সারাদেশ

যারা পণ্য লুকিয়ে রাখে তাদের গণধোলাই দেয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনার কি মনে হয় না যারা সরকার উতখাতের আন্দোলন করে এখানে তাদেরও কারসাজি আছে? এর আগেও দেখা গেল পেঁয়াজের খুব অভাব। অথচ পরে বস্তার বস্তা পচা পেঁয়াজ পানিতে ফেলে দিচ্ছে। এই লোকগুলোরে কী করা উচিত সেটা আপনারাই বলেন? এদের গণদোলাই দেয়া উচিত। সরকার কিছু করলে বলবে সরকার করছে। এরচেয়ে পাবলিক যদি কিছু করে তাহলে কেউ তো কিছু বলতে পারবে না।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিনিস লুকিয়ে রেখে পচিয়ে ফেলে দিবে আর জিনিসের দাম বাড়াবে। পেঁয়াজ আমাদের যথেষ্ট উৎপাদন হচ্ছে সেটা আমরাই উৎপাদন করছি। আগামীতে আমাদের বাহির থেকে আমদানি করতে হবে না। তবে আমদানির কথা বলতে হয় এই কারণে, যখন আমদানি হচ্ছে এই নিউজ করে তখন লুকিয়ে রাখে যারা তারা তাড়াতাড়ি বের করে। এবং বাজারে তার একটা প্রভাব আছে সে কারণে বাজারে দাম সামঞ্জস্য হয় এটা বাস্তবতা। খোলামেলা কথা বলছি এখানে লুকানোর কিছু নাই।

মার্চের দিকে দুর্ভিক্ষ আসতে পারে আপনি নির্বাচনের আগে এমন কথা বলেছিলেন এম প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ষড়যন্ত্র ছিল, ষড়যন্ত্র আছে। আমি দেশে আসার পর থেকেই ক্ষমতায় যেন আসতে না পারি বা পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডে ছোট রাসেলকেও ছাড়েনি। কেন? যেন এই পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসতে না পারে। আমি আমার ছোট বোন বিদেশে যে কারণে বেঁচে গেছি। ফিরে এসে দায়িত্ব নিয়েছি। আমার স্বপ্নই হচ্ছে যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির পিতা দেশটাকে স্বাধীন করেছেন সেটা পূরণ করা। সে ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্র বার বারই হচ্ছে। আমরা ভোটের অধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছি। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে এনেছি যার সুফল জনগণ পাচ্ছে। নির্বাচনটা যেন না হয় তার জন্য বিরাট চক্রান্ত ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনা, ২০১৪ সালের অগ্নীসন্ত্রাসগুলো যে হঠাৎ করে করা তা তো না, এগুলো পরিকল্পিতভাবে করা। যারা নির্বাচন বানচালের পক্ষে তারা যখন দেখলো নির্বাচন কোনোভাবে বানচাল করতে পারবে না মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা আছে তারা তখন চক্রান্ত করলো জিনিসপিত্রের দাম বাড়বে। সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে তখন আন্দোলন করে সরকার কে উৎখাত করা হবে। এটা তাদের একটা পরিকল্পনার অংশ। কাদের সেটা আপনারা ভাল বুঝেন। আমি কারো নাম বলতে চাই না। তবে এ চক্রান্তটা আছে।

তিনি বলেন, তবে আমি একটা জিনিস বলতে পারি, দেখেন না কাল বৃষ্টি হলো, কথায় তো আছে ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পূন্য দে’ এই যে মাঘের শেষেও কিন্তু বৃষ্টি হলো, ফাল্গুনের শুরুতেও বৃষ্টি। আমের মুকুলগুলো তরতাজা হচ্ছে। ধানের চারা রোপণ, সেচের প্রয়োজন হবে না যদি বৃষ্টি হয়। একটু ফুলের সমস্যা হলেও পণ্য উৎপাদনে কিন্তু কোনো সমস্যা হবে না। কোভিড যখন আসলো তখন থেকেই কিন্তু আমি বলে যাচ্ছি নিজেদের খাদ্য নিজেদের উৎপাদন করতে হবে। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। শুধু বলা না সেটা আমি কার্যকর ও করছি।

তিনি আরও বলেন, আমার নিজের গ্রামে আমাদের পারিবারিক যত জমি ছিল সাথে সাথে আশেপাশের পাড়া প্রতিবেশীদের জমি পরিষ্কার করা এবং সেগুলোতে চাষ করা। সেগুলো আমরা কিন্তু শুরু করে দিয়েছি। যেগুলো নিচু সেগুলোতে মাছ চাষ করতে। আমি কিন্তু উৎসাহিত করছি। কাজেই এভাবে কিন্তু আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। একটা প্রচেষ্টা তো আছে। একসময় বাংলাদেশে অভাব হলে বলতো পেটে ভাত নেই, এখন সে কথা বলে? বলে না। এখন বলে ডিমের দাম, মাছের দাম, মাংসের দাম অথবা পাঙাশ মাছে পেটি খেতে পারছে না এটাই তো? এটা কি একটা পরিবর্তন না? পনেরো বছরে তো এই পরিবর্তন টা আসছে সেটা তো স্বীকার করবেন। ১৫ বছর আগে ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। একটু নুন ভাতের জন্য ভিক্ষা চাইতো এখন তো তা চায় না।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *