তিন কবি পেলেন জাতীয় কবিতা পরিষদ সম্মাননা
ডেস্ক রিপোর্ট:
‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’- স্লোগানকে ধারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাকিম চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় ৩৬ তম জাতীয় কবিতা উৎসব। এ উৎসবে জাতীয় কবিতা পরিষদ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে তিনজন কবিকে। তারা হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা, কবি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিহাব সরকার।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুইদিন ব্যাপী এ উৎসবের ২য় দিন একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ছয়টি পর্বে সারাদিনব্যাপী চলে কবিতা পাঠ। এতে অংশ নেন দেশ-বিদেশের কবিরা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে কবিতার গান পর্বের মাধ্যমে উৎসব শেষ হয়।
এ সময় ‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘরের ট্রাস্ট্রি গবেষক মফিদুল হক। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলের অকল্পনীয় নিষ্ঠুরতা চলছে। পাশ্চাত্য-উদ্ভুত মঙ্গলময় বিশ্বের বয়ান ইসরায়েলের সহিংসতার মুখে শুধু নিশ্চুপই নয়, নানাভাবে জোগাচ্ছে অস্ত্র ও ইন্ধন। প্রতিদিনের নিষ্ঠুর বাস্তবতায় পশ্চিমা সমাজের স্বরূপ উন্মোচিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মানবিক মূল্যবোধের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত রাষ্ট্রগুলোর দ্বিচারিতা ও অনৈতিকতার বিপরীতে পূর্ব থেকে ঘটছে নতুন জাগরণ। ইসরায়েল-পরিচালিত গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশও ওই মামলায় অন্যতম রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া নতুন পৃথিবীর প্রত্যাশায় আমরা রইলাম। কবিতা মানুষে-মানুষে সংযোগের যে বাণীমন্ত্র বহন করে, নতুন মানবিক বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় সেই কবিতাই আমাদের আশ্রয়।
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, কবিতা উৎসব আমাদের এখানে প্রতিরোধের একটি প্রতীক। আমরা চাই এটা অক্ষুণ্ণ থাকুক। কারণ ভবিষ্যতে আমরা যে বাংলাদেশ দেখব বলে আশঙ্কা করছি, সেটি খুব শুভ নয়। এরই মধ্যে মিছিলে লোক কমে গেছে। আগের মতো সে রকম সোচ্চার কেউ নেই। নতুন কোনো জোয়ারও আমরা দেখিনি। হয়তো সেটা আমাদের ব্যর্থতা।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, কবিতা প্রতিরোধের শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। কবিদের প্রধান শত্রু মনে করেছে গণহত্যাকারীরা। কবিরা গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখেছেন। একাত্তরে সাংস্কৃতিক লড়াইয়েও কবি-কবিতা ছিল। একাত্তরে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে গণহত্যায় মদদ দিয়েছিল। কিন্তু মার্কিন কবিরা গণহত্যার বিরুদ্ধে লিখেছেন। এই যুক্তরাষ্ট্র উপনিবেশ স্থাপন করতে গিয়ে ৫০০ বছরে ১৪ কোটি মানুষকে হত্যা করেছে। কবিরা এর বিরুদ্ধে লিখেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, কবিতা, গান ও নাটকের মাধ্যমে আমরা হয়তো যুদ্ধ বন্ধ করতে পারব না। কিন্তু যুদ্ধের বিরুদ্ধে একটা সোচ্চার কণ্ঠ তো আমরা জারি রাখতেই পারি।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।