জলবায়ু ফান্ডের অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট: ‘বাণিজ্য মন্ত্রী যেই হোক তাতে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নাই। আমরা যেন সবাই তিন বেলা ভাত খেতে পারে। মানুষ আয় অনুযায়ী যেন সংসার খরচ চালাতে পারে। জিনিসপত্রের দাম যেন সাধ্যের মধ্যে থাকে।’
কথাগুলো বলছিলেন মিরপুরের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। দীর্ঘদিন ধরে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজার দরের সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। সরকারের কাছে সাধারণ জনগণের চাওয়া- আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাজার দর নির্ধারণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির ভবন বঙ্গভবনে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। এর মাধ্যমে পঞ্চম বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথের কয়েক ঘণ্টা আগে শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ এবং তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে রাষ্ট্রপতির সম্মতিসূচক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও পূর্ণমন্ত্রী ২৫ জন আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ১১ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। সর্বমোট ৩৬ সদস্যর মন্ত্রী পরিষদে রয়েছে দুজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী।
বিদায়ী সরকারের আমলে যে কয়েকটি মন্ত্রণালয় নিয়ে সাধারণ মানুষের হতাশা আর ক্ষোভ ছিলো তার মধ্যে অন্যতম বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারা, গণমাধ্যমে বেফাঁস মন্তব্য করাসহ বিভিন্ন সময় সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
তাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টিপু মুনশিকে সরিয়ে প্রথম বারের মতো প্রতিমন্ত্রী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন নবনিযুক্ত অপেক্ষাকৃত নবীন টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু।
সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে গণমাধ্যমের সাথে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবো। যে দায়িত্ব পেয়েছি তা সততার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করবো।
জানা গেছে, আহসানুল ইসলাম টিটু টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৩-১৪ মেয়াদে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন যাবত সন্ধানী লাইফ ইন্সুইরেন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান আহসানুল ইসলাম টিটু । তার বাবা হাজি মকবুল হোসেন ঢাকা-৯ আসন থেকে ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তবে নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে মিরপুরের ব্যবসায়ী কামাল বার্তা২৪.কম’কে জানান, বাণিজ্য মন্ত্রী যেই হোক তাতে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নাই। আমরা চাই তিন বেলা ভাত যেনো সবাই খেতে পারে। মানুষের আয় অনুযায়ী যেন সংসার খরচ চালাতে পারে। বর্তমানে বাজারের যে অবস্থা তার জন্য সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশিই দায়ী। তাই নতুন প্রতিমন্ত্রীর কাছে চাওয়া তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখবেন। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করবে।
বাংলামোটরের বাসিন্দা চা দোকানী হাফিজের কাছে নতুন প্রতিমন্ত্রীর বিষয়ে জানতে চাইলে হাফিজ জানান, চায়ের দোকান করে আগে পাঁচ সদস্যের সংসার অনায়াসে চালাইছি। দিনে ৬০০-৭০০ টাকার বেশি আয় হতো তাতেই সংসার আলহামদুলিল্লাহ চলে যেতো। কিন্তু সবকিছুর দাম বাড়ায় এখন মানুষ আগের মতো বাড়তি খরচ করে না। তাই বিক্রি কিছুটা কমেছে। আর বিক্রি কমলে তো আয়ও কমে যায়। এদিকে বাজারে গেলে চোখে পানি আসে। কি রাইখা কি কিনুম। তাই নতুন প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী যেই হোক জিনিসপত্রে দাম যেনো না বাড়ে। আর কিছু চাইনা এতেই আমরা খুশি।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।