এরশাদ) রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি কুড়িগ্রাম-৩ আসন থেকে নির্বাচিত ১০ম জাতীয় উপনির্বাচনে ৫ মাসের জন্য সংসদ সদস্য ছিলেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা) এর অন্যতম কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এজন্য দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। 

বারবার দল পরিবর্তন করায় ডা.মোহাম্মদ আককাছ আলী সরকারের প্রতি ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে এই আসনে। অপরদিকে এই আসনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান সুবিধাজনক হওয়ায় জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী নৌকার মাঝি। 

নৌকার প্রার্থী সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। আমি আশা করি উলিপুরের সর্বস্তরের জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবে। উন্নয়নের স্বার্থে নৌকার বিকল্প নাই বলেও তিনি জানান।

ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা.মোহাম্মদ আককাছ আলী সরকার বলেন, নির্বাচনের মাঠ এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু আছে। আমি কোনো প্রতিবন্ধকতা মনে করছি না। জনগণ নির্দ্বিধায় ট্রাক প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবে বলে আশা করছি।

উলিপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ভোটার চন্দন রায় বলেন, নৌকা ছাড়া অন্যান্য প্রতীকের মাঠ শক্তিশালী নয়। আমি নৌকায় ভোট দেব। আশা করি নৌকা জিতে যাবে।

নৌকা প্রতীকের কর্মী চন্দন সরকার বলেন, আমরা প্রতীক বরাদ্দ থেকে শুরু করে প্রচারণার শেষ সময় পর্যন্ত নৌকার পক্ষে মাঠে ছিলাম। জনগণের নৌকার পক্ষে রয়েছে। নৌকা ছাড়া অন্য কোন প্রার্থী এই আসনে জিততে পারবে না।

কুড়িগ্রাম জেলার ৪ টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল আরীফ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার তার সবগুলো নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। কোথাও কোন অনিয়ম হলে ছাড় দেয়া হবে না।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে ১৯৭৩ ও ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা বিজয়ী হন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে বিএনপি এবং ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১,২০০৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি(জাপা) দলীয় প্রার্থীরা বিজয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এম এ মতিন নির্বাচিত হয়েছিলেন।

কুড়িগ্রাম ৩ আসনে এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৬৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৯১ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৪ জন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *