সারাদেশ

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায় হিযবুত তাহরীর

ডেস্ক রিপোর্ট: অন্যায়ভাবে হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে জানিয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে দলটি।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান হিযবুত তাহরীর সদস্য ইমতিয়াজ সেলিম ও আইনজীবী মেহদুল হাসান। এসময় লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আইনজীবী নুর মোহাম্মদ।

গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে আবেদনপত্র জমা দিয়েছে জানিয়ে আইনজীবী নুর মোহাম্মদ বলেন, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহরীর-কে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯-এর অধীনে দলটির কার্যক্রম ‘জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা বিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে বেআইনিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। অথচ ফ্যাসিবাদী সরকার এই ধরনের দাবির স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পেশ করতে পারেনি।

এই আইনজীবী বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সেনা অফিসারদেরকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাটি হাসিনার সহযোগিতায় ভারতীয় ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশের ক্ষেত্রে হিযবুত তাহরীর নিষ্ঠাবান ও সাহসী অবস্থানের কারণেই হাসিনা সরকার দলটিকে নিষিদ্ধ করে। দেশ এবং তার সাহসী সেনাবাহিনীর কল্যাণের কথা চিন্তা করে হিযবুত তাহরীর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সাহসীভাবে রুখে দাঁড়ায় এবং তাদের ষড়যন্ত্র প্রকাশ করতে ব্যাপকভাবে প্রচারপত্র বিতরণ, আলোচনা সভা, সমাবেশ ও মিছিলসহ ধারাবাহিক প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

হিযবুত তাহরীর-কে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে হাসিনা সরকার দলটির কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করে উল্লেখ করে নুর মোহাম্মদ বলেন, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর নিছক একটি প্রেস নোট’-জারির মাধ্যমে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এই ‘নিষেধাজ্ঞা-টি ছিল স্বৈরাচারী হাসিনার জারি করা নিষেধাজ্ঞা, যেটির কোন আইনগত ও সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। কারণ, সন্ত্রাসী আইনের অধীনে বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে হলে তা সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯-এর ১৮(১) ধারার অধীনে প্রয়োগযোগ্য হতে হবে।

তিনি বলেন, হাসিনা সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের উল্লিখিত ধারার অধীনে কোনো গেজেট বিজ্ঞপ্তিও জারি করেনি। অধিকন্তু, ২০০০ সালে বাংলাদেশে দলটির সূচনাকাল থেকে শুরু করে ২০০৯ সাল পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ হতে ‘জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা বিরোধী সংক্রান্ত বিষয়ে কখনও কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি কিংবা হিযবুত তাহরীর কর্মীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোন মামলা আদালতে প্রমাণিত হয়নি।

দলটির আইনজীবি বলেন, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলো।

হাসিনা সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেওয়ার কারণে দলটির অসংখ্য নেতাকর্মী ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং বহু ত্যাগ স্বীকার করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এসময় জামায়াতে ইসলামীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি দ্রুত কার্যকর করার কথা উল্লেখ করে নুর মোহাম্মদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ছিল স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের নিষেধাজ্ঞার সর্বশেষ শিকার, যেখানে আমরা ছিলাম প্রথম শিকার এবং গত ১৫- বছর ধরে আমরা অসহায়ভাবে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করছি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *