বরিশালে ফুলের দোকানে ফুল প্রেমীদের ভিড়
ডেস্ক রিপোর্ট: বসন্তের প্রথম দিন, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে বরিশালে ফুলের দোকান গুলোতে বেড়েছে ফুল কেনা বেচার ব্যস্ততা। এদিকে ফুলের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে বলে অভিযোগ ফুল প্রেমিদের।
বেশি দামে বিক্রির আসায় ইতিমধ্যে বাহারি রকমের ফুল দোকানে মজুদ করেছেন ব্যবসায়ীরা একই সাথে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বরিশালের বিভিন্ন দোকানগুলোতে দেখা গেছে, তরুণ -তরুণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা তাদের পছন্দের মত ফুল কিনছেন।
দোকানে ফুল কিনতে আসা বরিশাল সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের আরমান হোসেন জানান, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে ভালোবাসার প্রিয় মানুষকে উপহার দেওয়ার জন্যই লাল গোলাপ কিনতে এসেছি। তবে বিগত সব বছরের চেয়ে এই বছর সকল ফুলের দাম অনেক বেশি। বেশি দামের কারণে অনেকে ফুল কিনতে এসে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন অথবা বাধ্য হয়ে বেশি দামেই কিনছেন। দাম যদি আরো কম হতো তাহলে আমি মনে করি তাদের বেচা-বিক্রি আরো বেশি হতো। তাই ফুলের দাম নিয়ন্ত্রণ আনা একান্তই জরুরী।
বরিশাল নগরীর ফুল ব্যবসায়ী মাজার গাজী জানান, আমরা বরিশালে ফুল ব্যবসায়ীরা সারা বছর যে বেচা বিক্রি করি তার সবচেয়ে বেশি বেচা বিক্রি হয় পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবস ঘিরে। বসন্ত বরণ ১৪ই ফেব্রুয়ারি কারণে সারাদেশের ন্যায় বরিশালেও কিছুটা বেড়েছে ফুলের দাম। ফুলের বাগানের ব্যবসায়ীদের থেকে বেশি দামে এই বছর ফুল কিনতে হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরও কিছুটা দাম বেশি রাখতে হয়। তবুও সাধ্যমত কম রেখার চেষ্টা করছি। এই বছর লাল গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুন ক্রেতাদের চাহিদা ও সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখেই ব্যবসা কার্যক্রম চলছে।
বরিশাল নগর ঘুরে দেখা গেছে, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে সময়ের সাথে সাথে ফুলের কদর বেড়ে যাওয়ায় ফুটপাতের উপরে ভ্রাম্যমান দোকানের সংখ্যাও বেড়েছে। তারা লাল গোলাপ রজনীগন্ধা গাঁধাসহ বিভিন্ন ফুল নিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা।
তাদের মধো ভ্রাম্যমান ফুল ব্যবসায়ী আব্দুল করিম জানান, ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন ছাড়াও রয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এই তিনটি দিবস সামনে রেখে বরিশালে বেড়েছে ফুলের চাহিদা তাই অন্য কাজের পাশাপাশি বাড়তি কিছু অর্থের আশায় এই রাস্তার পাশে ফুল বিক্রি করছি। তবে বিগত সময়ের চেয়ে এই বছর ফুলের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বেশি বেচা বিক্রি হওয়ার কারণে নিজের কাছেও ভালো লাগছে। আমি আশা করছি এই ফুল বিক্রি করে বাড়তি ভালো কিছু টাকা আয় করতে পারবো।
বরিশাল নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা ফারজানা আক্তার ইভা নামের সরকারি মহিলা কলেজের একাদ্বশ শ্রেণীর ছাত্রী জানান, বরিশালের ফুলের দোকানগুলোতে টিউলিপ ও লিলি ফুলও উঠেছে অনেক। প্রায় অধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে গোলাপের একটি থোক কিনেছি। বিগত সকল বছরে তুলনায় এই বছর ফুলের দাম অনেক বেশি। যে ফুল গত বছর ৩০ টাকা ছিল সেটি ৬০ টাকা কিনতে হয়েছে। মাথার উপরে জন্য ফুলের চাকের দাম বেশি হাওয়ায় প্লাস্টিকের চাক ১০০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।
বরিশাল ফুল ব্যবসায় সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম মুন্না জানান, বিগত বছরের গুলোর চেয়ে এই বছর ফুলের ক্রেতাদের চাহিদা অনেকগুণ বেড়েছে। কয়েকদিনের চেয়ে মঙ্গলবার ( ১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে । বিগত এই কয়েক দিনে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ফুল বিক্রি হয়েছে। ফুল ব্যবসায়ীরা আশা করছে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ফুল বেচা বিক্রি হবে। গোলাপ ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে। গ্ল্যাডিওলাস প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে। রজনীগন্ধা ৫০ টাকা ও লিলি ফুল প্রতিটি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুল দিয়ে বানানো মাথার চাক ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।