খেলার খবর

সাকিবদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় দুঃস্বপ্নের হার

ডেস্ক রিপোর্ট: সর্বশেষ তিন মাস ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে চলছে একটিই ঘটনা। ব্যাটিং ব্যর্থতা, বিশেষ করে টপ-অর্ডার। ঘরের মাটিতে আফগান ও কিউইদের বিপক্ষে হার, এশিয়া কাপের শেষ চার থেকে বিদায়। সেই ধারা চলছে বিশ্বকাপেও। ডাচদের বিপক্ষে ৮৭ রানে হেরে আসরে টানা পাঁচটি হারের মুখ দেখল বাংলাদেশ। তাতেই সেমি-ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের।

এই ম্যাচের শুরুতে যেটা হয়তো কেউ ভাবেননি, আশাও করেননি। টসে হেরে বোলাররা দেখিয়েছেন তাদের নৈপুণ্য। ডাচদের ২২৯ রানেই আটকে দেয় তাসকিন-শরিফুলরা। তবে ব্যাট হাতে হতাশাজনক পারফরম্যান্স ব্যাটারদের। সবকটি উইকট হারিয়ে কেবল ১৪২ রানে থামে তারা।

শুরু থেকে বেশ দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। তবে সেই একই জুজুতে আরও একবার ভুগল সাকিবরা। টপ-অর্ডার ব্যর্থতা। দলীয় ১৯ রানের মাথায় রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন লিটন। পরের ওভারেই অনেকটা একইভাবে ফেরেন তানজিদও। শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন। রানও পাচ্ছিলেন। তবে ফিরলেন দ্রুতই।

শুরুর সেই চাপ সামলে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে এগোতে থাকেন শান্ত। তবে চলমান অফ-ফর্মের জানান দিয়ে আরও একবার ফিরলেন ইনিংস লম্বা না করেই। কেবল ৯ রান করে ভন মিকারেনের বলে ফেরন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে অপর প্রান্তে দৃঢ়তার সঙ্গে এগোতে থাকেন মিরাজ। তবে তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গও দিতে পারলেন না সাকিবও (৫)। দলীয় ৬৩ রানের উইকেটের পিছনে ধরা পড়ে ফেরেন তিনি। যেন আগের ম্যাচের আউটেরই কার্বন-কপি!

মিরাজ কিছুটা আশা জাগালেও মিকারেনের পরের ওভারে ঠিক একইভাবে ফেরেন তিনি। ৪০ বলে ৩৫ রান করেন এই ব্যাটার। চার বল পর একইপথে হাঁটলেন মুশফিকুর রহিমও।

শেখ মাহেদীকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জুটিতে কিছুটা আশার আলো দেখেন সাকিবরা। তবে দলীয় ১০৭ রানের অহেতুক এক রান আউটে কাটা পড়ে ফেরেন মাহেদী (১৭)। পরক্ষণেই ফিরলন রিয়াদও (২০)। সেখানেই যেন শেষ। বাজলো হারের ঘণ্টা। শেষ সেমির স্বপ্ন। বাকি ব্যাটাররা কেবলই কমালেন ব্যবধান। শেষ পর্যন্ত রানে থামে বাংলাদেশ। মিকারেন নেন চার উইকেট, ডি লিড নেন দুটি।

এর আগে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুর ওভার বেশ দেখেশুনেই খেলেন দুই ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড ও বিক্রমজিৎ সিং। তবে বিপত্তি আসে পরের ওভারেই। টুর্নামেন্টে অফ-ফর্মে থাকায় নিজেদের সবশেষ দুই ম্যাচের একাদশে ছিলেন না তাসকিন আহমেদ। দুই ম্যাচ ফিরে পেলেন একাদশের জায়গা। এবং নিজের প্রথম ওভারেই দেখালেন চমক। ফেরান বাঁহাতি ব্যাটার বিক্রমজিৎকে (০)। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার ও’ডাউডকে খালি হাতে ফেরান শরিফুল ইসলাম।

ওয়েসলি বারেসিকে নিয়ে শুরুর সেই ধাক্কা সামলে রানের চাকা সচল রেখে এগোচ্ছেন কলিন অ্যাকারম্যান। ৫৯ বলে করেন ৫০ রানের জুটি। তবে এরপর বেশিক্ষণ তাদের থিতু হতে দিলেন না বোলাররা। ৬ বলের মধ্যেই এই দুই ব্যাটারকে দেখান সাজঘরের পথ। ১৩ ওভার ৪ বলে বারেসিকে ফেরানোর উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। পরের ওভারেই দেখা মেলে ঠিক একই চিত্র, তবে ১৮০ ডিগ্রী উলটোভাবে। সাকিবের বলে এবার ক্যাচ নেন মুস্তাফিজ।

বাস ডি লিডকে এবারের চাপ সামলে এগোতে থাকেন স্কট এডওয়ার্ডস। দলের কঠিন সময়ে খেললেন আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। তবে তিনি ফিরতে পারতেন খালি হাতেই। শুরুর তিন বলেই দুবার ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তবে সেটিকে তালুবন্দি করতে পারেননি ফিল্ডাররা। তবে বেশিক্ষণ টিকেননি ডি লিড (১৭)। দলীয় ১০৭ রানের মাথায় ফেরেন তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে।

তবে সাকিবদের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ষষ্ঠ জুটি। সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখ্টকে নিয়ে দারুণ ছন্দে এগোতে থাকেন এডওয়ার্ডস। ১৭ ওভার পর সেই কাঙ্ক্ষিত উইকেট এনে দেন মুস্তাফিজ। ৮৯ বলে ব্যক্তিগত ৬৮ রানে এডওয়ার্ডস ফিরলে ভাঙে তাদের ৭৭ রানের জুটি। পরের ওভারেই এঙ্গেলব্রেখ্টকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ফেরান শেখ মাহেদী। শেষে লোগান ভন বিক ১৬ বলে খেলেন ২৫ রানের এক ক্যামিও ইনিংস। শরিফুল, তাসকিন, মাহেদী ও মুস্তাফিজ সকলে নেন দুটি করে উইকেট।

 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *