বিএনপির নেতা–কর্মীদের গ্রেফতারে উদ্বেগ প্রকাশ করল ইইউ
ডেস্ক রিপোর্ট: পূর্ব ঘটনার জের ধরে মসজিদে মাইকিং করে আশুলিয়ায় বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। এ সময় শিক্ষার্থীরাও এগিয়ে গেলে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত হয় ক্যাম্পাসের ১ নিরাপত্তাকর্মীসহ ৮ শিক্ষার্থী।
রোববার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার খাগানে চানগাঁও গ্রামবাসীর সাথে বেসরকারি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, সন্ধ্যায় হঠাৎ করে পাশের চানগাঁও এলাকার স্থানীয় লোকজন অতর্কিতভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে তারা ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে স্থানীয় চানগাঁও মসজিদে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘোষণা দেয়। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে স্থানীয়রা ঢুকতে পারেনি। পরে শিক্ষার্থীরা বাইরে বেরিয়ে বিক্ষোভ ও আন্দোলন শুরু করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে ও সড়কে টায়ারে আগুন জালিয়ে দেয়।
মাইকিং এর ভিডিও ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে পোস্ট দেয় শিক্ষার্থীরা। এতে করে আতংক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তবে এলাকায় এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আহত এক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে আসেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিভু রায় বলেন, মেহেদী হাসানকে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখা হয়েছে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, আমরা সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছিলাম। তখন হঠাৎ খবর আসে যে চানগাও এলাকা থেকে হামলা করা হয়েছে। তারা অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের ৭-৮ আহত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছে। বাকি ১ শিক্ষার্থীকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ স্থানে ফিরে গেছে।
আশুলিয়া ইউনিয়নের চাঁনগাও এলাকার (৭ নং ওয়ার্ড) ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যার পর চানগাও এলাকাও হঠাৎ করে কিছু দোকানপাট ভাংচুর শুরু করে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সাথে না পেরে এক পর্যায়ে মসজিদে মাইকিং করে এলাকাবাসী। শিক্ষার্থীরাই আগে হামলা চালিয়ে ১৫-২০ টি দোকান ভাংচুর করেছে। তাদের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এ হামলা চালিয়েছে তারা।
আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধারণা করছি পূর্বের হত্যাকান্ড ও ভাংচুরের ঘটনার জের ধরেই এলাকাবাসী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ অক্টোবর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাবিবুল হাসান অন্তর নামে এক শিক্ষার্থী মারধরের শিকার হয়ে ২ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে স্থানীয় বাজারের প্রায় দেড়শতাধিক দোকানপাটে ভাঙ্গচুর চালায়। তবে এ ঘটনায় মুল আসামী রাহাত নামে একজনকে গ্রেফতার করে ৩ নভেম্বর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।