৯৯৯ এ কল: বারান্দায় ঝুলতে থাকা তরুণ উদ্ধার
ডেস্ক রিপোর্ট: দেশজুরে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার উদ্যেশে ছেড়ে যাচ্ছে অধিকাংশ গাড়ি। সেই সঙ্গে যাত্রীদের মোটামুটি ভালই চাপ আছে বলে জানান পরিবহন সংশ্লিষ্ঠরা।
সোমবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দূরপাল্লার অধিকাংশ কাউন্টার খোলা রয়েছে। যাত্রীর আনাগোনাও আছে বেশ ভালই। পরিবহন শ্রমিকরা হাঁকডাক ছেড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার যাত্রী ডাকছেন। কাউন্টার গুলোর ভেতরে গাড়ির অপেক্ষায় যাত্রীদের বসে থাকতেও দেখা গেছে।
এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা জানায়, আগের মতন শিডিউইল মেনে গাড়ি না চললেও কয়েকজন যাত্রী পেলেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে।
হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাকিবুল হাসান বার্তা ২৪ কে বলেন, আমাদের প্রথম টিপ সকাল ৮ টার সময় বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। ওই গাড়িতে ২৮ জন যাত্রী ছিল। আবার এখন (১২টা) একটা গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে এই গাড়িতে যাত্রী আছে ১৮ জন।
তিনি বলেন, অন্যদিকের যাত্রী খুব একটা না থাকলেও বরিশাল পিরোজপুর রোডে যাত্রী আছে মোটামুটি ভালই।
শ্যামলী এসপি পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার শামসুল আলম বলেন, সকাল থেকে আমাদের দুই তিনটা গাড়ি ছেড়ে গেছে। আমাদের প্রথম টিপে যাত্রী ছিল না বলেলেই চলে। এই সাইদাবাদ কাউন্টার থেকে মাত্র তিন জন যাত্রী পেয়েছি। সাধারণ সময়ে এই কাউন্টার থেকেই ১৫/ ২০জিন যাত্রী হয়।
এদিকে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনাল সরেজমিনে দেখা গেছে, টার্মিনালজুড়ে অধিকাংশ গাড়ি লাইন দিয়ে থরে থরে দাড়িয়ে রয়েছে। অধিকাংশ কাউন্টারই রয়েছে বন্ধ। তবে এনা ট্রান্সপোর্টে দুইটি কাউন্টার এবং এসআর ট্রাভেলসের একটি কাউন্টার খোলা থাকার চিত্র দেখা গেছে। এসআর এসআর ট্রাভেলস এর কাউন্টারে কোন যাত্রীও দেখা যায়নি তবে এনা ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারে বেশ কিছু যাত্রী বসে থাকতে দেখা গেছে।
এর আগে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রতিবাদে মহাখালীতে বাস মালিকদের পক্ষ থেকে এক সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ঘোষণা দেন যত বড় কর্মসূচি আসুক আমাদের গাড়ির চাকা সচল থাকবে। সে সময় সকল পরিবহন মালিক শ্রমিক তার সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করলেও সকাল হতেই মহাখালী টার্মিনালের চিত্র ছিল ভিন্ন। শুধুমাত্র এনা ট্রান্সপোর্ট এবং এসআর ট্রাভেলস বাদে কোন দূরপাল্লার পরিবহনের কাউন্টার পর্যন্ত খোলা হয় নি।
তবে সায়েদাবাদের চিত্র দেখে বোঝা যায় বাস মালিক সমিতির নির্দেশের পর সকল দূরপাল্লার বাস ছাড়া হচ্ছে সায়েদাবাদ বাস স্টান্ড থেকে।
গতকাল এনায়েত উল্যাহ বলেন, বিএনপি জামাত যখন কোন আন্দোলন করে তখনই তারা এই সন্ত্রসী কর্মকান্ড করে। তারা প্রধান টার্গেট করে পরিবহন। আমরা এই সন্ত্রাসি কর্মকান্ড মেনে নিবো না। পরিবহন মালিক শ্রমিক প্রমাণ করেছে তারা অবৈধ বিএনপি জামাতের কর্মসূচি মানে না।
বিএনপি জামায়াত উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাশকতা করে ক্ষমতা দখল করবে। আমরা সেটা আমরা মেনে নিবো না।
আমাদের দ্বায়িত্ব একটাই আমরা পরিবহন সচল রাখবো। এই সরকারের আমলে আমরা অনেক লাভবান হয়েছি তাহলে কি আমরা মাত্র কয়েকদিন লোকসানে গাড়ি চালাতে পারবো না? হ্যাঁ পারবো।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমাদের পরিবহনের ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। সুতরাং আমাদের কোন ভয় নেই। সামনে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসছে। যত বড় কর্মসূচিই আসুক আমাদের গাড়ির চাকা সচল থাকবে।
এদিকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বিএনপির পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর ৬ টা থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ শুরু হয়েছে। বিএনপির ডাকা এই অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্বতা জানিয়ে জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। আজ অবরোধের দ্বিতীয় দিন তবে রাজধানীর ভেতরে চলাচলকারী অধিকাংশ গাড়িই চলাচল করছে। অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে রাজধানীর সড়কে যান চলাচল।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।