সারাদেশ

সফটওয়্যার প্রণেতাদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট: বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের জীবনভিত্তিক গ্রন্থ ‘আশার জয়’-এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) ব্র্যাক সেন্টারে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ওই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান, ব্র্যাক বাংলাদেশ গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্ত্রী লেডি সৈয়দা সারওয়াত আবেদ, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ, এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাকের পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনসের উর্ধ্বতন পরিচালক মৌটুসী কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা স্যার ফজলে হাসান আবেদের সুবিশাল কর্মযজ্ঞ, সৃজনশীল উন্নয়ন-ভাবনা এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করার উদ্ভাবনী এবং কার্যকর মডেলের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা গ্রন্থটি থেকে তাদের পছন্দের কিছু অংশ পাঠ করা হয়।

অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য অর্ণীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘আবেদ এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তৃপ্তির অনুভূতি নিয়ে। খুব কম লোকই বলতে পারে যে, তারা একটি পরিপূর্ণ জীবনযাপন করেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে তিনি কোটি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করেছেন। তাই আমি মনে করি, তিনি একজন পরিপূর্ণ মানুষের তৃপ্তি নিয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে গেছেন এবং এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর হতে পারে না।’

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘আমরা যারা ব্র্যাকে কাজ করছি তারা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে কেবল শ্রদ্ধার জায়গায় রেখে দেইনি। বরং সত্যিকার অর্থে চেষ্টা করেছি তার কাজ, দর্শন, চিন্তা থেকে শিখতে এবং সেটাকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিফলিত করতে। নতুন প্রজন্মের মাঝে এটা কীভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায়, সেই চেষ্টা করেছি।’

ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা একটি কঠিন সময় পার করেছি। ২০১৯ সালে আমরা প্রতিষ্ঠাতাকে হারিয়েছি, ২০ সালে করোনা মহামারী শুরু হয়। এখন পৃথিবীর চারদিকে সংঘাত। কিন্তু ব্র্যাক তার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। কোভিড ও কোভিড পরবর্তী সময়ে আমাদের কার্যক্রম আরো বিস্তৃত হয়েছে, আমরা নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ছি। আমার মনে হয়, আমরা এটা সুস্পষ্ট ভাষায়ই বলতে পারি যে, ব্র্যাক যা করবে বলে স্যার আবেদ আশা করেছিলেন, আমরা সেই যাত্রায় যথাযথভাবে আছি।’

অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের তরুণ কর্মীরাও সংস্থাটি এবং এর প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের উন্নয়ন-দর্শন নিয়ে তাদের ভাবনা তুলে ধরেন। এ সময় ‘আশার জয়’ বইটির প্রকাশনা সংস্থা ‘বাতিঘর’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাফর আহমদ রাশেদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

‘হোপ ওভার ফেইট: ফজলে হাসান আবেদ অ্যান্ড দ্যা সায়েন্স অফ এন্ডিং গ্লোবাল পোভার্টি’ শীর্ষক ইংরেজি ভাষায় মূল গ্রন্থটি লিখেছেন সাংবাদিক স্কট ম্যাকমিলান। বাংলায় বইটি অনুবাদ করেছেন আলভী আহমেদ।

এই বইয়ে স্যার ফজলে হাসান আবেদের জীবনের নানা গল্প উঠে এসেছে। তিনি ছিলেন এমন একজন নিভৃতচারী মানুষ যিনি আজীবন পাদপ্রদীপের আলো থেকে দূরে থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন এবং মানুষের সম্ভাবনায় দৃঢ় আস্থা রেখেছেন। যিনি এক সংগ্রামমুখর জীবনযাপন করেছেন, যে জীবনের চালিকাশক্তি ছিল মানুষের সম্ভাবনায় গভীর বিশ্বাস।

বইটির লেখক স্কট ম্যাকমিলান দীর্ঘদিন কাছ থেকে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে দেখেছেন ও তার সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি এখন ব্র্যাক ইউএসএ-এর শিক্ষণ ও উদ্ভাবন বিষয়ক পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *