সারাদেশ

ফেনীতে ভোটার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র‍্যালি 

ডেস্ক রিপোর্ট: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট যতদূর চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। মানুষের পদচারণায় মুখরিত সমুদ্র নগরী কক্সবাজার। শুক্র-শনিবারের ছুটিতে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের বিচে দেখা যায় এমনই দৃশ্য। এছাড়া সেন্টমার্টিন-মহেশখালী দ্বীপেও পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে অনেক।

কিছুদিন পর পবিত্র মাহে রমজান। সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে রমজানের আগেই রমরমা ব্যবসায়ের ফাঁদ পেতেছে হোটেল ব্যবসায়ীরা। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি পর্যটক আসায় দ্বিগুণ দামে কক্ষ ভাড়া দিচ্ছে তারা। এমনটাই অভিযোগ পর্যটকদের।

ঢাকা থেকে আসা মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান উঠেছেন হোটেল হিলটপে। এর কিছুদিন আগে তিনি এই হোটেলে দুই বেডের কক্ষের জন্য ভাড়া দিয়েছেন দুই হাজার টাকা। কিন্তু এবার শুক্রবার উঠেছেন পাঁচ হাজার টাকায়। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, হোটেলের ভাড়া অনেক বেশি। স্বাভাবিক সময়ে যে রুম ভাড়া ২ থেকে ৩ হাজার নিতো সে রুম ভাড়া নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার টাকা। এটা আমাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। অন্য হোটেলে খালি না থাকার কারণে উঠারও সুযোগ নেই।

আরেক পর্যটক সুনিয়া সাবরি বলেন, সচরাচর যে রুমের ভাড়া ৩/৪ হাজার টাকা সেগুলো দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে দেয়। হোটেলগুলোতে কোন নির্দিষ্ট মূল্য তালিকাও নেই যেগুলো দেখে আমরা বিচার করতে পারব বেশি দিচ্ছি কিনা। আগে থেকে এলে যে হোটেলে থাকি ভাড়া বৃদ্ধির কারণে ওখানে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক।

দু’দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা এবং এক জেলা মৎস্য কর্মকর্তা উঠেন লাবণী পয়েন্টের হোটেল মিশুকে। হোটেলের কক্ষ ঠিক করেন এক সাংবাদিক। পরের দিন কক্ষ ছেড়ে দেওয়ার সময় অনৈতিকভাবে পাঁচ শত টাকা করে বাড়িয়ে রাখে। পরে ওই সাংবাদিক পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অভিযোগ দিলে পাঁচশত টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পর্যটক বলেন, এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একটা পর্যটন নগরী এরকম হতে পারে না। যে যার মতো দাম রাখছে। কোন নজরদারি নেই।

এদিকে পর্যটকদের এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে হোটেল-মোটেল জোনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোন হোটেল-মোটেলে নেই মূল্য তালিকা। প্রায় দ্বিগুণ দাম বাড়িয়েছে কক্ষের। প্রথমে পর্যটক সেজে গেলে যে ভাড়া বলা হয় সে ভাড়া সাংবাদিক জেনে নামিয়ে আনা হয় প্রায় অর্ধেকে।

হোটেল-মোটেল জোনের ড্রিম জোন রিসোর্টে প্রথমে পর্যটক সেজে গেলে দুই বেডের কক্ষের ভাড়া চাওয়া হয় সাড়ে ছয় হাজার টাকা। পরে সাংবাদিক জেনে সাড়ে চার হাজার টাকায় নামিয়ে আনা হয়। হোটেলটিতে ছিল না মূল্য তালিকা।

সুপারভাইজার মোহাম্মদ রিয়াজ বলেন, আসলে প্রথমে একটা দাম বলে পরে দর কষাকষি করার সুযোগ আছে। আমরা দাম বাড়িয়ে রাখছি না।

হোটেল কোরাল রীফ অপারেশন ম্যানেজার মনির হাসান রিজভী বলেন, আমরা দাম বাড়িয়েছি এটা ঠিক নয়। আমরা পর্যটকের সংখ্যা কম থাকলে ছাড় দিয়ে রুম বুকিং দিই। এখন ছাড় দিচ্ছি না। তবে মূল্য তালিকা দেখাতে পারেনি তিনিও।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান লাভলু জানান, হোটেল-মোটেলগুলোতে মূল্যতালিকা আছে। কিছু ফ্ল্যাটভিত্তিক অনুমোদনহীন হোটেলে কারসাজিগুলো করছে। আর দালাল চক্রের দৌরাত্মও অনেক বেড়েছে। এগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাসুদ রানা বার্তা২৪.কমকে বলেন, কক্সবাজারে পর্যটক হয়রানির কোন সুযোগ নেই। আমরা পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবগুলো খাতকে নজরদারিতে নিয়ে আসছি। হোটেল-মোটেলগুলোতে মূল্য তালিকা না থাকা এবং ভাড়া বাড়িয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্যারদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *