সারাদেশ

শেখ হাসিনার সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ার চিন্তা নাকচ করল যুক্তরাষ্ট্র

ডেস্ক রিপোর্ট: কুয়াশা ভেজা সকালে তরতাজা খেজুর রসের স্বাদ অতুলনীয়! রাস্তার পাশে সারি সারি খেজুর গাছ যেন সবুজ বাংলার বুকে একখণ্ড মরুভূমি।

এমনি চিত্র কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা সীমানা লাগোয়া ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার কয়েকটি গ্রামে৷

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি, ২০২৪) ভোরে গিয়ে শত শত গাছ থেকে রস আহরণ করতে দেখা যায়৷ এসব রস দিয়ে তৈরি হয় অনেক রকম বাহারি শীতকালীন পিঠা৷ বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে খেজুরের রস।

শীতকাল এলেই যেন ধুম পড়ে যায় খেজুর রস সংগ্রহের। আধুনিক পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার এক্ষেত্রে সফলতা বয়ে নিয়ে আসবে।

ঠাণ্ডা আবহাওয়া, মেঘলা আকাশ ও কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পর্যাপ্ত রস সংগ্রহের জন্য উপযোগী।

টাংগাব গ্রামের রস সংগ্রহক নুরুল ইসলাম (৫০) বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘রোজ ৪০টি গাছ থেকে আমি রস সংগ্রহ করি৷ ভোর পাঁচটায় আমাকে উঠতে হয়৷ ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি করি৷ আমার মতো আরো অনেকেই এই এলাকায় রস সংগ্রহ করে থাকে৷ শীতকালে এটাই আমার পেশা।’

রস পান করতে আসা পাশ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার টোকনগরের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম ইমন ও ওবাইদুর রহমান নাসিম বলেন, ‘খেজুর রস আবহমান বাংলার ঐতিহ্য৷ শীতের সকালে খেজুর রস পান করা অন্যরকম ভালোলাগা। চোখের সামনে তরতাজা খেজুর রস খেয়ে তৃপ্তি পেলাম। চোখের সামনে এমন দৃশ্য মুগ্ধ করেছে আমাদের!”

যেভাবে সংগ্রহ করা হয় রস
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রসের পরিমাণ ও মান কমতে থাকে। ন্যূনতম পাঁচ বছর বয়েসি গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু করা হয়। গাছের বয়স, এলাকা বা মাটির প্রকারভেদ, মৌসুমের সময় ও গাছের যত্নের ওপর রসের প্রাচুর্য নির্ভর করে।

পুরুষ-গাছ স্ত্রী-গাছের চেয়ে বেশি রস দেয় আর এই রস অনেক মিষ্টি হয়। রস সংগ্রহের জন্য গাছ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গাছ কাটার ওপর নির্ভর করে খেজুরের রস সংগ্রহ। কারণ, রস সংগ্রহের জন্য যে পদ্ধতি প্রচলিত আছে, তার চেয়ে আধুনিক পদ্ধতি অনেক উপকারী। সে কারণে প্রয়োজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গাছি দিয়ে গাছ কাটানো।

এতে রস আহরণের হার ও গাছের স্থায়িত্ব দুটিই বৃদ্ধি পায়।

গাছ কীভাবে কাটতে হবে, কোন অংশে কী পরিমাণ কাটতে হবে, কোন সময় বেশি রস পাওয়া যাবে, কীভাবে কাটলে গাছটি দীর্ঘস্থায়ী হবে, এসব ব্যাপারে গাছির জানা থাকতে হবে। গাছিদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে পারলে কাজটি আরো ভালো করা সম্ভব হবে।

গবেষণায় দেখা যায়, গাছের বেডের ১/৩ ইঞ্চি অংশ লম্বা ও ৭.৫-১০ সেন্টিমিটার (সেমি) গাছ কাটলে বেশি পরিমাণে রস পাওয়া যায়।

নভেম্বর মাসের মধ্যবর্তী সময়ে গাছ পরিষ্কারের কাজ শুরু করতে হয়। এর ১৫-২০ দিন পর গাছ কাটা শুরু করতে হবে। তারপর ছাঁটা অংশের যেখানে রস পড়ে সেখানে ‘ট’ আকৃতির চিকন ৭-৮ ইঞ্চি লম্বা বাঁশের কঞ্চি, আধা ইঞ্চির মতো গাছে ঢুকিয়ে রাখতে হয়।

‘ট’ আকৃতির কাঠির মাধ্যমে রস হাঁড়িতে জমা হতে থাকে। একবার গাছ ছাঁটলে ৩-৪ দিন রস সংগ্রহ করা যায় এবং পরবর্তী ৩ দিন শুকাতে হয়। এভাবে কাটলে সুমিষ্ট রস পাওয়া যায়।

অবশ্যই খেজুরের রস ফুটিয়ে পান করা উচিত।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *