‘সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আজ বাংলাদেশকে গিলে খাচ্ছে’
ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতারা।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা এ ঘোষণা দেন।
সদস্য সাইদুর রহমান টেপা বলেন, এর মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে আমরা ধরে নেব তারা পদত্যাগ করেছেন।
জাপা চেয়ারম্যান-মহাসচিবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, চরম উত্তেজনা বিরোধিতার জন্য বিরোধী দলেই আছি: চুন্নু শপথ নিতে সংসদ ভবনে জিএম কাদের এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য সহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল আলম রুবেলসহ সিনিয়র নেতারা।
এদিকে বাধ্য হয়ে নির্বাচন থেকে সরে আসা জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থীরা গণমাধ্যমে এক বিবৃতি পাঠিয়েছেন।
সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল আপনারা জেনেছেন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আর কোন বিকল্প ছিলো না। তবে সকল দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে পারলে ভাল হতো। আপনারা দেখেছেন যে, এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। জাতীয় পার্টির যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তার সাথে প্রার্থী মনোনয়ন প্রশ্নে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ায় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন।
কিন্তু তিনি পার্টির মধ্যে বিভক্তি করতে দেননি। অথচ পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গত ৪ বছরে তার সাংগঠনিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক
অদুরদশির্তা এবং অদক্ষতার কারণে জাতীয় পার্টিকে ধংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পাটির প্রার্থীদের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা করা এবং তাদের এক প্রকার পথে বসিয়ে দেওয়ার জন্য পার্টির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। সরকারের কাছে ধর্ণা দিয়ে ২৬ টি আসনে সমঝোতা করে সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, জাতীয় পার্টিকে এতটা বির্পযয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব পদত্যাগ করে তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। কিন্তু সে বোধদয়ও তাদের হয়নি। আমরা পার্টির সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের মনোভাব জানতে পেরেছি। তারা পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অপসারন দেখতে চান।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এমতাবস্থায় জাতীয় পার্টিকে রক্ষা করা এবং পার্টির ঐক্য বজায় রাখার জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জিএম কাদের এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর তারা তাদের পদ থেকে অপসারিত বলে বিবেচিত হবেন। এই পর্যায়ে গঠনতান্ত্রিক ভাবে পার্টিতে একজন ভারপ্রাপ্ত/নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ করে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে ।
এখন একান্ত প্রয়োজনে কিছু রদবদল ব্যাতিত পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য পদে অধিষ্ঠিত নেতৃবৃন্দ স্বপদে বহাল থাকবেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মনোনয়ন দানে যে সব অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারী হয়েছে এবং ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। জাতীয় পার্টির যে সব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন- আগামীতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এই মূহুর্তে পার্টিকে সুসংগঠিত করে একটি জাতীয় সম্মেলন করাই হবে আমাদের প্রধান কাজ।
এর আগে সকাল থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য সহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল আলম রুবেলসহ সিনিয়র নেতারা অফিসে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পুলিশের বাধা টপকে বনানী কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন তারা। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
সিনিয়র নেতাদের মধ্যে আরও ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, ইমরান হোসেন মিয়া, ঢাকা উত্তর মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পাঠান।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।