বিনোদন

আমতলী পৌর নির্বাচনকে ঘিরে বাড়ছে সহিংসতা

ডেস্ক রিপোর্টঃ বরগুনার আমতলী পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় দুটি মামলাও হয়েছে। রির্টানিং কর্মকর্তা বরাবরে উভয় প্রার্থী একাধিক পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। তবে শুধুমাত্র কারণ দর্শানো ছাড়া কোন প্রার্থী বা সমর্থকের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন।

গত ২৩ জানুয়ারী বরগুনা আমতলী পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই শুরু হয় নির্বাচনী আমেজ। একইসাথে ঘটতে শুরু করে সহিংসতার ঘটনা। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে মেয়র প্রার্থী মোঃ নাজমুল আহসান নান্নুর সমর্থক সোহাগ প্যাদা, হাসান মৃধাসহ ৭/৮জন অপর মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমানের সমর্থক মঞ্জুরুল ইসলাম সোহাগ মৃধাকে মারধর করে।

১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে পৌর শহরের সিনেমা হলের সামনে থেকে যাবার পথে নান্নু সমর্থক নুর গাজী নয়নসহ ৭/৮জন মিলে আমতলী উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ধীরাজ কুমার বিশ্বাসকে মারধর করে। একই দিন ভোর রাতে ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জেলে দেলোয়ার ফকিরের একটি মাছ ধরার নৌকা দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

ভুক্তভোগী দেলোয়ার ফকিরের অভিযোগ, নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমানের সমর্থক হওয়ায় অপর মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নুর সমর্থকরা তার নৌকাটি পুড়িয়ে দিয়েছে। সবশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ৫টার দিকে মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমানের সমর্থকরা লিফলেট বিতরণ করতে গেলে পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের বাঁশতলা এলাকায় মেয়র প্রার্থী নান্নু ও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবং নান্নু সমর্থক জিমএম মুসা সমর্থকরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা (মুসা ও নান্নু সমর্থকরা) মেয়র মতিয়ার রহমানের সমর্থকদের বেধরক মারপিট করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে জিম্মি করে রাখে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মেয়র মতি সমর্থকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় মেয়র মতিয়ার রহমানের ৭/৮জন সমর্থক আহত হন। এদের মধ্যে গুরুত্বর আহত নিজাম প্যাদা, ফারুক মৃধা, অভি হাওলাদারকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আমতলী পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও মোবাইল ফোন প্রতিকের মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান বলেন, তফসিল ঘোষণার পরপরই মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নু ও তার সমর্থকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ইতমধ্যেই তারা বিভিন্নস্থানে আমার অন্তত ২০ জন সমর্থককে হামলা করে আহত করেছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। তবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় আমি হতাশ। মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নু একাধিকবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার-প্রচারণা চালানোয় আমি নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। শুধুমাত্র একবার কারণ দর্শানো ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। নান্নু সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। বর্তমানে ভোটের মাঠে যে অবস্থা বিরাজ করছে এতে আমি নিজেই প্রচার প্রচারণায় নামতে ভয় পাচ্ছি। আমি আশা করি নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনি ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করবে।

হ্যাঙ্গার প্রতিকের মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নুর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র মতিয়ার রহমান মাঠে প্রভাব বিস্তার করে প্রচারণা চালাচ্ছে। আমার কোনো সমর্থক বা কর্মী তার কোনো সমর্থককে মারধর করেনি। এসবই মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ। মূলত, আমার পক্ষে জনগনের সমর্থন থেকে তিনি এসব আবোল তাবোল বলা শুরু করেছেন।

আমতলী পৌরসভা নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই আল হাদি বলেন, নির্বাচনে প্রচারণার পরিবেশ সহিংসতামুক্ত রাখতে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে একজন নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো প্রার্থীর যদি অভিযোগ থাকে তবে আমরা তার ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *