সারাদেশ

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পীতাম্বরবশী গ্রাম পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. এহেতেশাম রেজা ও পুলিশ সুপার (এসপি) এ এইচ এম আবদুর রকিব।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে তারা উপজেলার পীতাম্বরবশী গ্রাম ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

পরিদর্শনকালে গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করে জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা বলেন, আতঙ্ক ও ভয়ের কোনো কারণ নেই। প্রশাসন সবসময় আপনাদের সঙ্গে ছিল ও আছে। আপনারা সবাই মিলেমিশে বসবাস করছেন, বিভেদ ভুলে মিলেমিশেই থাকবেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

গত ৭ জানুয়ারি রাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরপরই মিছিল বের করেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা। এ সময় কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের পীতাম্বরবশী গ্রামের কয়েকটি হিন্দুবাড়িতে হামলা- ভাঙচুর ও কয়েকজনকে মারধর করে করা হয়। এরপর এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া দুটি পরিবারের একটি ফিরলেও, অন্যটির দুই সদস্য বাইরে রয়েছেন। সেখানে প্রায় ৭০ ঘর হিন্দু পরিবার রয়েছে।

স্বতন্ত্র হয়ে ট্রাক প্রতীকে সংসদ সদস্য হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ। তিনি ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০১৮ সালে এ আসনে প্রথমবার নৌকা পেয়ে বিজয়ী হন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ। এবার আওয়ামী লীগ তাঁর হাতেই নৌকা তুলে দিলেও আবদুর রউফের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন। এরপরই বিজয়ী প্রার্থীর অনুসারীরা চড়াও হয় জর্জের সমর্থক পীতাম্বরবশী গ্রামের হিন্দু পরিবারের ওপর। সরেজমিনে সাধারণ মানুষ ও ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়াও স্থানীয় মন্দির কমিটির নেতাদের সঙ্গে কথা হয়। হামলার জন্য তারা ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রুপিং, জমি ও মন্দির কমিটি নিয়ে বিরোধ ছাড়াও হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভাজনকে দায়ী করেছেন।

পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউনিয়ন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল বিশ্বাস বলেন, গ্রামের ৭০ ঘর হিন্দু পরিবারই আওয়ামী লীগের সমর্থক। অতীতে কখনও নির্বাচন নিয়ে এখানে হামলা-মামলা হয়নি। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে আসেনি। তারপরও এবার হামলা মেনে নিতে পারছি না। নেতাদের গ্রুপিং রাজনীতির শিকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। বাড়িতে থেকেও সবাই শঙ্কিত, কখন কী হয়! আমরা শান্তি চাই।’

পীতাম্বরবশী গ্রামে ঢুকতেই একটি মন্দির। ৫৩ শতক জমির এ মন্দির করেছেন গ্রামের বিশ্বাস পরিবারের পূর্বসূরিরা। আধিপত্য বিস্তার ও মন্দির কমিটির বিরোধে গত বছর একটি অংশ বিশ্বাসদের ত্যাগ করে। বর্তমান কমিটির সভাপতি জীবন রঞ্জন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক দেব দয়াল বিশ্বাসের সঙ্গে আগের কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার সরকার ও সাধারণ সম্পাদক পল্লব কুমারের দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি পল্লব কুমারের লোকজন ধান কাটতে গেলে বাধা দেয় প্রতিপক্ষ। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *