সারাদেশ

টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে

ডেস্ক রিপোর্ট: যশোরে গত ৫ দিনে ৪টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হয়েছেন নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন। এরআগে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে চুরির অপবাদ দিয়ে ফাইজুল নামে এক ভাটা শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা রাতে শহরের রেলস্টেশন এলাকায় ফিল্মি স্টাইলে ধাওয়া করে হত্যা করা হয় আরেক সন্ত্রাসী জুম্মনকে। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মহসীন মন্ডল নামের এক ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো।

দখল, চাঁদাবাজী, মাদক ও অস্ত্র বিকিকিনি নিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এসব হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অবশ্য পুলিশ বলছে, ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আছে তাদের। ইতিমধ্যে জড়িত সন্দেহে আটকও করা হয়েছে কয়েকজনকে।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুদের পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে শহরতলীর নূরপুর এলাকার মহসীন মন্ডলকে গত বুধবার শ্বাসরোধ করে হত্যা করে একই এলাকার মেহেদী হাসান। পরে একটি ট্রাঙ্কে ভরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের একটি বাওড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয় মরদেহ। বৃহস্পতিবার বিভৎস ওই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান লিখনকেও।

শনিবার সন্ধ্যা রাতে শহরের রেলস্টেশন এলাকায় খুন হন চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুম্মান। মাদক বিকিকিনি, চাঁদাবাজীসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে তার বিরোধ ছিলো দীর্ঘদিনের। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে প্রকাশ্যে তাকে ধাওয়া করছে কয়েকজন যুবক। পরে তারা উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যায়। হাসপাতালে আনার পথে মৃত্যু হয় তার। জুম্মানের বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালি থানায় এক ডজন মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জন গ্রেফতার হয়েছে।

ওই রাতেই সদর উপজেলার সতীঘাটার একটি ওয়ার্কশপে চুরির অভিযোগ তুলে ফয়জুল গাজী নামের এক যুবককে আটকের পর রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালায় সেখানকার শ্রমিকরা। খবর পেয়ে রোববার সকাল ১০টারদিকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাসপাতালে ভর্তির পর দুপুরে মারা যান তিনি। পুলিশ ওই কারখানার ৪ কর্মচারীকে আটক করেছে।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের গেলো ৪৩ দিনে যশোরে ১২টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জখম, মারামারি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে এসময়ে।

বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন জানান, সম্প্রতি প্রায় প্রতিদিনই হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড ঘটছে। বছরখানেক আগেই কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা নিয়ে আমি প্রশাসনকে অবহিত করেছিলাম। কিন্তু তারা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দ্রুত এই কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে, পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সচেতন নাগরিক কমিটির জেষ্ঠ্য সদস্য জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, যশোর শহরসহ জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নজিরবিহীন অবনতি হয়েছে। পত্রিকার পাতা ও টিভি খুললেই খুন, জখম, ছুরিকাঘাত, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, মাদক, সংঘর্ষের ঘটনা প্রতিনিয়তই মিলছে। প্রশাসন এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেছেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন। তিনি বলেন, যেগুলো ঘটছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিনই অপরাধীদের গ্রেফতার ও আটক করছেন। জব্দ করছেন অস্ত্র ও মাদক।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *