সারাদেশ

সরকারের প্রতিক্রিয়া ‘যুদ্ধাবস্থা’ দেশের মতো: সুলতানা কামাল

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। আইন অমান্য করে দ্বীপটিতে নির্মাণ করা হচ্ছে একের পর এক স্থাপনা। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা সেন্টমার্টিন দ্বীপ। ইসিএ আইন মতে, দ্বীপে এমন কোন কাজ করা যাবে না যেখানে দ্বীপের পানি, মাটি, বায়ু বা প্রাণীর ক্ষতি করে। এখানে কোন প্রকার অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। তার সাথে যুক্ত হয়েছে ২০২২ সালে সরকার ঘোষিত একটি প্রজ্ঞাপন। যে প্রজ্ঞাপনে সেন্টমার্টিনকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করে সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী এখানে ইট-সিমেন্ট আনাই নিষিদ্ধ। শুধু বাঁশ-কাঠ দিয়ে ইকো-ফ্রেন্ডলি অবকাঠামো করা যেতে পারে।

কিন্তু কে শুনে কার কথা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই দ্বীপে একের পর এক অবকাঠামো তৈরি অব্যাহত রয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের সম্প্রতি তদন্তে এরূপ ১২ টি স্থাপনা নির্মাণের সত্যতাও পেয়েছে। যার জের ধরে গত ২৫ জানুয়ারি সেন্টমার্টিনের নিমার্ণাধীন ১২ টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদফতর।

পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক তদন্ত কর্মকর্তা ফাইজুল কবির বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া অবকাঠামো নির্মাণ ও সরকারে আদেশ অমান্য করার দায়ে এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলায় ১২ প্রতিষ্ঠান ও মালিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হল, ১. ট্রফিকানা বিচ রিসোর্ট এর মালিক শেখ ফরহাদ, ২. জলকুটি রিসোর্টের মালিক ড. মমি আনসারি, ৩. দক্ষিণাহাওয়ার মালিক ফেরদৌস সাগর, ৪. আরণ্যক ইকো রিসোর্টের মালিক মোহাম্মদ খাইরুল আলম, ৫. মেঘনা বিচ ভিউ রিসোর্টের মালিক মোশারফ হোসেন, ৬. ডিঙ্গি ইকো রিসোর্টের মালিক মো. মোবাশ্বির চৌধুরী, ৭. জল কাব্য রিসোর্টের মালিক চপল কর্মকার ও চঞ্চল কর্মকার, ৮. গ্রীন বিচ রিসোর্টের মালিক আজিত উল্লাহ, ৯. সূর্যস্নানের মালিক ইমরান, ১০. সান্ড এন্ড সেন্ড টুইন বিচ রিসোর্টের মালিক ইমতিয়াজুল ফরহাদ, ১১. নোঙর বিচ রিসোর্টের মালিক সাজ্জাদ মাহমুদ ও ১২. নীল হাওয়ার মালিক আবদুল্লাহ মনির।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক তদন্ত কর্মকর্তা ফাইজুল কবির বাদী হয়ে দায়ের করা মামলাটি সংশ্লিষ্ট আইনে লিপিবদ্ধ করে পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজারকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।

মামলার বাদী পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক তদন্ত কর্মকর্তা ফাইজুল কবির জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে সরেজমিনে তদন্ত শেষে প্রমাণ পাওয়ার পর এই ১২ প্রতিষ্ঠানের ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। তারা মামলায় সীমাবদ্ধ না থেকে আইনের প্রয়োগ চান।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, সেন্টমার্টিনে ইসিএ এলাকায় স্থাপনা নিষিদ্ধ হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সেখানে একপ্রকার বাধাহীনভাবে স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। প্রকাশ্যে টেকনাফ থেকে নেওয়া হচ্ছে নির্মাণ সামগ্রী। এরপর একের পর এক গড়ে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। নোটিশ এবং ক্ষেত্রবিশেষে মামলা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসন। মূলত সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ থেমে নেই। কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে সেখানে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *