সারাদেশ

বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ, ১৪ দিনে এলো ১৬৪ কোটি ডলার

ডেস্ক রিপোর্ট: কোরবানি ঈদের প্রথম দিনেই চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় পূরণ করে ফেলেছেন লালবাগের পোস্তায় কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাতের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার ৮০ ভাগ চামড়া কিনে লবণ লাগিয়েছেন। ফলে ঈদের দ্বিতীয় দিনে আড়তের শ্রমিকদের কোনো ব্যস্ততা নেই।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে চামড়া সংগ্রহের লক্ষমাত্রা পূরণের বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন কাঁচা চামড়া কেনা ও লবণ লাগানো ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাউড এন্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএইচএসএমএ)’র চেয়ারম্যান আফতাব খান।

তিনি বলেন, আমাদের পোস্তার ব্যবসায়ীদের এবারের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো এক লাখের কাছাকাছি চামড়া সংগ্রহ করা। আমরা সেই অনুযায়ী লবণ কিনে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমাদের পোস্তার আড়ৎদার, ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতারা মিলে ঈদের প্রথম দিনেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮০ ভাগ চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। রাত ৯টার মধ্যেই চামড়া কেনা শেষ হয়। এমন কি গতকাল রাতের মধ্যেই লবণ লাগানো হয়েছে। আজ দ্বিতীয় দিনে ১৫ ভাগ ও আগামীকাল বুধবার ঈদের তৃতীয় দিনে ৫ ভাগ সংগ্রহ করা হবে।

আফতাব খান আরও বলেন, ঢাকার বেশিরভাগ চামড়া আমাদের কাছে এসেছে। কিছু চামড়া হেমায়েতপুরেও লবণজাত করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি চামড়া লবণজাত করেছেন ট্যানারি মালিকরা। ফলে ঢাকায় চামড়া নষ্ট হয়নি। গতকাল চামড়ার যে দাম ছিলো তার তুলনায় আজও ভালো দাম পাচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

সংগঠনটির সভাপতির দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে পোস্তার বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা যায়, কোনো আড়তেই চামড়ায় লবণ লাগানোর ব্যস্ততা নেই। প্রায় প্রতিটি আড়তেই লোকজন শূন্য। কোনো কোনো আড়তে চামড়ার পাশেই শ্রমিকদের ঘুমাতে দেখা গেছে।

অতীতে ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চামড়া কেনাবেচার ব্যস্ততা দেখা গেলেও এবার একাবারে বিপরীত চিত্র। চামড়া ঘিরে কোনো ব্যস্ততা নেই। দু একটি ট্রাক আসলেও চামড়া দিয়ে চলে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনে ভালো দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে। গতকাল যে চামড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ সেই চামড়ায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। আবার চামড়ার মান থাকলে আরও ভালো দাম দিয়ে কিনছেন ব্যবসায়ীরা।

ঈদের দ্বিতীয় দিনে পোস্তায় ব্যস্ততা না থাকার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর হাজারীবাগেও এবার চামড়া লবণজাত কারার সুযোগ পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পোস্তায় জায়গার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাজারীবাগে পুরনো ট্যানারির কারখানাগুলোতে চামড়ায় লবণজাত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাঁচা চামড়া ব্যবসাীদের এই নেতা বলেন, পোস্তায় আগের মতো ব্যবসায়ীরা নেই। নানা সংকটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী  এই খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এমন কি পোস্তা এলাকা যে গোডাউনগুলো ছিলো সেগুলো এখন আগের মতো নেই।  কারণ একজন চামড়া ব্যবসায়ী যে গোডাউনের ভাড়া দিতেন ৪০ হাজার টাকা এখন সেই একই গোডাউন কয়েকগুণ বেশিতে ভাড়া নিয়েছেন প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক ব্যবসায়ী এখন চামড়া কিনতে পারেন না। ফলে আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম হাজারীবাগে পুরনো ট্যানারির কারখানাগুলোতে চামড়ায় লবণজাত করার সুযোগ দিতে। আবেদনের প্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিসিক আমাদের সেই অনুমতি দেয়। ফলে অনেক ব্যবসায়ী এখন হাজারীবাগেও চাড়মায় লবণজাত করেছেন। সল্প সময়ের জন্য অনুমতি পাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী চাহিদা মতো চামড়া সংগ্রহ করতে পারায় সহজেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।

পোস্তার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের সংগ্রহ করা চামড়া লবণজাত করার পরে কয়েকদিন তারা গুদামজাত করবেন। ঈদের পঞ্চম দিন থেকে তারা লবণজাত করা এই চামড়া ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি শুরু করবেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *