সারাদেশ

‘ভুল তথ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘের মহাসচিব বিবৃতি দিয়েছেন’

ডেস্ক রিপোর্ট: বগুড়ায় বিএনপির কর্মী সমর্থকদের ধরপাকড় অভিযান অব্যাহত থাকায় হাজার- হাজার নেতাকর্মী ঘরছাড়া। দলীয় কার্যালয়েও ঝুলছে তালা। হরতাল অবরোধে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ১২৭ নেতাকর্মীকে। চারদিনের এই কর্মসুচিতে মামলা হয়েছে ১৬টি।

মামলাগুলোতে জেলা বিএনপি, থানা এবং পৌর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মীদেরকেও আসামি করা হয়েছ। ১৬টি মামলায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ থাকলেও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে।

যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা, আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলাগুলোতে। এসব মামলার মধ্যে ১৪টির বাদী পুলিশ এবং অপর দুইটির বাদী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।

বিএনপি নেতারা এসব মামলাকে গায়েবি মামলা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে এবং গাড়িতে আগুন দিয়ে এসব গায়েবি মামলা সৃষ্টি করেছে পুলিশ।

আর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে গাড়ি ভাঙচুর এবং আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে একের পর এক মামলা এবং গ্রেফতার আতঙ্কে কয়েক হাজার নেতাকর্মী বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে দাবি করেছেন বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল। তিনি বলেন,পুলিশের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যলয়েও যেতে পারছে না।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে ফেরার পথ থেকেই নেতাকর্মীদের গ্রেফতার শুরু করে বগুড়া জেলা পুলিশ। এরপর ২৯ অক্টোবর হরতালের দিন থেকে শুরু হয় একের পর এক মামলা।

জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত ২৮ অক্টোবর রাত থেকে ২ নভেম্বর রাত পর্যন্ত বগুড়া জেলার বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয় ১৬টি। এর মধ্যে বগুড়া সদর থানায় ১০টি, শিবগঞ্জ থানায় ১টি, নন্দীগ্রাম থানায় ১টি, শাজাহানপুর থানায় ২টি, সোনাতলা থানায় ১টি এবং কাহালু থানায় ১টি।

এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বগুড়া সদরে ৪৫ জন, শিবগঞ্জে ১৭ জন, দুপচাঁচিয়ায় ৯ জন, আদমদীঘিতে ৭ জন, নন্দীগ্রামে ১০ জন, শাজাহানপুরে ১২ জন, সারিয়াকান্দিতে ১১ জন, সোনাতলায় ৬ জন, শেরপুরে ৮ জন এবং কাহালুতে ২ জন।

বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদ বলেন, বিএনপি যেন কোন কর্মসূচি করতে না পারে সেজন্য পুলিশ গায়েবি মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। তিনি বলেন, পুলিশ জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে একতরফা নির্বাচন করতে সরকারকে সহযোগিতা করছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চায়, কিন্তু পুলিশ গাড়িতে আগুন দিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপাচ্ছে আর একের পর এক গায়েবি মামলা দিচ্ছে। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সকল অপকর্মের দায় পুলিশকেই নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন অ্যাডভোকেট বাছেদ।

বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরাফত ইসলাম বলেন, আইনের ভাষায় গাবেবি বলে কোন মামলা নেই।প্রত্যেকটি মামলা নথিভুক্ত করার আগে প্রাথমিক অনুসন্ধান করা হয়। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ ছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য শোনা হয়। তিনি বলেন, বিএনপির নিরীহ কোন কর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়নি। নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ সাপেক্ষে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *