সারাদেশ

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি

ডেস্ক রিপোর্ট: ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ভয়াবহতার শিকার হচ্ছেন বছরে ৩ কো‌টি ৮০ লাখ মানুষ। আর এতে সবচেয়ে স্বাস্থ‌্যঝুঁকিতে পড়ছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। ফলে পরোক্ষ ধূমপান থেকে নারী, শিশু ও বয়স্কদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন নারীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারী মৈত্রী।

শুক্রবার (৮ মার্চ) বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর সামনে নারী মৈত্রীর আয়োজিত এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এসব দাবি জানানো হয়।

এসময় আন্তর্জা‌তিক নারী দিবসের দিন থেকেই প‌রোক্ষ ধূমপা‌ন থেকে নারীস্বা‌স্থ‌্য সুরক্ষায় তামাকপণ্যে কর বৃ‌দ্ধিসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শ‌ক্তিশালী করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

বেসরকা‌রি স্বেচ্ছাসে‌বি সংস্থা নারী মৈত্রীর তৃণমূল পর্যায়ের নেত্রীরা‌ বলেন, ধূমপান না করেও সে‌টির ভয়াবহতার শিকার কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আর পরোক্ষ ধূমপানের কারণে গর্ভধারণ ক্ষমতা লোপ পাওয়া, কম ওজনের বা মৃত শিশু জন্মদান, অকাল সন্তান প্রসব, অনিয়মিত ঋতুস্রাব, জরায়ু ক্যান্সারসহ নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে নারীদের।

নেত্রীরা বলেন, আইন থাকলেও পাব‌লিক প্লে‌স এম‌নকি কর্মক্ষেত্রেও প্রতি‌নিয়ত প‌রোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন নারীরা। যত্রতত্র ধূমপা‌নের নে‌তিবাচক প্রভাব পড়ছে আগামী প্রজন্মের ওপর।

এটিকে জাতীয় সমস‌্যা হিসেবে চিহ্নিত করে জনস্বাস্থ‌্য রক্ষায় অবিলম্বে বিদ‌্যমান আইন প্রতিপালনে বাধ‌্যতার পাশাপা‌শি সকল ধরনের পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও গণপরিবহনে ধূমপান নি‌ষিদ্ধের পাশাপা‌শি ধূমপা‌নের জন্য সকল ধরনের নির্ধারিত স্থান (ডিএসএ) পুরোপুরি বন্ধের দা‌বি জানান তারা।

একইসাথে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করাসহ তামাকপ‌ণ্যে উচ্চ করহার আরোপসহ যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সকলেই জোর দাবি জানিয়েছেন। আসন্ন অর্থবছরে প্রতিটি স্তরের সিগারেটের প্যাকেটের খুচরা মূল্য প্রিমিয়াম ১৭০, উচ্চ ১৩০, মধ্যম ৮০ এবং নিম্ন ৬০ টাকা হারে বৃদ্ধির দাবিও তুলেছেন তারা।

নারী দিব‌স থেকেই শুরু হোক প্রস্তা‌বিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া অনুমোদনের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন। আর এই আইন পাশ হলেই নারীস্বাস্থ্যের সুরক্ষাসহ নি‌শ্চিত হবে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়‌ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার ভিশন।

বক্তারা জানান, বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব ১৮ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে। ফলে এসব তামাকের ব্যবহার প্রাণঘাতী ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর। ২০১৮ সালে, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রায় ১,৬১,০০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, অথচ একই সময়ে (২০১৭-১৮) তামাকখাত থেকে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ অর্জিত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। 

বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তৃনমূল নারী নেত্রীদের সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন নারী মৈত্রীর টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রজেক্ট এর প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর নাসরিন আকতার, মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন অফিসার আলফি শাহরীন, এডভোকেসি অফিসার মেহেদী হাসান, একাউন্ট অফিসার দেলোয়ার হোসেন এবং নারী মৈত্রী ভলেন্টিয়ার সালমা শান্তাসহ প্রমুখ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *