চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ করার দাবি
ডেস্ক রিপোর্ট: আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ করার দাবিতে সেমিনার করেছে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে তারা এ দাবি জানিয়েছেন।
বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা বলেন, আজকে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে যৌক্তিক দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। আমাদের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আমরা আজকে এই সেমিনারের আয়োজন করেছি। সমাজের প্রত্যেকটা শ্রেণীপেশার মানুষেরা এই আন্দোলনের বিষয়ে অবগত রয়েছেন। চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যূনতম ৩৫ বছর (শর্ত সাপেক্ষে উন্মুক্ত) করা একেবারেই যৌক্তিক। বর্তমানে চাকরি প্রার্থীদের সাথে একটি বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে, এই বৈষম্য দূর করা আবশ্যক।
তারা আরও বলেন, আমরা আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের এই দাবি মেনে নিবেন। ৩৫ বয়সসীমা আন্দোলনটি সময়ের সাথে একটি যৌক্তিক আন্দোলন। কিন্তু, বিগত সরকার এই আন্দোলনকে নিয়ে অনেক তালবাহানা করেছে। বিশ্বের প্রায় দেশগুলোতে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে শুরু করে ৫০ বছর পর্যন্ত রয়েছে। অনেক দেশে আবার যেকোনো বয়সে আবেদন করা যায়। কোনো বয়সসীমা সেখানে নেই। একেবারেই উন্মুক্ত করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বাংলাদেশের সকল পর্যায়ে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আজ থেকে ৩৩ বছর আগে ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়। যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক। গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ২০১১ সালে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। কিন্তু, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি না করে সেটি ৩০ বছরেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়, যার কারণে দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এসময় সেমিনারে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, চাকরিতে আবেদন করতে কোনো বয়স থাকার দরকার নেই। চাকরি হবে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের যেখানে যেখানে বৈষম্য রয়েছে সেটি দূর করতে হবে। দেশকে বৈষম্যহীনভাবে গড়ে তুলতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা সাতটি দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলো হলো-
১. প্রথম ও ২য় শ্রেণি নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর করতে হবে। ২. ৩য় শ্রেণি ও ৪র্থ শ্রেণি নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের বয়সসীমা ৪০ বছর করতে হবে। ৩. সকল প্রকার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের বয়সসীমা উন্মুক্ত করতে হবে। ৪. সকল প্রকার স্বাস্থ্য, চিকিৎসা নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের বয়সসীমা উন্মুক্ত করতে হবে। ৫. সকল প্রকার আইসিটি নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের বয়সসীমা উন্মুক্ত করতে হবে। ৬. সকল প্রকার আইন (জেডিসি) নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের বয়সসীমা উন্মুক্ত করতে হবে। এছাড়া ৭. জরিপের মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদনের বয়সসীমা উন্মুক্ত করতে হবে।
এছাড়া বেসরকারি ব্যাংক বিমা সকল ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করার কথাও বলা হয়েছে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।