সারাদেশ

হরতাল প্রতিরোধের ডাক আওয়ামী লীগের

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীতে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশ থেকে বিএনপি’র ডাকা হরতাল প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি হরতালের প্রতিবাদে রবিবার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শনিবার (২৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সমাবেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ঘোষণা দেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে।

এর আগে সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে রবিবার (২৯শে অক্টোবর) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বিএনপি।

বিএনপি’র হরতাল প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হরতালে বিএনপির পক্ষে কেউ থাকবে না। এদের নৈরাজ্যের হরতাল কেউ মানবে না। এ অস্ত্র ভোতা হয়ে গেছে। ভোতা অস্ত্রে কাজ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘পশ্চিমারা নাকি উৎসাহ দিচ্ছে। আগামীকাল (রবিবার) থেকে আর কাউকে পাবেন না। দুর্বলের পক্ষে কেউ থাকে না। দুপুর পর্যন্ত দেখি মরণ কামড় দেয়। পরে দেখি এদিক-ওদিক তাকায়। আর পালায়। অলিগলিতেও পালাতে দেবো না। ওদের আর ক্ষমা নেই। আর ছাড় দেবো না।’

বক্তব্যের শুরুতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে। খেলা হবে? প্রস্তুত? বিএনপির মহাযাত্রা এখন মরণযাত্রা। খেলা হবে, আমরা সেমি ফাইনালে গেছি। এরপর ফাইনাল নির্বাচনে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা শান্তি চাই। নির্বাচনে ও নির্বাচনের পরেও শান্তি চাই।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে খেলার মতো খেলতে হবে। এদেরকে শিক্ষা দিয়ে দিতে হবে। এদের স্বভাব আয়নার মতো পরিষ্কার। এদেরকে আর ক্ষমা করা যায় না। এদের বাড়াবাড়ির জবাব আমরা দেবো।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল আমাদের নেত্রী উদ্বোধন করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র টানেল নদীর তলদেশে। এই টানেলের উদ্বোধন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’

তিনি বলেন, ‘জবাব দিতে হবে। আজকে একজন সজ্জন মানুষ, প্রধান বিচারপতি। তার বাড়িতে কারা হামলা করেছে? এদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। পুলিশের ওপর হামলা করেছে, একজন পুলিশ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছে। হামলাকারীদের ছাড় দেয়া হবে না।’

বিএনপি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘বিএনপি কতো নোংরা দল। খুনি দল, সন্ত্রাসী দল, পুরোনো চেহারা আজকে জাতির সামনে তারা তুলে ধরেছে।’

বিএনপির হামলার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে দ্রুত ঢাকা ফেরার প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, ‘নেত্রী দুপুরের খাবার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ঢাকার খবর পেয়েই তিনি হেলিকপ্টারে উঠেছেন। দুপুরের খাবার গ্রহণ করেননি। কারণ তার টেনশন আমাদের চেয়ে বেশি। কিন্তু তার কথাবার্তার সুর ছিল অন্য রকম। তিনি বললেন দেখবো। দেখবো ওরা কী করে? এসব বাড়াবাড়ি, নোংরামি, আজকের খুনোখুনি, অস্ত্রবাজি-আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলার মাটিতে অবশ্যই শাস্তি হবে। এদের অপরাধের বিচার হবে।’

এদিকে, সমাবেশে বিএনপি মহাসমাবেশের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন করেছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বলেন, আমরা শান্তি সমাবেশ করছি। নির্বাচন বানচাল করতে তারা এসব করছে। তাদের মোকাবিলা করা হবে। রবিবার পাড়া-মহল্লায় দুর্গ গড়ে তুলে হরতাল প্রতিহত করা হবে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ হাসপাতালে আগুন দিয়েছে। আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীও আহত হয়েছে। নির্বাচন বানচাল করতে তারা এসব করছে। তাদের মোকাবিলা করা হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকবো। সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আজকের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি এর আগে আমরা পালন করি নাই। আজকে তারা ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন করেছে। আমরা শান্তি সমাবেশ করছি।’

রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করা হবে। সেদিন মতিঝিলের আরামবাগে সমাবেশ করা হবে। সেই সমাবেশও সফল করার আহ্বান জানাই।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত আজ আমাদের আঘাত করেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা রাজপথে নেমেছে। আমরা রোববার পাড়া-মহল্লায় দুর্গ গড়ে তুলবো। হরতাল প্রতিহত করা হবে।’

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *