লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না বিপিএলের টিকিট, একজন নিলেন ৯টি!
ডেস্ক রিপোর্ট: সিলেট পর্বে বিপিএলের টিকিট যেন সোনার হরিণ। ক্রিকেটের প্রাণ দর্শকদের যেন টিকিট সংগ্রহের যুদ্ধে নামতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও নগরীর রিকাবিবাজারস্থ জেলা স্টেডিয়ামের টিকিট বিক্রির বুথের চিত্রে এমনটাই বলে দিচ্ছে। কারণ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট বিক্রয়ের বুথে পাচ্ছেন না চাহিদার তালিকায় থাকা টিকিট। তাই নিরূপায় হয়ে বাইরে কালোবাজারিদের কাছ থেকে দ্বিগুণেরও বেশি টাকা দিয়ে টিকিট কিনছেন অনেকেই।
দুপুর সোয়া ১টার দিকে সরেজমিনে সিলেট নগরীর রিকাবিবাজারস্থ জেলা স্টেডিয়ামে দেখা যায়, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন না অনেকে। অথচ ২৭ জানুয়ারির ম্যাচের ৯টি টিকিট এক যুবককে দিতে দেখা যায় বুথ থেকে। সেই টিকিট দেওয়া নিয়ে সাধারণ দর্শকদের মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তারা বলছেন, যেখানে ম্যাচের আগের দিন টিকিট বিক্রির কথা সেখানে দুদিন আগে কিভাবে টিকিট পেল ওই যুবক।
তাৎক্ষণিক স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ওই বুথের টিকিট বিক্রয় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও ক্যামেরা দেখে চুপ হয়ে যান। এসব বিষয়ে জানতে বার বার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্ট কারো বক্তব্য।
জানা যায়, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার শুরু হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের দশম আসরের খেলা। ঢাকার পর সিলেটে ২৬ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ১২টি ম্যাচ। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিপিএলের সিলেট পর্বের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। লাক্কাতুরায় অবস্থিত সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও নগরীর রিকাবিবাজারে অবস্থিত সিলেট জেলা স্টেডিয়ামেও বিক্রি হচ্ছে টিকিট। প্রতিটি ম্যাচের একদিন আগে টিকিট বিক্রির কথা থাকলেও বুথের চিত্র বলছে ভিন্ন কথা।
বিসিবির তথ্যমতে, প্রতিদিনের খেলা দেখতে অন্তত ২০০ টাকা খরচ করতে হবে দর্শকদের। একটি টিকিটে দিনের দুটি ম্যাচই উপভোগ করা যাবে। ২০০ টাকায় ওয়েস্টার্ন গ্যালারি ছাড়াও অনিন্দ্য সুন্দর গ্রিন গ্যালারিতে বসেও দেখা যাবে খেলা। এছাড়া ইস্টার্ন গ্যালারি ৪০০ টাকা, ক্লাব হাউজ ৮০০ টাকা এবং গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের টিকিট ২৫০০ টাকায় কিনতে পারবেন দর্শকরা। কিন্তু বাস্তবে লাইনে দাঁড়ানো ক্রিকেট প্রেমীদের বাড়তি দামেই কিনতে টিকিট। এছাড়া যেদিন যে ম্যাচ মাঠে গড়াবে ওইদিন ও তার আগের দিন ম্যাচের টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।
দর্শকদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাচ্ছেন না তারা। অথচ প্রকাশ্যেই চড়ামূল্যে টিকিট বিক্রি করছেন কিছু অসাধু নারী-পুরুষ। সেই সঙ্গে টাকা দিয়ে লাইনে মহিলাদের দাঁড় করিয়েও কালোবাজারিরা টিকিট সংগ্রহ করছেন। যেগুলো দেখছেন বিসিবির কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীও।
পরিচয় গোপন করে এক টিকিট সংগ্রহকারী নারীর সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী জানান, পাঁচ জনকে ১০টি টিকিট সংগ্রহ করে দিয়েছেন। এতে তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে বকশিশ হিসেবে ২০০-৩০০ টাকা পেয়েছেন। একইভাবে কালোবাজির এক টিকিট বিক্রেতার সঙ্গে কথা বললে জানান, ২০০ টাকার টিকিট ৫০০ টাকা আর ৪০০ টাকার ৭০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
৯টি টিকিট সংগ্রহকারী সাজু নামে এক যুবক জানান, ৪০০ টাকা দামের শনিবার ম্যাচের ৯টি টিকিট সংগ্রহ করেছেন তিনি। দু’দিন আগে এবং একজন কিভাবে ৯টি টিকিট সংগ্রহ করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বুথ থেকে টাকা দিয়ে কিনেছি এবং তার সঙ্গে আরও ৩ জন ছিলেন। তবে বুথ থেকে টিকিট সংগ্রহকালে তাকে একাই দেখা যায় এমন একটি ভিডিও বার্তা২৪.কমের কাছে রয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।পরবর্তীতে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর পাওয়া যায়নি।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মিডিয়া ইনচার্জ ফরহাদ কোরেশি বার্তা২৪.কমকে বলেন, টিকিট কে বা কারা বিক্রি করছে তা আমার জানা নেই।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।