সারাদেশ

নাশকতার অভিযোগে বিএনপি নেতা নবী উল্লাহসহ গ্রেফতার ৫

ডেস্ক রিপোর্ট: মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সরকারি অনুদানের ১ হাজার টাকার চেক বিতরণ করায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে উঠে চট্টগ্রাম-১০ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এবার আদালতে মামলা দায়েরের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামে জেলা ও খুলশী থানা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবরে পাঠিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের উপসচিব (আইন) মো. আব্দুছ সালাম।

চিঠিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, ২৮৭ চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু তাঁর নির্বাচনী এলাকার সব মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করেন। ফলে উক্ত প্রার্থী ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮’ এর বিধি ৩ এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি মাননীয় নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

এমতাবস্থায়, অভিযুক্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে অ-আমলযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে মাননীয় নির্বাচন কমিশন সদয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

এমতাবস্থায়, উপর্যুক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটরের সহযোগিতায় অনতিবিলম্বে অভিযোগকারী হিসেবে বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চট্টগ্রামে নিয়মিত অভিযোগ দায়ের করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, ‘ইসি’র নির্দেশনা মাত্র পেয়েছি। খুলশী থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। আমরা পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কবে নাগাদ মামলা করা হবে সেটা নির্ধারণ করবো। মামলা দায়েরের প্রাথমিক প্রস্তুতি আমাদের আছে।’

২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মহানগরের আসনসমূহের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে চিঠি দিয়ে বাচ্চুর বিরুদ্ধে টাকা বিলির অভিযোগ আনেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মনজুর আলম। এতে বলা হয়, ২২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের আগে বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু চট্টগ্রাম-১০ আসনের সকল মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের ব্যক্তিগতভাবে এক হাজার টাকা করে দেন। এছাড়া ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের মাদানি মসজিদে এক লাখ টাকার একটি চেক দেন যা ওই মসজিদের ইমাম জুমার নামাজের আগে খুতবায় মুসল্লিদের অবহিত করেন। একইভাবে ২৪ ডিসেম্বর লালখান বাজারে তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সকল মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ৬০ হাজার টাকা করে ‘সরকারি’ অনুদানের চেক বিতরণ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে সম্প্রতি মহিউদ্দিন বাচ্চু এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিন মাসে সরকারি যে অনুদানগুলো আছে সেগুলো বিতরণের দায়িত্ব আমার মধ্যেই পড়ে। আইনগতভাবে আমি যে সময়ের মধ্যে বিতরণ করার অধিকার রাখি, সে সময়ের মধ্যেই আমি সেগুলো করেছি। বিতরণ করেছি বলতে আমি ঘোষণা দিয়েছি। বিতরণ হবে জেলা প্রশাসকের অফিসের মাধ্যমে। যাকে বা যে প্রতিষ্ঠানে দিলাম সে প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি স্বয়ং গিয়ে স্বাক্ষরে করে সে চেক গ্রহণ করতে হবে। আমার কাউকে হাতে চেক তুলে দেওয়ার সুযোগ নেই।’

চট্টগ্রাম-১০ নগরীর এই আসনে মোট প্রার্থী ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে প্রচার-প্রচারণায় সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছেন নৌকার মহিউদ্দিন বাচ্চু, ফুলকপি প্রতীকে এম মনজুর আলম এবং কেটলি প্রতীকে ফরিদ মাহমুদ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *