সারাদেশ

নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের দাবির বাস্তবায়ন না হলে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি

ডেস্ক রিপোর্ট: নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের দাবির বাস্তবায়ন না হলে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি

ছবি: বার্তা২৪.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সম্প্রতি বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় চলমান আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’।

পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় তাদের উত্থাপিত দাবিগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন না হলে ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্মটি।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আগামীকাল রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টায় বিক্ষোভ সমাবেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে ভাস্কর্যের সামনে নিপীড়কের কুশপুত্তলিকা দাহ করার ঘোষণা করেন।

এক লিখিত বিবৃতিতে আন্দোলনকারীরা জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করাসহ মাদক সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো অপর্যাপ্ত, অদক্ষ ও অগ্রহনযোগ্য। মাদক সরবরাহকারীদের আটক করা হলেও মাদক বিপনন ও ব্যবসার সাথে যুক্তদের চিহ্নিত করা ও কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এসকল দায়সারা গোছের কাজ প্রশাসনের সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যৌন নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার ও ধর্ষণকান্ডে প্রক্টর এবং মীর মশাররফ হলের প্রভোস্টের সম্পৃক্ততা তদন্তের দাবিতেও প্রশাসনের আশ্বাসকে সন্দেহের মুখে ফেলে দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা জানান, ২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি পরীক্ষার পূর্বেই আমাদের দাবি বাস্তবায়নের স্বার্থে অফিস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চলমান প্রতিকী অবরোধ কর্মসূচী স্থগিত করা হয়েছে। দাবি বাস্তবায়নে কোনপ্রকার গড়িমসি আমাদের কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য করবে। এতে যদি আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন কোনভাবে বাধাগ্রস্ত হয় তবে এর দায়ভার একমাত্র প্রশাসনকেই নিতে হবে।

আন্দোলনের উদ্দেশ্য ভোগান্তি নয়, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা আন্দোলন জারি রাখছি উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ধর্ষণের ঘটনায় যারা সহযোগিতা করেছেন তারা নির্বিঘ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় যদি ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয় তাহলে যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে তাদের নিরাপত্তা কোথায়? এই ক্যাম্পাস বর্তমানে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ নয়। আর বর্তমানে যে পরিস্থিতি তার দায় প্রশাসন কোনভাবেই এড়াতে পারে না।

প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, আগামী ২০ তারিখের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে যদি আশানুরূপ কোন সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আমরা আমাদের আন্দোলন জারি রাখবো এবং আন্দোলনের ফলে যদি ভর্তি পরীক্ষা ব্যাহত হয় তাহলে এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে অছাত্রদের হল থেকে বের করা এবং তাদের তালিকা প্রকাশ করার দাবি ছিল। কিন্তু তারা আমাদেরকে অছাত্রদের কোন তালিকা দিতে পারে নি। এখানে প্রশাসনের গড়িমসি ও শৈথিল্য প্রকাশ পেয়েছে। ধর্ষণকাণ্ডে সহায়তাকারীদের পলায়নের দায় প্রক্টর কোনভাবেই এড়াতে পারে না। যেখানে র‍্যাব এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন প্রশাসনকে দায়ী করেছেন সেটি উপাচার্যকে বোঝা উচিত। এই ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে প্রক্টর এবং প্রভোস্টকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়ার কোন সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাইনি।

ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, আমরা সুস্পষ্ট বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয় চলমান পরিস্থিতির সুষ্ঠু বিচার না হয়ে দায়সারাভাবে চলতে থাকলে আমরা আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দিতে পারি না। কারণ আমাদের যে ৫ দফা দাবি ছিল তার কোনটারই দৃশ্যমান ফলাফল আমরা দেখতে পাইনি। যেখানে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করার বাস্তবায়নও আমরা দেখতে পাইনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচারহীনতার যে লং টার্ম সিস্টেম চলছে এই সকল অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদের এ আন্দোলন। কিন্তু বিচার তো আর আমাদের হাতে নেই প্রশাসন সেটি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা চাই সেই বিচার যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়, তা না হলে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

চবি হিস্ট্রি ক্লাবের উদ্যোগে ‘মার্ক ইউর ডেসটিনেশন’ শীর্ষক সেশনে সুশান্ত পাল

ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) হিস্ট্রি ক্লাবের উদ্যোগে ‘নো দাইসেল্ফ ৩.০’ শীর্ষক মাসব্যাপী কর্মশালায় ‘মার্ক ইউর ডেসটিনেশন’ শীর্ষক চতুর্থ সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সেশনাল স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কাস্টমসের উপ-কমিশনার সুশান্ত পাল।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই সেশন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

‘মার্ক ইউর ডেসটিনেশন’ শীর্ষক সেমিনারের সেশনাল স্পিকার সুশান্ত পাল এই সেশনের মাধ্যমে ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে তার জীবনের সফলতা, ব্যর্থতার ঘটনার পাশাপাশি তার জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ব্যক্ত করেন।

এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি হিস্ট্রি ক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আহাসানুল কবীর পলাশ। তিনি চবি হিস্ট্রি ক্লাবের এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে ক্লাবের আয়োজকদের প্রশংসা করেছেন।

এ বিষয়ে চবি হিস্ট্রি ক্লাবের সভাপতি সাইদ আল মামুন বলেন, মাসব্যাপী নো দাই সেল্ফ শীর্ষক ওয়ার্কশপের চতুর্থ সেশনে বিষয় ছিলো ‘মার্ক ইউর ডেস্টিনেসন’। এই সেশনটি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত রেখেছি। আজকে পুরো দিন এই ক্যারিয়ার আড্ডা চলবে। সামনে আমাদের আরও তিনটা সেশন আছে সেগুলোতে সিভি রাইটিং, পাব্লিক স্পিকিং সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সেমিনার গুলো অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা হিস্ট্রি ক্লাব সবসময় ইতিহাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে থাকি।এবং দুইটার সমন্বয় রেখে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সেশন দিয়ে থাকি যাতে করে আমাদের সদস্যগণ খুব সহজে ক্যারিয়ার গঠন করতে পারে।’

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইভেন্ট কো অডিনেটর মো. হাফিজুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন সহ এই ইভেন্টের সেক্রেটারিয়েট টিম। ইভেন্টের কো অডিনেটর জানান, হিস্ট্রি ক্লাব তৃতীয়বারের মতো নো দাই সেল্ফ ইভেন্ট পরিচালনা করছে, এবং সামনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

পুরো সেশন জুড়েই সঞ্চালনায় ছিলেন ইভেন্ট এডিশনাল কো ওডিনেটর আবিদুর রহমান মাহিম এবং ক্লাবের এসোসিয়েট মেম্বার নাজিফা মোস্তাফিজ।

এছাড়াও এ মাসের বিভিন্ন তারিখে “নো দাই সেইল্ফ ” শীর্ষক কর্মশালার আরো ৩ টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ, পাবলিক স্পিকিং, নেতৃত্ব দান, সিভি রাইটিং, শুদ্ধ উচ্চারণ এবং উপস্থাপনাসহ কর্পোরেট জগতের বিভিন্ন ব্যবহারিক বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন।

;

শিশুদের পছন্দের শীর্ষে গল্পের বই   ‘এসো মিলি প্রাণের মেলায়’

ছবি: বার্তা২৪.কম

অমর একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই শিশু কিশোরদের ভিড়। সিসিমপুর অনুষ্ঠান তো আছেই পাশাপাশি নতুন বই কেনার ইচ্ছাও তাদেরকে মেলায় টেনে আনছে। এবার বইমেলায় শিশুদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে গল্পের বই।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণের শিশু চত্বরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশু-চত্বরের স্টলগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন তৈজসপত্র ও নানারকম শিশুতোষ কার্টুন দিয়ে। এ প্রাঙ্গণ মুখরিত শিশুদের পদচারণায়। ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রয় কর্মীরাও।

‘মেলা’ প্রকাশনীতে বিক্রয়কর্মীর দায়িত্বে থাকা সাইফুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, শিশুরা সাধারণত ভূতের গল্পের বই, রূপকথার গল্পের বই পাশাপাশি আদর্শলিপির মত শিক্ষামূলক বই কিনছে। যেমন: ভূতের কান্না, বারো ভূত আরো ভূত, রাজ দরবারে শিয়াল পন্ডিত, ম্যাজিক বয় নিরু, সোনামনিদের শৈশবের পড়া ইত্যাদি।

শৈশব প্রকাশের বিক্রয় কর্মী তৃষা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের এখানে অনেক গল্পের বই আছে। ছোট বাচ্চারা যারা নিজে পড়তে শেখেনি তারা গল্পগুচ্ছ নিচ্ছে, আর যারা পড়তে জানে তারা একক গল্পের বই কিনছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে আনিসুল হকের, গুড্ডু বুড়া, লোপা মমতাজের ট্রাকোডন ও হাঁসের বাচ্চাগুলো, কাবেরী মোস্তফার পাতালপুরির রাজকন্যা।

‘ঢাকা কমিক্স’ প্রকাশনী থেকে বই কিনছিলেন ৮ বছর বয়সী অর্ঘ্য। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি এই স্টল থেকে বই কিনেছি কারণ এখানে কমিক্স বই পাওয়া যায়। কিশোর আলোতে দেখেছি এখানে ডিসকাউন্ট আছে। বইয়ের সাথে স্টিকারও ফ্রি দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, বইমেলায় প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পালিত হয় শিশুপ্রহর।

;

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অপসারণ: ৩৬ ঘণ্টা ধরে অনশনে জাবি ছাত্রলীগ নেতা

ছবি: বার্তা২৪.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির গ্রাফিতি মুছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচারসহ ৩ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে থেকে আমরণ অনশনে বসেন শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। এদিকে ৩৬ ঘণ্টা পার হলেও অনশন ভাঙেননি তিনি।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ আওয়ামীপন্থি কয়েকজন শিক্ষক তার সাথে দেখা করতে আসলেও একই দাবিতে অনড় থেকে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রলীগের এই নেতা। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে আমরণ অনশনে বসেন তিনি।

অনশনরত এই ছাত্রলীগ নেতার উত্থাপিত ৩ দফা দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৮ দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।

অনশনকারী ছাত্রলীগ নেতা এনাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর এসে আমাকে অনেকভাবে বুঝালেও আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ফেলে দেশনেত্রীর ব্যাঙ্গচিত্র আঁকার ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আমি অনশন চালিয়ে যাবো। গর্হিত এই অপকর্মের বিচার নিশ্চিত না করার আগ পর্যন্ত জীবন গেলেও অনশন ভাঙবো না।

এদিকে এনামুলের দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, অনশন ভাঙার জন্য আমরা এনামুলকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু এনামুল মানতে নারাজ, তার দাবি দ্রুত বিচার। বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন। তদন্ত প্রতিবেদন আসা পর্যন্ত এনামুলকে অপেক্ষা করতে বলেছি। আর কমিটিকেও দ্রুত তদন্ত শেষ করার কথা বলা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে পূর্বে আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে এ গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।

ছাত্র ইউনিয়নের নামে অঙ্কিত ‘ধর্ষণ ও স্বৈরাচার থেকে আজাদী’ শীর্ষক গ্রাফিতিতে একটি নারীর অবয়ব, ছয়টি মাথার খুলিসহ একটি পতাকা আঁকা হয়। নারীর অবয়বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পূর্বের প্রতিকৃতি মুছে ফেলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন অনশনরত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক এনাম।

তবে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন তদন্ত চলমান রয়েছে।

;

নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে জবি ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি মামলা

ছবি: সংগৃহীত

সরস্বতী পূজা চলাকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দু’পক্ষের ১৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে এ মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

দায়ের করা একটি মামলায় সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে সভাপতি পক্ষের ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক মায়েল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য পারিজাত বিশ্বাস, ছাত্রলীগের কর্মী নৃবিজ্ঞান বিভাগের গাজী শামসুল হুদা, রাহুল আমিন, রিয়াদ আফ্রিদি ও ইতিহাস বিভাগের চয়েন দাস। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরেক মামলায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির অনুসারী নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবিদ ইশরাক নিলয় বাদী হয়ে মামলা করেন। তিনি মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করেন।

আসামিরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর মুকিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিব তালুকদার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জয় সরকার অর্জুন, নিরব, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের হৃদয় রানা, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের আরাফাত, অপু সাহা, সাজিদ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সোহান। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে দুই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে দ্বিতীয় মামলার বাদী আবিদসহ ৫/৬ জন সহপাঠী নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্টার কাবাব হোটেলে যাবার পথে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আসামি মুকিত, আরাফাত, সোহান, জয়, অপু, নিরব, রাকিব, হৃদয়, সাজিদসহ ২০/২৫ জন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড, বাঁশের লাঠি, স্টিলের পাইপ, হাতুরিসহ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বাদী, তার বন্ধু ইসমাইল হোসেন তাফসির ও বড় ভাই বাতেন বিল্লাহ গুরুতর জখমসহ আহত হয়। এ ঘটনার পরে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে বাহাদুর শাহ পার্ক জামে মসজিদের সামনে আরেক মামলার বাদী মাহমুদুর রহমানসহ তার বন্ধুরা আড্ডা দেয়ার সময় আসামি গাজী শামসুল, চয়েন, পারিজাত, প্রান্ত, রাহুল, মায়েল, রিয়াদসহ ২০/২৫ জন হামলা করে। এতে মাহমুদুরসহ কয়েকজন আহত হয়।

উল্লেখ্য, গত বুধবার নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর তর্কাতর্কি হয়। এই ঘটনার জের ধরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীরা সরস্বতী পূজার দিনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরেও লাঠিসোঁটা নিয়ে মারামারি করতে দেখা যায় দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের। এতে পূজা চলাকালীন ক্যাম্পাসে ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করে।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *