সারাদেশ

বন্ধুর থেকে সাইকেল শেখা সাকিব বের হয়েছেন ৬৪ জেলা ভ্রমণে

ডেস্ক রিপোর্ট: বন্ধুর থেকে সাইকেল শেখা সাকিব বের হয়েছেন ৬৪ জেলা ভ্রমণে

ছবি: বার্তা২৪.কম

সাইদুল ইসলাম সাকিব (২১)। চট্টগ্রামের পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থী অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন সাইকেল চালানো শিখেছে বন্ধুদের কাছ থেকে। এরপর সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণের নেশা জাগে তার। একা একা বেরিয়ে পড়েন ৬৪ জেলা ভ্রমণে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের জিরো পয়েন্ট থেকে সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণের যাত্রা শুরু করেন তিনি। “জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ হোক, সুরক্ষিত থাকুক ধরণীর লোক’’-এ প্রতিপাদ্যে ভ্রমণে বের হন তিনি। এছাড়া ৬৪ জেলায় গিয়ে ৬৪টি গাছ লাগাবেন বলে জানান সাকিব। কিন্তু এটি তার সাইকেলে দ্বিতীয় ৬৪ জেলা ভ্রমণ। তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার কলাউজান এলাকার বাসিন্দা।

সাইদুল ইসলাম সাকিব বার্তা২৪.কম-কে বলেন, “অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন বন্ধুদের সাইকেল চালানো দেখে উদ্বুদ্ধ হই সাইকেলের প্রতি। এরপর বন্ধুদের কাছ থেকে সাইকেল চালানো শিখি। কিন্তু দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময় পর্যন্ত রাস্তায় সাইকেল চালাতে ভয় পেতাম। এরপর ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি একা একা বেরিয়ে পড়ি সাহস করে। টেকনাফ থেকে শুরু করে ৩৯ দিনে প্রথমবারের মতো সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণ শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৌঁছেছি”।

সাকিব জানান, “এবারে জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ হোক, সুরক্ষিত থাকুক ধরণীর লোক এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বের হয়েছি। এছাড়া ৬৪ জেলায় ৬৪ টি গাছ লাগাবো। যেহেতু আমরা সবাই পরিবেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছি সেহেতু জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করে পৃথিবীর মানুষকে সুরক্ষিত রাখার বার্তা জানাবো”।

সাইদুর রহমান সাকিব প্রথম দিন টেকনাফ জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে উখিয়া হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ৮১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন। দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজার-রামু-আলীকদম হয়ে ১১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বান্দরবান পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার। তৃতীয় দিন বান্দরবান থেকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া-পটিয়া-চট্টগ্রাম হয়ে রওয়ানা দিবেন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি-খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করে চট্টগ্রামে এসে শেষ করার ইচ্ছে তার।

অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি টেক ট্রিপের আত্মপ্রকাশ

অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি টেক ট্রিপের আত্মপ্রকাশ

টেক ট্রিপ লিমিটেড, ইউএস বাংলা গ্রুপের একটি গর্বিত উদ্যোগ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর অন্যতম গন্তব্য মালদ্বীপে একটি স্মারক উদ্ভোধনী ইভেন্টের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছে।

টেক ট্রিপের লক্ষ্য বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সমৃদ্ধিশীল ভ্রমণ বাণিজ্যের চাহিদা মেটানো, যা বছরে প্রায় ১০% হারে প্রসারিত হচ্ছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সহযোগিতায়, প্রতিষ্ঠানটি তার বিটুবি এজেন্টদের ভ্রমণ শিল্পের সময়োপযোগী শীর্ষস্থানীয় কমিশন কাঠামো, গ্রুপ টিকিটিং সুবিধা, হলিডে প্যাকেজ সহায়তা এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্স থেকে বিশেষ ভাড়ার আকারে অতুলনীয় সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

বাংলাদেশ ও নেপালের ট্রাভেলপোর্ট জিডিএস-এর সাবেক আঞ্চলিক প্রধান দারাজ মাহমুদের নেতৃত্বে, টেক ট্রিপ টিমে ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত যেমন মাহদী কবির, বাংলাদেশে ইন্ডিগোর সাবেক হেড অফ সেলস, নুরুদ্দিন শরীফ যিনি পূর্বে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সহ ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন। .

উদ্বোধনী ইভেন্ট উপলক্ষে টেক ট্রিপের ভবিষ্যত ভাবনা নিয়ে জনাব দারাজ মাহমুদ মন্তব্য করেন, “এখন পর্যন্ত ভ্রমণ শিল্পের একটি ছোট অংশ অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি দ্বারা ট্যাপ করা হয়েছে, যা সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নতুন নতুন উদ্যোক্তা এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টেক ট্রিপ গঠন করা হয়েছে। যা দিয়ে ভ্রমণ শিল্পের ভবিষ্যতকে আরো বেশী পর্যটক ও জনবান্ধব করে তুলতে পারবে। ফলে এই শিল্পের প্রবৃদ্ধি বহুগুন বৃদ্ধি পাবে তারই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। টেক ট্রিপ লিমিটেড এই শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে পর্যটন ও কর্মসংস্থানের বাজারকে সুরক্ষিত করবে টেক ট্রিপ।

কান্ট্রি ম্যানেজার, সেলস ম্যানেজার এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি শিল্প বিশেষজ্ঞরা যোগ দিয়ে, টেক ট্রিপ সম্প্রতি মালদ্বীপের “দ্যা স্ট্যান্ডার্ড, হুরুহভালি” রিসোর্টে অনুষ্ঠিত একটি ইভেন্টের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।

;

পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে চর বিজয়

ছবি: বার্তা ২৪

পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে নীল জলরাশি, হাজারও অতিথি পাখির আগমন ও লাল কাকড়ার ছোটাছুটির জন্য বিখ্যাত চর বিজয়।  

গভীর সাগরে নীল জলরাশির মাঝে জেগে উঠা মনোমুগ্ধকর এই দ্বীপটি, সূর্যোদয় সূর্যাস্তের লীলাভূমি সাগরকন্যাখ্যাত কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নতুন পালক যোগ করেছে। প্রতি বছর শীতের আগমনের সাথে সাথে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয় এই চরে।

তবে বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল ও অবরোধ এর প্রভাবে পর্যটকদের আগমনে কিছুটা ভাটা পরলেও ইতিমধ্যে চরে আসা যাওয়া শুরু করেছে পর্যটকরা।

২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এই চরের সন্ধ্যান পাওয়ায় চর/ দ্বীপটির নামকরণ করা হয় চর বিজয়। স্থানীয়দের কাছে যা হাইরের চর নামেও পরিচিত। চরটি  কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের গঙ্গামতী থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে। দ্বীপটির আয়তন আনুমানিক ৫ হাজার একর। লাল কাঁকড়া আর হাজারও অতিথি পাখির বিচরণে আকাশ আর চর মিলে একাকার হয়ে থাকে এই দ্বীপ। কুয়াকাটার ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম একটি আকর্ষণীয় জায়গায় রূপ নিয়েছে।

বছরের ৬ মাস জেগে থাকে এই চর। মূলত এ চরে জেলেরা অস্থায়ী বসবাস করেন। তিন মাসের জন্য চরে আসা জেলেরা এখানে মাছ শিকার করেন এবং মাছের শুঁটকি প্রস্তুত করেন।

চরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের সেবায় কাজ করছে টুরিস্ট বোট ও স্পিড বোটসহ বেশ কয়েকটি টুরিস্ট গাইড এজেন্সি। মৌসুমের শুরুতে এসব ব্যবসায়ীরা প্রস্তুত থাকলেও কাঙ্খিত পর্যটক না থাকায় হতাশ হয়ে পড়ছেন তারা।

স্পিড বোট চালক রুহুল আমীন জানান, “যে রকম টুরিস্ট এর আসা করেছিলাম সে রকম ট্যুরিস্ট এখন ও আসা শুরু করেনি। ট্রিপ ও কম আমাদের। তাই আমাদের ইনকামও কম।  আর ইনকাম কম থাকায় সংসার সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।“ 

কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাচ্চু খলিফা বার্তা ২৪ ডট কমকে বলেন, “চর বিজয় এ অতিথি পাখির আগমন কয়েকদিন  আগে থেকে শুরু হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমরা আশানরূপ ট্যুরিস্ট পাচ্ছি না।  আশা করছি রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অসংখ্য পর্যটকদের আগমন ঘটবে চর বিজয়ে। আবার চরের সৌন্দর্য উপভোগ করাতে আমরাও টুরিস্টদের চরে নিয়ে যেতে পারবো”।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, “চর বিজয় একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এখানে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে। সেখানে যারা যায় তাদের তাদের সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নাম আমাদের রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করি এবং সংরক্ষণ করি। এছাড়া কুয়াকাটা ঘুরতে আসা পর্যটকদের সার্বক্ষণিক সুবিধা, অসুবিধা ও নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে ”।

;

শীতে ঘুরতে যাবেন ভাবছেন?

শীতকাল মানেই ভ্রমণের মৌসুম

শীতকাল মানেই ভ্রমণের মৌসুম। শীতে প্রকৃতি তার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ফিরে পায়। বছরের শেষ আর ঘোরাঘুরির শুরুর এই শীতে কুয়াশাঘেরা ভোরে নতুন কোনো স্থানে জেগে উঠার অনুভূতি শুধু ভ্রমণ পিপাসুরাই জানে।

দেশের আনাচেকানাচের জনপ্রিয় কিছু টুরিস্ট স্পট হয়ে উঠতে পারে শীতে অবসর কাটানোর জন্য উপর্যুপরি। বন্ধু-বান্ধব, পরিবারসহ দলবলে অনেকেই এই সময়টায় বের হয়ে পড়েন ঘুরতে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এই শীতে ভ্রমণের জন্য দেশের ৫টি জনপ্রিয় স্থান।

সেন্টমার্টিন
সুন্দর মিষ্টি একটি কুয়াশাঘেরা ভোরে ঢেউ খেলানো সাগরের তীর ধরে হাঁটার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা সেন্টমার্টিন। যেখানে নেই কোনো কোলাহল নেই কোনো ব্যস্ততার হাতছানি। ভ্রমণের কথা উঠলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে আমাদের মাথায় আসে সেন্টমার্টিনের কথা।  

সাজেক
শীতের ভ্রমণের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানের মধ্যে একটি খাগড়াছড়ির সাজেক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮’শ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই উপত্যকা যা রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন। চারপাশে সবুজ পাহাড়ের সমারোহ। ঠান্ডা বাতাস, পাহাড়ি মানুষ, হঠাৎ বৃষ্টি, হঠাৎ রোদ। এ যেন প্রকৃতির এক লীলাখেলা। শীতে সাজেক তাই ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত একটি স্থান। 

শ্রীমঙ্গল
শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানীও বলা হয়। কুয়াশাঘন শীতে চায়ের রাজ্যে বসে এক ধোঁয়া ওঠা চা আপনার মন জুড়িয়ে দেবে। চা–পাতার ডগায় শিশির বিন্দুর অপরূপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানে রয়েছে পাহাড় ও নদী। যা ভ্রমণ পিপাসুদের মনকে ভরিয়ে তুলবে নিমিষেই। 

চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গল সুন্দরবন
বাগেরহাট, খুলনা আর সাতক্ষীরা তিনটি জেলার বিস্তৃত পৃথিবীর অন্যতম দুর্লভ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণের জায়গা এটি। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা সবসময় না পাওয়া গেলেও এর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নীরবতা ও জীববৈচিত্র্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। 

কুয়াকাটা
সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ দর্শনীয় স্থান। যারা সমুদ্রের নীরব রূপ উপভোগ করতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য আদর্শ হতে পারে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। 

সাগরকন্যা কুয়াকাটা 

;

ইতিহাস-ঐতিহ্যের শালবন বিহারে একদিন

শালবন বিহারে চবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা

‘বার্ষিক শিক্ষাসফর’ শব্দটার সাথে ছোট থেকেই পরিচিত। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বয়স, পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষার স্তর। তবুও পরিবর্তন হয়নি অতীতে শব্দটার সাথে কাটানো কৌতূহল। ক্লাস প্রতিনিধির কাছে বার্ষিক সফরের কথাটা শুনতেই মনটা নেচে উঠলো এক পরিচিত আনন্দে। তাই দেরি না করেই চাঁদা জমা দিয়ে নিশ্চিত করলাম নিজের আসনটি।

প্রতিক্ষিত দিনটি চলে এলো। পূবের সূর্যিমামার স্বরুপ ধারণের আগেই শেষ হলো প্রস্তুতি। ভোর ছয়টায় চলে এলাম স্পটে। সাথে বন্ধু, বড় ভাই ও বোন মিলে সর্বমোট ২২০ জন। এবং আরও আছেন ডিপার্টমেন্টের বশির আহমেদ স্যার ও সৈয়দ তৌহিদুল ইসলাম স্যার।

পাহাড় ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে এক সারিতে চারটি গাড়ি ছুটে চলছে বিরামহীনভাবে। গন্তব্য তার ইতিহাস ঐতিহ্যে মোড়ানো কুমিল্লার শালবহন বিহার ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)।

বাস চালু হওয়ার সাথে সাথে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বিভিন্ন গান ও বন্ধুদের নাচে সৃষ্টি হলো এক আনন্দ মুখর পরিবেশ। আমাদের মাঝে প্রশিক্ষিত কোন ড্যান্সার না থাকলেও আজ সকলে নেচে গেয়ে উপভোগ করছেন দিনটি। কেউবা হাতের ফোনটি দিয়ে মুহূর্তটুকু স্মরণীয় করে রাখতে তুলে রাখছেন কিছু ছবি। এভাবে নেচে গেয়ে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে যেন খুব দ্রুতই বার্ডের গেটে পৌঁছালাম আমরা। 

বাস  থেকে নেমে বার্ডের মুখে একটা গ্রুপ ফটো তুললাম। এ সময় শোভা পাচ্ছিল সকলের গায়ে একই রঙের টি-শার্ট। যেন মনে হচ্ছে কোন মায়ের জমজ সন্তান!

সবুজ গাছ গাছালি ও নিপুণ স্থাপত্য শৈলির সংমিশ্রণে শান্ত অথচ অসম্ভব সুন্দর বার্ড এলাকাটি। ধুলো-ধুঁয়োর শহর ছেড়ে স্বস্তির বাতাস নিতে আসা যে কারোর জায়গাটি ভালো লাগবে। আমরা কয়েজন বন্ধু মিলে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ফিরে দেখলাম আর ছবি তুললাম। এর মধ্যেই দুপুরের খাবারের সময় হয়ে গেলো তাই দেরি না করে চললাম বার্ডের ক্যাফেটেরিয়াতে। এখানে পূর্ব অর্ডার অনুযায়ী খাবার পরিবেশন করা হলো। খাবারের পর্বটি শেষ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বাসে উঠে বসলাম। গন্তব্য এবার শালবন বিহার!

শালবনে পৌঁছে প্রথমেই ঢুকলাম ময়নামতি জাদুঘর। এর পর গেলাম শালবন বিহারে। দেখতে পেলাম শত শত প্রাচীন স্থাপনা। যেগুলো এতদিন বইয়ের পাতায় কিংবা মোবাইলের স্ক্রিনে দেখেছি তা আজ চোখের  সামনে দেখতে পেয়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো।

শালবন বিহারটি বাংলার প্রাচীন ইতিহাসের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। জানা যায়, প্রায় ১২শ বছর আগে বৌদ্ধরা এটি নির্মাণ করে। সারি সারি কক্ষ ও শক্তিশালী পাচীর গুলো দেখে সে সময়ের স্থাপত্যশৈলী কতটা উন্নত ছিল তা সহজেই অনুমেয়। আর আমরাও ইতিহাসের শিক্ষার্থী হওয়ায় খুটে খুটে সব দেখছিলাম, যেন ফিরে গেছি নয়শত শতাব্দির বৌদ্ধ রাজাদের আমলে।

এভাবে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ মাহবুব ভাইয়ার বাশিঁর সুর কানে আসল তার মানে সবাইকে একত্রিত হতে হবে। এবার পালা ফটোসেশন ও র‍্যাফেল ড্র। আনন্দপূর্ণ ভাবে পর্বটা শেষ হতে না হতেই দেখি সূর্যিমামা জানান দিচ্ছে সে আর বেশিক্ষণ ধরণীতে থাকবে না। তাই আমাদেরও আর বেশিক্ষণ থাকা হলো না। রওনা দিলাম বাসের দিকে। নিজর সিটট খুঁজে ক্লান্ত শরীরটাকে এলিয়ে দিলাম সিটের মধ্যে। চালু হলো বাস! এভাবে ইতিহাস ঐতিহ্যে ঢাকা কুমিল্লা শালবন বিহারকে পেছনে ফেলে  ক্ষণিকের সফর শেষে এগিয়ে চললাম নীড়ের উদ্দেশ্যে।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *