সারাদেশ

টাঙ্গাইলে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতে পাচারের শিকার ২০ নারী-শিশুকে উদ্ধারের পর স্বদেশ প্রত্যাবাসন আইনে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে তাদেরকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ভাল কাজের প্রলোভনে দালালের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সময় এরা দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারতে পাচার হয়েছিল। বাংলাদেশে ফেরার পর আইনি সহায়তায় তাদেরকে ৩টি মানবাধিকার সংস্থা গ্রহণ করেছে। সীমান্তে হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, পুলিশ, বিজিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।

এদিকে পাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন সংগঠন কাজ করলেও কোনোভাবে থামছে না এসব কার্যক্রম। তবে পাচার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে সচেতনতায় কমাতে পারে পাচার কার্যক্রম। আর ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের আইনি সহায়তা নিয়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চোখে-মুখে ঘরে ফেরার আনন্দ বলে দেয় বন্দী জীবন থেকে তাদের মুক্তির স্বাদ। কেউ প্রেমিকের প্রতারণা, কেউ উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন আবার কেউ ভালো কাজের আশায় দালালের হাত ধরে পাড়ি জমায় ভারতে। তবে ভারতে গিয়ে বুঝতে পায় তারা সবাই নিজের অজান্তে বিক্রি হয়েছে দালালের হাতে। কিন্তু যখন বোঝে তখন আর কিছু করার উপায় থাকে না। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নানান ঝুঁকিমূলক ও অসামাজিক কাজে তাদের ব্যবহার করা করে পাচারকারীরা। ভাগ্যের জোরে কিছু সংখ্যক ফিরে আসলেও অনেকের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা রয়েছে অজানা।

পাচার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, উদ্ধারের সংখ্যা মাত্র ৩০ শতাংশ। পাচারকারীদের বেশি টার্গেট থাকে অসহায় পরিবার ও স্বামীহীন নারীদের ওপর।  এমন পাচারের শিকার ২০ নারী-শিশুকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠায় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তারা। পাচারের শিকার এসব বাংলাদেশিদের এক এক জনের জীবনে রয়েছে লোমহর্ষক কাহিনি।

ফেরত আসা কিশোরী রহিমা (ছদ্মনাম) জানান, ডান্সার বানানোর কথা বলে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে প্রেমিক। পরে বুঝতে পেরে সে পুলিশের হাতে ধরা দেয়। বন্দিদশা থেকে ফেরত আসতে পারবে, এটা সে ভাবতেও পারেনি। এ ভুল পথে আর পা বাড়াবে না সে।

ফেরত আসা নারী মমতাজ (ছদ্মনাম) জানান, সে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে। কিন্তু মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বাবা মামলা করেন। পরে সে জেল থেকে বের হলে মেয়েটির বাবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভারতে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে তাকে পুলিশ আটক করেছিল। দুই বছর পর সে বাড়ি ফিরছে।

ফেরত আসা এক কিশোরীর অভিভাবক বলেন, মেয়েকে ফিরে পেয়ে তিনি খুশি। তবে পাচারের ঘটনায় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানায়। কিন্তু টাকা দিতে পারেনি বলে সহযোগিতা পায়নি।

মানবাধিকার সংস্থা জাস্টিস এন্ড কেয়ারের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার এস,এস, মুহিত হোসেন জানান, ফেরত আসা ২০ জনের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও ১৭ জন, নারী-শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনকে জনকে জাস্টিস এন্ড কেয়ার, ৮ জনকে রাইটস যশোর ও ৫ জনকে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি গ্রহণ করেছে আইনি সহায়তা দিতে।

পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের পরিচালক বিদোষ চন্দ্র বর্মন জানান, পাচার প্রতিরোধে সরকার বিভিন্নভাবে কাজ করছে। তবে সবার সহযোগিতায় পাচার প্রতিরোধ সম্ভব।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *