বিনোদন

ঢাবির জগন্নাথ হলে ৭২ মণ্ডপে পালিত হচ্ছে সরস্বতী পূজা

ডেস্ক রিপোর্টঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের বিদ্যা ও সংগীতের দেবী সরস্বতীর কৃপা-লাভের আশায় ৭২টি মণ্ডপে সরস্বতী পূজা আয়োজন করা হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে জগন্নাথ হলের মাঠে বাণী অর্চনা, আরতি ও ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলিতে সরস্বতীর আরাধনা করছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টায় বাণী বন্দনা এবং ১০টা ১ মিনিটে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়।

হলের খেলার মাঠের চারিদিক দিয়ে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা পূজার আয়োজন করে। ৭২টি মণ্ডপের বেশির ভাগই বিভিন্ন বিভাগের ‘থিমের’ আদলে গড়া।

অন্য বছরের মত এবারও এ হলের পুকুরের মাঝে বসানোর জন্য দৃষ্টিনন্দন প্রতিমা তৈরি করেছে চারুকলা অনুষদ। অনেকদিন যাবৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল এ পূজার মূল কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

সকাল থেকেই ঢাবির জগন্নাথ হলে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এদিন পূজা মণ্ডপ দেখতে ভিড় জমায়।

পূজায় কথা হয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্তর সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, আমরা প্রতি বছর এমন করে সব বিভাগ আলাদা আলাদা পূজা করে থাকি। আমরা সব বিভাগই চাই আলাদা করে নিজেদের থিম পূজায় দাঁড় করাতে। মণ্ডপকে আলাদা করার জন্যে আমাদের বিভাগ সাজানো হয়েছে সত্যজিৎ রায় এর ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমা থেকে নেয়া ‘মস্তিষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্র’ থেকে। সেই সাথে শেকলে বাধা কলম, এআই এর কাছে বাধা আছে দেবী, তার হাতে গাইড বই দেবীর প্রতিমার পেছনে এমসিকিও কি মেধা? এমন সব চিত্র দেখানো হয়। যার মাধ্যমে একটি বার্তা দেওয়া হয়। এবার আমাদের কনসেপ্ট হলো শিক্ষা।

এ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, সর্বমোট ৭২টি মণ্ডপে এবার সরস্বতীর বন্দনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে হলের খেলার মাঠে প্রতিমা তৈরি করেছে ৬৯টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট। চারুকলা অনুষদের একটি মণ্ডপ জগন্নাথ হল পুকুরে, একটি কেন্দ্রীয় মন্দিরে; আরেকটি মণ্ডপ শিশুদের জন্য করা হয়েছে কর্মচারী কল্যাণ সমিতিতে।

এ ছাড়াও জগন্নাথ হল ছাড়াও ছাত্রীদের জন্য রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, সুফিয়া কামাল হল, কুয়েত মৈত্রী হলে বীণাপাণির আরাধনায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ভগবানের জ্ঞান ও বিদ্যার রূপ হলেন দেবী সরস্বতী। প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবীর পূজা হয়। হাতে বীণা থাকে বলে সরস্বতীকে বীণাপাণিও বলা হয়।

ঐতিহ্য অনুযায়ী এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পুরোহিতের মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে বিদ্যাদেবীর মন্দিরে সন্তানদের প্রথম বিদ্যার পাঠের হাতেখড়ির আয়োজন করেন।

পূজাকে কেন্দ্র করে হল প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় ফুল, চুড়িসহ বাহারি পণ্যের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে এবার।

পানিপুরি, ফুচকা, মোমো, ভেলপুরি, ঝালমুড়িসহ নানা মুখরোচক খাবার পাওয়া যাচ্ছে জগন্নাথ হলের খেলার মাঠে ও পূজা মণ্ডপের আশে-পাশে।

উল্লেখ্য, এ পূজায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। তারা সকলেই এই জগন্নাথ হল পুরো বিশ্বে সবচেয়ে বড় পূজার আয়োজন দাবি করেন এবং এটিকে মঙ্গল শোভা যাত্রার মতই ইউনেস্কো থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি রাখেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *