সারাদেশ

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানালেন শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্ট: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানালেন শেখ হাসিনা

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানালেন শেখ হাসিনা

জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল আটটায় রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এরপর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে মহান নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরও একটি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।

এরপর যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতি পুষ্পার্ঘ্য শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের লাহোর থেকে প্রায় ৮০ মাইল দূরে লায়ালপুর শহরের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তি লাভ করেন শেখ মুজিব। পরে পাকিস্তান থেকে লন্ডনে যান এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফেরেন তিনি।

এর আগে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এর অব্যবহিত আগে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র টেলিগ্রাম সহযোগে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন তিনি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে অপারেশন সার্চলাইট শুরু হয়। অপারেশনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী ও মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা। এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেলুচি নিধনকারী হিসেবে টিক্কা খানের কুখ্যাতি বহু আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল।

অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনায় ঢাকা শহর ও আশেপাশের এলাকার দায়িত্বে ছিলেন রাও ফরমান আলী। সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে গণহত্যার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর আবরার।

এর আগে ১৯৭১ সালের ১৬-২৪ মার্চ মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক হয়। প্রকৃতপক্ষে এই বৈঠক ছিল কালক্ষেপণ। মূলত বৈঠকের অন্তরালে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গণহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ২৫ মার্চ সেনাবাহিনীর অস্বাভাবিক গতিবিধি এদেশের মানুষকে বিচলিত করে তোলে।

শীতের প্রকৃতিতে গোলাপের মোহনীয় সৌন্দর্য

ছবি: বার্তা ২৪.কম

কুয়াশা ভেজা সকালে রাস্তার পাশে, বাড়ির সামনে বাগানে শোভা পাচ্ছে নানান রঙের ফুল। এর মধ্যে ফুলের রাণী গোলাপ বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে তার মোহনীয় সৌন্দর্যের মাধ্যমে। হিমেল হাওয়াতে দুলছে লাল, সাদা, গোলাপি রঙের ফুল। মুহূর্তে মন এবং চোখ শীতল করে হারিয়ে নিয়ে যায় ভাবনার জগতে। পরিবেশ ও প্রকৃতিতে নিজের সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিয়েছে গোলাপ ফুল।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা সহ আশপাশের সবগুলো উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাহারী ফুলে এখন সয়লাব। রাস্তায় বসছে ভাসমান ফুলের হাট। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিশেষ করে বিয়ের অনুষ্ঠানে গোলাপ ফুল লাগবেই। ফুল যেমন সৌন্দর্য তেমনি রয়েছে তার নানান উপকারিতা।

খোঁজ নিয়ে ও ফুল বিশেষজ্ঞদের থেকে জানা যায়, গোলাপের পাপড়িতে থাকে প্রায় ৯৫% পানি। ফলে এতে ক্যালোরির পরিমাণ থাকে খুবই কম। সেইসঙ্গে এই ফুলের পাপড়িতে থাকে ভিটামিন সি। বদহজমের সমস্যা হলে তা দূর করার জন্য গোলাপের পাপড়ি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে চীনে। পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগছেন যেসব নারী, তাদের ক্ষেত্রেও গোলাপের পাপড়ি উপকারী।

ত্বক ভালো রাখতে

রূপচর্চার কাজে গোলাপের ব্যবহার বেশ পুরোনো। মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধান হয়। গোলাপের তৈরি ফেসপ্যাক ত্বকের পুষ্টি যোগাতে কাজ করে। ত্বক উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ত্বকের দাগছোপও দূর করে এটি। প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বক আর্দ্র থাকবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খান অনেকে। কী করলে উপকার মিলবে তা বুঝে উঠতে পারেন না। আপনিও এমন সমস্যায় ভুগলে আস্থা রাখতে পারেন গোলাপ ফুলে। প্রতিদিন একটি তাজা গোলাপ ছিঁড়ে এনে খেয়ে নিন। এতেই কাজ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। অন্যদিকে রান্নায় শাহী স্বাদ যোগ করতে চাইলে রোজ ওয়াটার মেশাতে পারেন।

স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতে

গোলাপের সৌরভ মন ভালো করবেই। আয়ুর্বেদদের মতে এই সুগন্ধ কাজ করে অ্যারোমা থেরাপি হিসেবে। গোলাপ ফুল খেলে তা আপনাকে ভেতর থেকে সতেজ করে তুলবে। আবার আপনি যদি স্ট্রেস বা মানসিক চাপ অনুভব করেন তবে গোলাপের গন্ধ আপনাকে অনেকটাই হালকা করবে। অন্যকে গোলাপ উপহার দেওয়ার পাশাপাশি নিজের ঘরেও রাখুন। এতে সুফল পাবেন।

পেট ঠাণ্ডা রাখতে

আমাদের শরীরে গরমের সময়ে তাপ উৎপন্ন হয়। শরীর থেকে সেই তাপ দূর করতে কাজ করে গোলাপের পাপড়ি ও চিনি দিয়ে তৈরি গুলকন্দ। আলস্য, ক্লান্তি, পেট ব্যথা, মুখে ঘা, পেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা, নাক থেকে রক্তক্ষরণ, চোখ ফোলা, রোদে পোড়া এসব সমস্যা থেকেও সহজে মুক্তি দিতে সাহায্য করে এটি। প্রতিদিন দুধের সঙ্গে গুলকন্দ গুলিয়ে খেলে মিলবে উপকার।

;

রঙিন মাছ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের তাজুল

ছবি: বার্তা ২৪

ব্যস্ত এ জীবন ব্যবস্থায় এক পলকের জন্য চোখ আটকে যায় বাহারি রঙবেরঙের অ্যাকুরিয়ামের ওপর। ক্রমশ এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। ঘরের মধ্যে কাচের শিট দিয়ে ঘেরা এক কৃত্রিম জলাধার শোভাবর্ধক হয়ে মানুষের মন কাড়ে। বাড়তি আয় করার চিন্তা থেকে বাড়ির আঙিনায় এমন নানা রঙের রঙিন মাছ চাষে সফল হয়েছেন তাজুল ইসলাম।

ঠাকুরগাঁওয়ে দিন দিন বাড়ছে বাণিজ্যিক ভাবে রঙিন মাছের চাষ। বাড়ির আঙিনা কিংবা ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির বাহারি রঙের মাছ চাষ করে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করছেন উদ্যোক্তারা। চাকুরির পাশাপাশি বাড়তি আয় করার চিন্তা থেকে রঙিন মাছ চাষে পাচ্ছেন ব্যাপক সফলতা। এমন সফলতায় বিদেশী জাতের এ মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন জেলার অনেকে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর গ্রামের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম রানা। পেশায় একজন মাদ্রাসার শিক্ষক হলেও স্বপ্ন ছিল উদ্যোক্তা হবার। ২০১৮ সালে টেলিভিশনে রঙিন মাছ চাষের প্রোগ্রাম দেখে আগ্রহ জন্মায় তার। পরে অবসর সময়কে কাজে লাগানো ও বাড়তি আয়ের আশায় বাড়ির আঙিনার পাশে শুরু করেন চাষ। বাজারে চাহিদা থাকায় বছর ঘুরতে না ঘুরতে সফলতার মুখ দেখেন তিনি। শুরুর দিকে পরিবারের সদস্যরা দ্বিমত হলেও এখন তারাই সহযোগিতা করছেন।

তার খামারে গাপ্পি, গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপটিসহ ১৫ প্রজাতির রঙিন মাছ আছে। মাসে ৫০০ টাকার খাবার খরচ হয় তার। খামার থেকে পাইকারি দরে মাছ বিক্রির পাশাপাশি বিক্রি করা হয় খুচরা দরে।

জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় বিদেশি জাতের রঙিন মাছ চাষ করেন ২০ জন উদ্যোক্তা। ইতিমধ্যে এ মাছ চাষে সফলও হয়েছেন অনেকে। আর ক্রমশ বাড়ছে এ মাছ চাষের প্রবণতা।

রঙিন মাছের খামার দেখতে আসা সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার অনেক দিনের শখ এসব মাছ চাষ করা। এসে দেখলাম খুব ভালো লাগলো। ভাইয়ের কাছে পরামর্শ নিয়ে আমি শুরু করব।’ 

সফল রঙিন মাছ চাষী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘টেলিভিশনে রঙিন মাছ চাষের অনুষ্ঠান দেখে আমি মুগ্ধ হই। পরে পরিবারের সাথে কথা বললে কেউ সহযোগিতা করেননি। নিজের প্রচেষ্টা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সফলতার মুখ দেখেছি। তবে মৎস্য অফিস থেকে কোন ধরনের সহযোগীতা পাই নাই। যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও মৎস্য অফিসের সহযোগিতা পাই তাহলে আরও বড় পরিসরে চাষ বাড়াব।’ 

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদুজ্জামান বলেন, ‘জেলায় রঙিন মাছ চাষির সংখ্যা বেড়ে চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত তাদের কোন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। চাষিদের সাথে থেকে খুব দ্রুত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।’ 

;

কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে কৃষকের মৃত্যু

ফাইল ছবি

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ এলাকায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত কৃষক ইসলামপুর জুমনগর এালাকর বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার (৪৫)।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) ঈদগাঁও ইসলামপুর এলাকায় সকাল ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “নিহত কৃষক ইসলামপুর জুমনগর নগর থেকে কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে।

;

গোপীবাগে ট্রেনে আগুন: মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি!

গোপীবাগে ট্রেনে আগুন: মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি!

ভোট ঠেকাতে বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয় দুবৃর্ত্তরা। সেই দুর্ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। বেঁচে যান অনেকেই। বেঁচে যাওয়ার মধ্যে একজন যাত্রী পীযুষ কান্তি সরকার মনোজ। তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির বহরপুর ইউনিয়নের পাটুরিয়া গ্রামের মতিলাল সরকারের ছেলে। পেশায় একজন শিক্ষক ও চিত্রশিল্পী। কাজ করেন প্রকৃতি, পাখি ও ফুল নিয়ে।

সেদিনের সেই ভয়াবহতা ও নৃশংতা দেখেছেন নিজ চোখে। ট্রেনের প্রতিটি যাত্রীর বাঁচার আকুতি যে কতটা মর্মর্স্পশী তার বর্ণনা দিয়েছেন মনোজ। মঙ্গলবার কথা হয় তাঁর সাথে। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সেদিনের পুরো ঘটনা তুলে ধরেন তিনি।

মনোজ বার্তা২৪.কমকে জানান, শুক্রবার তার ছোট ভাইয়ের শ্বাশুড়ির শ্রাদ্ধর অনুষ্ঠান শেষে তিনি ঢাকা ফেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট না পেয়ে রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে দাঁড়ানো টিকিট সংগ্রহ করেন। সন্ধ্যা ৬ টা ১৮ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজবাড়ী রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় রাজধানীর উদ্দেশ্যে। এরপর দ্রুতগতিতে চলতে থাকে ট্রেনটি। এক সময় পার হয় স্বপ্নের পদ্মাসেতু। দেখতে দেখতে সায়েদাবাদে ঢুকে পড়ে ট্রেন। সবার চোখে মুখে আনন্দের হাসি। পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা ট্রেনে আসতে পারবেন এটা ছিল যাত্রীদের কাছে স্বপ্ন। হঠাৎ করে সবার মুখের হাসি থেমে যায়। এক নিমিষেই কালো ধোয়ায় ভরে যায় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি।

তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন ডাকাত আক্রমণ করেছে। পোড়া গন্ধ আর কালো ধোঁয়ায় তিনি টের পান ট্রেনে আগুন ধরেছে। সেই সময় তার মাথায় কোন কাজ করছিল না। দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। বেঁচে থাকার আকুতি সবার। চোখের সামনে পুড়ছে এক নারী যাত্রী। তাঁর পুরো শরীরে আগুন। দিশে না পেয়ে ট্রেনের যাত্রীদের মালামাল রাখার জায়গা থেকে একটা লম্বা পাথর জাতীয় বস্তু দিয়ে সে ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেন। জীবন বাঁচাতে চলন্ত সেই ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন মনোজ। এরপর তাঁর আর কিছুই মনে নেই। যখন তাঁর জ্ঞান ফেরে তখন তিনি দেখতে পান স্থানীয়রা তাঁকে ঘিরে রেখেছেন। পরে সেখান থেকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের সহযোগিতায় ফেরেন ঢাকার বাসায়।

মনোজ আরও জানান, এ ঘটনার পর একদিন এক রাত তিনি কারও সাথে কথা বলতে পারেননি। এখনও তিনি আতংকের মাঝে রয়েছেন। মৃত্যু যে কতটা ভয়ানক তা তিনি একেবারে কাছ থেকে চোখে দেখেছেন। এখনও ভাবলে গাঁ শিউরে ওঠে তাঁর। বাঁচার কি আকুতি ছিল সবার! কি বিভৎস! চোখের সামনে পুড়ছে স্ত্রী-সন্তানের দেহ। কিছুই করতে পারছে না  অসহায় স্বামী অসহায় একজন বাবা।

শারীরীক ও মানসিক ভাবে এখনও অসুস্থ মনোজ। চোখের সামনে শুধু ভাসছে- অসহায় মানুষের বেঁচে থাকার আকুতি। এ রকম মৃত্যু পৃথিবীতে যেন আর একজনেরও না হয়। শত্রুর মৃত্যুও যেন স্বাভাবিক হয়।

ট্রেনে অগ্নিসংযোগকারিদের উদ্দেশ্যে মনোজ বলেন, যারা পুড়ে মরল তারা কারা? তারা তো আপনাদেরই কারও ভাই কারও মা কিংবা বোন। কি লাভ হয়েছে আপনাদের? কাদের স্বার্থে এমন জঘন্য কাজ করলেন। একবার ভেবে দেখবেন।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *