সারাদেশ

অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ, ভারতীয় ৩ নাগরিক আটক

ডেস্ক রিপোর্ট: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে এবং বই মেলা আয়োজনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও শহরের ট্রাংক রোড সেজেছে রঙ তুলির আঁচড়ে। আলপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একুশের চেতনা এবং সুসজ্জিত করা হয়েছে শহীদ মিনার ও আশেপাশের এলাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে একদল চিত্রশিল্পী দিনব্যাপী নিখুঁত কারুকাজের মাধ্যমে শহীদ মিনার চত্ত্বর, ট্রাংক রোড দোয়েল চত্ত্বর এবং তার আশেপাশের এলাকায় আলপনা করেছেন। এতে উঠে এসেছে বাঙালির ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও অমর ২১ এর তাৎপর্য।

নিজ শহরে এমন আয়োজনে নাগরিকদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে পৌরসভা। আলপনার মাধ্যমে ২১ এর চেতনা ফুটিয়ে তোলায় আয়োজকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, আমাদের শহীদ মিনার দৃষ্টিনন্দন। এরমধ্যে আশেপাশে আলপনা করায় সৌন্দর্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন আয়োজন নিঃসন্দেহে তরুণদের উজ্জীবিত করবে।

আব্দুল আজিজ কাবুজ নামে একজন চিত্রশিল্পী বলেন, ভাষার মাসে এমন কারুকাজ নিজ শহরে করতে পেরে নিজেদের কাছে ভালো লাগছে। ফেনী সুন্দর শহর, যে কোন দিবসকে কেন্দ্র করে শহর উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। এটি ভাষার মাস, ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের এ কর্মকাণ্ড।

অন্যদিকে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ৫ দিনব্যাপী বইমেলা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে পৌরসভা। ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী মেলা আয়োজনে সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বইমেলা আয়োজনের দাবিতে মানববন্ধন করে ফেনীর বিভিন্ন কবি, প্রকাশক, লেখক ও পাঠকরা। সে দাবির প্রেক্ষিতে ছোট পরিসরে মেলার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় পৌরসভা।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, বইমেলাকে আকর্ষণীয় করতে এবং যথাযথ মর্যাদায় শহীদ দিবস উদযাপনে শহীদ মিনার এলাকায় রংতুলির কাজ করা হয়ছে। ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মেলা শুরু হয়ে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় ১২টি স্টল থাকবে। ১০টি বইয়ের স্টলের পাশাপাশি একটি পিঠা ও একটি নাস্তার স্টল থাকবে। প্রথমবারের মত এ মেলা ৫দিন ব্যাপী করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আগামী বছর থেকে পিটিআই মাঠে ব্যাপক পরিসরে আয়োজনের চিন্তা রয়েছে বলে জানান তারা।

ফেনী পৌরসভা মেয়র মোঃ নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ভাষা শহীদ আবদুস সালামের বাড়ি ফেনী জেলায় অথচ গত কয়েক বছর এ জেলায় কোন ধরনের বই মেলা হয়নি। এ নিয়ে ফেনীর কবি সাহিত্যক, লেখক, প্রকাশকদের মাঝে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ফেনী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবি,লেখক, প্রকাশকরা মানববন্ধন করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বই মেলা আয়োজনের দাবি জানানো হয়েছে সে মর্মে মেলা আয়োজনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। একজন ভালো মানুষ হতে বই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই স্মার্টফোনের যুগে মানুষকে বই পড়তে আগ্রহী করে তুলতে পৌরসভার পক্ষ থেকে মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মেলা আয়োজনে খুশি লেখক পাঠকরা। শাহরিয়ার আহমেদ সায়েম নামে এক তরুণ লেখক বলেন, নিজের প্রকাশিত একটি বই রয়েছে কিন্তু নিজ জেলায় সেটি মানুষের হাতে মেলার মাধ্যমে পৌঁছাতে পারে নি। দীর্ঘ ২ বছর ফেনীতে মেলা হয় না, এবার আয়োজনের বিষয়ে শুনেছি। এতে আমরা অনেক আনন্দিত।

ফয়সাল মাহমুদ নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, সারাদেশে বই মেলা হয়, আমাদের ফেনীতে এটির ধারাবাহিকতা নেই। বই মেলা বর্তমানে অনেক বেশি প্রয়োজন। কারন মানুষ বইয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বইমেলা সেটি থেকে একটু হলেও পরিত্রান পেতে সাহায্য করবে।

এদিকে শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিয়েছে ফেনী জেলা পুলিশ ও জেলাপ্রশাসন। যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সভা ও করা হয়েছে। রাত ১২ টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সরকারি বেসরকারি দপ্তর এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবি সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরবর্তীতে সকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *