ফেনীতে ঝিমিয়ে পড়েছে ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম’
ডেস্ক রিপোর্ট: ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আগত রোগীদের বাড়তি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এক বছর আগে চালু হয়েছিল বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নামে বিশেষ সেবা কার্যক্রম। এক বছর অতিবাহিত হতেই ঝিমিয়ে পড়েছে প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে চিকিৎসা সেবার নেওয়ার এ বিশেষ সেবা কার্যক্রম।
হাসপাতালের দেয়া তথ্যমতে গত এক বছরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করছেন প্রায় ১২ হাজার রোগী। গত মার্চ মাসে সেবা নিয়েছেন ১ হাহার ৪১৭ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১ হাজার ২০২ জন এবং জানুয়ারি মাসে মাত্র ৯৭০ জন চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, পালাক্রমে প্রতিদিন ৩ জন চিকিৎসক এ সেবা প্রদান করে থাকেন। যাদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ, উচ্চতর ডিগ্রিধারী ও জেনারেল প্রাকটিশনার (মেডিসিন, মা ও শিশু রোগ) রোগী দেখে থাকেন। প্রতিদিন সেবা গ্রহীতা রোগীর সংখ্যা গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন হয় বলে জানিয়েছেন রেজিষ্ট্রেশন কাজে নিয়োজিত ফরহাদ হোসেন৷
চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও যেখানে প্রতিদিন হাসপাতালের বহিঃবিভাগে সহস্রাধিকেরও বেশি রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন সেখানে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগীর উপস্থিতির অন্যতম কারণ হিসেবে সেবা সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণাকে দায় করেছেন অনেকে।
সেবা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন অনেকে। ফেনীর আলোকদিয়া থেকে গর্ভবতী স্ত্রীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে নিয়ে আসেন মকবুল আহমেদ। তিনি বলেন, সকাল বেলায় ৫ টাকা ফি দিয়ে ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়া মুশকিল। অনেক রোগী থাকায় ডাক্তাররাও ভালোভাবে রোগী দেখেন না। ৪০০ টাকা ভিজিট গেলেও বিকেলে প্রাইভেট হাসপাতালের মতো করে সময় নিয়ে ডাক্তার রোগী দেখেন।
ফেনী পৌরসভার বাসিন্দা লিজা আক্তার বলেন, গত ৫ থেকে ৬ দিন জ্বরে ভুগছিলাম। জরুরী বিভাগে গেলে জানতে পারি বিকেলে ডাক্তাররা হাসপাতালে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখেন। তাই ২০০ টাকা দিয়ে মেডিকেল অফিসারকে দেখিয়েছি।
সাহাব উদ্দিন নামে এক রোগী বলেন, সরকারি হাসপাতালে কম ভিজিটে রোগী দেখার এ সুযোগ যেন সবাই পায় এ জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রচার-প্রচারণায় আরও বেশি উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো.আসিফ ইকবাল বলেন, প্রতিদিন ২ থেকে ৩ জন চিকিৎসক বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত থাকেন। মানুষজন একবারেই কম সেটি ভুল। তবে প্রচার-প্রচারণা হলেও আরও অনেক মানুষ এ সেবা নিতে পারবেন।
এ চিকিৎসক আরও বলেন, বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় মানুষজন সরকার নির্ধারিত ফি বা ভিজিট দিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালের মতো করে সেবা নিতে পারছেন এতে রোগীদেরই লাভ। যেহেতু এটি সরকারি একটি প্রকল্প আমরা অবশ্যই বিধি মেনে এটি চালু রাখবো। তবে এ বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য আলাদা বরাদ্দ পাওয়া গেলে এ সেবা আরও বাড়বে বলে মতামর দেন তিনি।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।