আন্তর্জাতিক

চবিতে ৮ম প্রতীকী জাতিসংঘের সম্মেলন শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার ৮ম সম্মেলন শুরু হয়েছে। ‘সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং দীর্ঘমেয়াদি সুনীল অর্থনীতির প্রসারে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি’ প্রতিপাদ্যেকে সামনে রেখে এ সম্মেলন শুরু হয়।

বুধবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অধিবেশনটি শুরু হয়েছে। এই অধিবেশন চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

সম্মেলনের মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল জিদানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। আরও উপস্থিত ছিলেন, আইন বিভাগের অধ্যাপক জনাব এ.বি. এম আবু নোমান, মেরিন সায়েন্সস বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাফিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো শাহনেওয়াজ চৌধুরী, লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয় ও নাজেমুল আলম মুরাদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা’র অধ্যাপক ড. কৃতি সরকার।

অধ্যাপক বেনু কুমার দে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সমুদ্রসম্পদ রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমি আশা করি আগামী চারদিন আপনারা আলোচনার মাধ্যমে এই সম্পদ রক্ষা করার নীতিগুলো নির্ধারণ করে আনতে পারবেন।’

মেরিন সায়েন্সস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো শাহনেওয়াজ চৌধুরী বলেন, ‘সমুদ্র একটি যৌথ সম্পদ, যা একটি দেশের একা রক্ষা করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন বৈশ্বিক সহযোগিতা’। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

আইন বিভাগের অধ্যাপক জনাব এ.বি. এম আবু নোমান বলেন, এই সম্মেলনে ছেলেরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবে। বিশ্ব নেতারা যেভাবে কথা বলে তারাও সেভাবে কথা বলবে। তারা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেবে, পরিবেশ নিয়ে সমুদ্র নিয়ে কাজ করার জন্য। তারাই পারবে এক সময় বিশ্বকে পরিবর্তন করতে।

মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, সমুদ্র রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রতীকী সম্মেলন করছে, এটা দেখে ভালো লেগেছে। আমরাও ২০১০ সালে এ বিষয়ে একটি খসড়া তৈরি করেছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমুদ্র বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে, তাই তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্সের গবেষণাগার তৈরির জন্য কক্সবাজারে জায়গায় বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা সেখানে আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্র বিষয়ক গবেষণাগার তৈরি করবো। দেশের অর্থনীতির উন্নতির পাশে সামাজিক সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।

সম্মেলনের মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল জিদান বলেন, আমাদের এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ ও বিশ্বের শিক্ষার্থীদের একত্রিত করার মাধ্যমে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা এবং বৈশ্বিক সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আজকের এই আয়োজনের মাধ্যমে ধন্য হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বৈঠক হচ্ছে ১০টি কমিটির। কমিটিগুলো হলো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি), জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ-১ (ডাইসেক), জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচআরসি), আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও), পেট্রোলিয়ম রপ্তানিকারক সংস্থা (ওপেক), আর্কটিক কাউন্সিল, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আইপি)।

এসব কমিটিতে বিভিন্ন দেশের হয়ে প্রায় তিন শতাধিক তরুণ শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব করছেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, কূটনীতি পরিচালন ও দলবদ্ধভাবে কাজ করে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সুনীল অর্থনীতির বিস্তার ও এর টেকসই বিকাশে সম্ভাব্য বাধা উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, সময়োপযোগী সমাধান নিরূপণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নিয়ে তারা আলোচনা করবেন।

ঢাবি, জাবি, রাবিসহ দেশ-বিদেশের প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করছেন। ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিয়েরা লিওন ইত্যাদি দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরাও এ সম্মেলনে যুক্ত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির সহযোগী হিসেবে সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে জাতিসংঘ বাংলাদেশ, ভাইয়া গ্রুপ, এএইচজেড অ্যাসোসিয়েটস, অ্যাসপায়ারিং বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, টিচ ফর বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়। শুরু থেকে এই ক্লাবটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে কূটনীতিক কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *