আন্তর্জাতিক

ঢাবিতে কৃতী শিক্ষার্থীদের সৌজন্যে চা-চক্রের আয়োজন

ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ সিজিপিএ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সৌজন্যে চা-চক্রের আয়োজন করেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাবির উপাচার্য ভবন লনে এই চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তুজার সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মেধাবী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। শিক্ষা পরিবারের সদস্যদের বিশেষ করে প্রবীণ ইমেরিটাস অধ্যাপকদের নির্দেশনা, পরামর্শ ও মতামত নিয়েই দেশের আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেয়া হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার প্রতি তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, কর্মক্ষেত্রে সফলতার পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করতে হবে। এ লক্ষ্যে শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান বৃদ্ধিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং এর ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রায়ই গণমাধ্যমের সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন র‍্যাংকিং এ কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে পাচ্ছি না বা দেখছি না। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে যেটা হয়, সেটা আসলে আন্তর্জাতিক বাজার ব্যবস্থা,  একটা বাণিজ্যিকীকরণের প্রয়াস সেখানে আছেই পাশাপাশি এটা সর্বজন স্বীকৃত যে ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলোতে তারা যেই গবেষণাগুলো করছে যদিও আমাদের দেশের মানুষরাই সে দেশে গবেষণা করছে গিয়ে আমরাই বেসিকটা দিচ্ছি, আমাদের গবেষণার কাজ দিয়ে তারা বাজেট বরাদ্দ করছে। তবে তারা একটা মার্কেট পরিচালনা করছে। ইদানীং তারা এখানের কিছু মিডিয়ার সাহায্যে র‍্যাংকিং এর বিষয়টি সামনে আনছে। এখন আমার দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, নেতৃত্বের, গবেষণার ক্ষেত্রে আমার দেশের বিশ্ববিদ্যালয় কি সেভাবে করে কাজে আসে নি? বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ১৯৯৬ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন এবং কৃষি গবেষণায় বিশেষ বরাদ্দ দেয়া শুরু করেন। সেটার সরাসরি সুফল আমরা দেখতে পাই খাদ্য উৎপাদন এর মাধ্যমে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের মাধ্যমে। যার ফলে আজকে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর মত সেতু তৈরি হচ্ছে। এসব কি আমরা র‍্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারব? র‍্যাংকিং যারা করছে তারা বিভিন্ন দিক বিচার করে উচ্চশিক্ষার একটা লেনদেন করছে,সেটা তারা বিক্রি করছে।আমরাতো সেটা বিক্রি করে দিচ্ছি না।জনগণের অর্থ আমরা বাংলাদেশের জনগণ এর জন্যে, শিক্ষার্থীদের জন্যে শিক্ষায় বিনিয়োগ করছি এবং সেটা অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে এ চা চক্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে। শুরুতেই নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন ঢাবির সকল অনুষদ থেকে এ চা চক্রে আসা কৃতি শিক্ষার্থীগণ। তারা সকলেই তাদের বক্তব্যে এ চা চক্রের আয়োজক উপাচার্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল কৃতি শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধা ও অর্জনকে স্বীকৃতি দিতেই এই মিলনমেলার আয়োজন। এখান থেকে তারা কর্মজীবনে আত্মপ্রত্যয়ী হওয়ার অনুপ্রেরণা লাভ করবে। এই মিলন মেলায় প্রবীণ শিক্ষক ও তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে মিথস্ক্রিয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা নতুন জ্ঞান সৃষ্টির অনুপ্রেরণা পাবে। সৃজনশীল জ্ঞান, দক্ষতা, মানবিকতা ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রাখার জন্য উপাচার্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়াও এ চা চক্রে উপস্থিত ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, ড.খন্দকার বজলুল হক, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড.রফিকুন্নবী,ইমেরিটাস অধ্যাপক ড.হাশেম খান সহ ঢাবির সকল বিভাগের শিক্ষক এবং কৃতি শিক্ষার্থীবৃন্দ। 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *