আন্তর্জাতিক

ভয়ানক প্রতিরোধের মুখোমুখি ইসরায়েলের সেনাবাহিনী

ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা ভয়ানক প্রতিরোধের মুখে পড়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাস যোদ্ধারা, গাজা শাসনকারী গোষ্ঠী ও তার সহযোগী ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) তাদের বিশাল ভূগর্ভস্থ টানেল নেটওয়ার্ক থেকে এ অঞ্চলে প্রবেশ করা ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলোর ওপর ঝাপিয়ে পড়ছে। ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে গেরিলা কৌশলে আক্রমন করছে তারা।

ইসরায়েল স্বীকার করেছে, হামাস যুদ্ধের জন্য “ভালভাবে প্রস্তুত” ছিল। তাদের মাইনফিল্ড এবং বুবি ফাঁদ ভেদ করে শহরে প্রবেশ করা কঠিন।

ইসরায়েলের সামরিক প্রকৌশলীদের প্রধান ব্রিগেডিয়ার-জেনারেল ইদ্দো মিজরাহি আর্মি রেডিওকে বলেছেন, গাজা ভূখণ্ডে অতীতের তুলনায় অনেক বেশি মাইনফিল্ড এবং বুবি ফাঁদ পাতা হয়েছে।

তিনি বলেন, হামাস শিখেছে এবং নিজেদের প্রস্তুত করেছে।

পররাষ্ট্র বিষয়ক ও সামরিক বিশ্লেষক এজাজ হায়দার আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলি সেনারা হামাস যোদ্ধাদেরকে ঘিরে রাখার জন্য একাধিক অক্ষ বরাবর অগ্রসর হচ্ছে। তারা রিজার্ভ সৈন্য ডেকেছে।

তিনি আরও বলেন, হামাসের জন্য তাদের নিয়ে আসা হল, হামাস যোদ্ধারা তাদের তাত্ত্বিকভাবে সর্বাধিক ক্ষতি করতে সক্ষম হবে।

গাজা শহরের একজন বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েল বুধবার রাত পর্যন্ত শহরটিতে গোলাবর্ষণ করেছে কিন্তু শহরের সীমানা দখল করতে পারেনি। সকালে, আমরা দেখেছি ইসরায়েলি বাহিনী এখনও শহরের বাইরে রয়েছে, এর মানে প্রতিরোধ ছিলো অনেক বেশি।

বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, যুদ্ধে তাদের ৫৩তম ব্যাটালিয়নের কমান্ডারকে হারিয়েছে তারা। গাজায় স্থল অভিযান জোরদার করার পর থেকে নিহত ইসরায়েলি সৈন্যের মোট সংখ্যা ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

কমান্ডার লেফটেন্যান্ট-কর্নেল সালমান হাবাকাকে অক্টোবরের শেষের দিকে স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে নিহত হওয়া সবচেয়ে সিনিয়র ইসরায়েলি অফিসার বলে মনে করা হয়।

এদিকে ইসরায়েল বলছে, হামলায় কয়েক শত ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকেও হত্যা করেছে তারা।

হতাহতের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে এ যুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চলীয় কেন্দ্রের কাছাকাছি চলে আসছে। এ অঞ্চল থেকে ইসরায়েল সাধারণ নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যারা থাকবে তাদের “সন্ত্রাসী সহযোগী” হিসাবে দেখা হবে বলে জানায় দেশটি।

ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজা শহরের গেটে তারা সৈন্য সংগ্রহ করছে।

ইসরায়েল গাজা শহরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরেও বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি এ শরণার্থী শিবিরে লুকিয়ে ছিল হামাসের কাসাম ব্রিগেড নেতারা।

গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গল ও বুধবারের দুটি আঘাতে কমপক্ষে ১৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে ৭৭৭ জন আহত এবং ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছে।

রয়টার্সের বরাত দিয়ে ঘটনাস্থলে একজন ব্যক্তি বলেছেন, এটি একটি গণহত্যা।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা জাবালিয়ায় কাসাম ব্রিগেডের দুই নেতাকে হত্যা করেছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *