র্যাবের জালে হত্যা মামলার পলাতক আসামি
ডেস্ক রিপোর্ট: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, শিল্প কারখানাগুলোতে শ্রমিক সংগঠন করার বিধান আরও সহজ করার তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের লেবার অ্যাটাশে লিনা খান ও ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) ম্যাথু বেহের সঙ্গে বৈঠকের পর এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, যেসব কারখানায় তিন হাজারের কম শ্রমিক রয়েছেন সেখানে ১০ শতাংশ শ্রমিকের সইয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তারা।ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতি বা স্বাক্ষর নেওয়ার হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে প্রক্রিয়া সহজ করা হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রথম সচিব এবং লেবার অ্যাটাসে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হলো, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক অধিকার নিয়ে তারা তাদের বক্তব্য বলেছেন। এই আলোচনা কিন্তু গত বছর থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের হচ্ছে। সময়ে সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে এবং আরও কোনো অগ্রগতি সম্ভব কি না, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকি। সেই চলমান আলাপ আলোচনার একটা পদক্ষেপ হিসেবেই আজকে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে যে শ্রম আইনটা গিয়েছিল, সেটি একটি বিশেষ কারণে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণটা আগেও আপনাদের ব্যাখ্যা করেছি। সেই ব্যাপারটা আলোচনায় এসেছে।’
আনিসুল হক জানান, মার্কিন কর্মকর্তারা তাদের থ্রেসহোল্ড সম্পর্কে এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষ করে তারা আমাকে বলেছেন যে এই ব্যাপারে (শ্রম আইন) যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়। আর যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকের অধিকার নিয়ে তারা খুবই সচেতন এবং এটা তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু। তখন আমি তাদের বলেছি, এটা বাংলাদেশ সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
“এটা এতোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, এবার শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। সে রকম গুরুত্ব এটিকে দেওয়া হয়। আমি এটাও বলেছি যে, আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসবো।”
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী মার্চে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি বৈঠকে বসবে। আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্য এবং তাদের দুয়েকটা জানার বিষয় আছে, সেই বৈঠকের পরে আমরা জানাব। আজ এ পর্যন্তই আলোচনা হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো আপত্তি তোলেনি।
আজকের বৈঠকে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলেও জানান আইনমন্ত্রী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়গুলো কী ছিল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, থ্রেসহোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য ছিল। এটা সবসময়ই ছিল। আমি বলেছি, থ্রেসহোল্ড আমরা ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সেখানে বলা আছে, যে কারখানায় তিন হাজার বা তার বেশি শ্রমিক আছে। কথা হচ্ছে, সেটার বিষয়ে একটা আলোচনা হতে পারে।
তারা এটাও বলেছেন, তিন হাজার বা তিন হাজারের বেশি শ্রমিক আছে, এমন কারখানা অনেক কম। এটা আগেও আমি শুনেছি। সেই বিষয়ে যখন প্রশ্ন এসেছে, স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার তারা কত শতাংশ চাচ্ছেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত এটা ১০ শতাংশ। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের অ্যামপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কাস ফেডারেশনগুলো সবসময় বলে আসছে, আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকারের পরিবেশ অনুসারে এটা কমানো হবে। সেটিই আমাদের সিদ্ধান্ত। যে কারণে আমরা আস্তে আস্তে কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।