পাহাড় কেটে জলাধার ভরাট বন্ধে কউককে আইনি নোটিশ
ডেস্ক রিপোর্ট: রাজশাহীবাসীর দৈনন্দিন জীবনে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামের অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এর মধ্যে খাদ্যপণ্য, শাক-সবজি, মাছ, মাংস এবং অন্যান্য দৈনন্দিন পণ্যের দামের অনিয়মিত বৃদ্ধি জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করছে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের’ দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন করেছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, রাজশাহীর বাজারে অনেক পণ্যের দামে অস্বাভাবিক উত্থান ঘটেছে। মার্কেটে মৌসুমি পরিবর্তন, সরবরাহের ঘাটতি, এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের বাড়াবাড়ি এসবের জন্য দায়ী। ফলে, সাধারণ মানুষের কেনাকাটার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে, যা তাদের আর্থিক চাপে ফেলছে। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর নজরদারি, সরবরাহ শৃঙ্খলার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, এবং অবৈধ মজুতদারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। এছাড়াও, স্থানীয় উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ, এবং কৃষকদের জন্য উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা সামগ্রিক সমাধানে সহায়ক হতে পারে। এর ফলে, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে, যা রাজশাহীবাসীর জীবনমান উন্নতির দিকে একটি বড় ধাপ হতে পারে।
রাজশাহী ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তাফা মামুন লিখত বক্তব্যে বলেন, ওষুধসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অবৈধ বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য পৃথক একটি ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করতে হবে। বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সকল পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর ফলে সব ধরনের ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবৃত্ত আয়ের ভোক্তারা এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। ভোক্তাদের নাভিশ্বাস দিন দিন বাড়ছে। একদিকে সরকার বলছে দেশে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে, দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এলসি সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কথা অসাধু ব্যবসায়ী বারবার বলে আসছেন। আর এর আড়ালে বাজার কারসাজি বা সিন্ডিকেট তৈরি করে পণ্যের দাম অসাধু ব্যবসায়ীরা বৃদ্ধি করছেন। চাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, আলু, মসলা, আটা-ময়দা, বোতলজাত পানি, ডিম, মাংস কোনো ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটের বাইরে নেই। একেক সময় একেক সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ভোক্তাদের নিকট হাতে কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করা হচ্ছে। এছাড়া হাত বদল হয়েও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্যাব মনে করে বাজারের এই অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙ্গার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে করতে হবে। তা না হলে সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। অসহায় ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, দুই বছর আগে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয়া হলেও সে সময়ে বাজারে থাকা ৯০ শতাংশের বেশি ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আবারো নতুন করে ওষুধের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেশ কিছু ওষুধের দাম এক লাফে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্যাবের এই দাবি দেশের ১৮ কোটি ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য। আমরা আশা করি, আমাদের এই দাবির প্রতি আপনারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে ক্যাবের আন্দোলনকে আরও বেগবান ও সাফল্যমণ্ডিত করবেন।
এসময় সিনিয়র সাংবাদিক রাজশাহী ক্যাবের উপদেষ্টা এড. মোস্তাফিজুর রহমান খান আলমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, ক্যাবের উপদেষ্টা ও সোনালী সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক লিয়াকত আলী, রাজশাহী ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তাফা মামুন, রাজশাহী প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাত খান,রাজশাহী ভাবনার সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সেফ দা ন্যাচার চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, দিনের আলো হিজরা সংগঠনের সভাপতি মোহনা, প্রচার সম্পাদক সন্জু আহমেদ, জয়িতা ক্যাবের সদস্য রহিমা বেগম, কবি অনিরুদ্ধ, পবা ক্যাবের সভাপতি সাংবাদিক নাজমুল হক প্রমুখ।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।