বেনাপোল কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল উদ্বোধন জুনে
ডেস্ক রিপোর্ট: বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়াতে বেনাপোল বন্দরে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জমিতে নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি আগামী জুন মাসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে টার্মিনালটির ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এ টার্মিনালে একসাথে দুই হাজার পণ্যবাহী ট্রাক পার্কিংসহ নানান সুবিধা পাবেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যেমন গতিশীল হবে তেমনি রাজস্ব আহরণ দ্বিগুন বৃদ্ধি পাবে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল কমিম জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের পাশে বেনাপোল বন্দরে ৪১ একর জাইগায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ কাজ। এখানে একসাথে ভারতীয় পণ্যবাহী ২ হাজার ট্রাক পার্কিং, ট্রাক চালকদের জন্য অত্যাধুনিক ৩টা টয়লেট কমপ্লেজ ও থাকা-খাওয়ার সু ব্যবস্থায় ব্রাক বিল্ডিং, ফায়ার সার্ভিস, কেমিকেল শেড, সিসি ও এসব কার্যক্রম পরিচালনায় অপারেশন বির্ডিং থাকবে। যেখানে বসে বন্দর কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যিক গতিবিধি তদারকি করবে। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে টার্মিনালটির। যা চলতি বছরের জুনে উদ্বোধন হবে।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি, রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, টার্মিনালটিতে সেবা শুরু হলে বন্দরে চলমান নানান সমস্যার ৯০ শতাংশ সমাধান হবে। তবে কাজের গুণগত মান যেন ভাল হয় সেদিকে কর্তৃপক্ষকে সুনজর রাখার আহবান জানান এ নেতা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহাবুদ বিপুল জানান, প্রতি বছর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে। যার ৮০ শতাংশ হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। তবে চাহিদা মত বন্দরের অবকাঠামো গড়ে না ওঠায় স্বাভাবিক বাণিজ্য পরিচালনা নানান ভাবে বিঘ্ন ঘটতো। দিনে ৬ থেকে ৭শ ট্রাক পণ্য আমদানির চাহিদা থাকলেও জায়গার অভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাকের বেশি পণ্য আমদানি সম্ভব হতোনা। রাসায়নিক পণ্যগারের অভাবে প্রায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছাড়াও ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছিলেন। এক্ষেত্রে দাবি ছিল জায়গা অধিগ্রহণ করে বন্দর আধুনিকায়নের। টার্মিনালটিতে সেবা শুরু হলে বন্দরে চলমান সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে।
ভারতীয় ট্রাকচালক রমেশ হালদার জানান, ট্রাক পার্কিং নিয়ে বড় সমস্যার মধ্যে ছিলাম। বাংলাদেশ সরকারের এই টার্মিনালে সে সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান জানান, প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ১০ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়। বন্দর আধুনিকায়নে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যেমন গতিশীল হবে তেমনি রাজস্ব আহরণ দ্বিগুন বৃদ্ধি পাবে।
টার্মিনাল নির্মাণ কাজে নিযুক্ত বন্দরের প্রকল্প প্রকৌশলী মশিউর রহমান জানান, দ্রুত গতিতে কাজ এগোচ্ছে। কাজের মান ঠিক রাখতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন অর্থ, পরিকল্পনা মন্ত্রালয় ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত কলকাতা দূতাবাস কর্মকর্তারা টার্মিনাল পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।