আন্তর্জাতিক

গাজার ধ্বংসস্তূপ সরাতে লাগবে যাবে ১৫ বছর : জাতিসংঘ

ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরায়েলের আগ্রাসী হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। এই ধ্বংসস্তূপ সরাতেই ১৫ বছর লেগে যাবে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থানবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।

সোমবার (১৫ জুলাই) ইউএনআরডব্লিউএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাজা থেকে প্রায় চার কোটি টন ধ্বংসস্তূপ সরাতে হবে।

জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক প্রকল্পের (ইউএনইপি) একটি মূল্যায়নের বরাত দিয়ে সংস্থাটি এ পরিসংখ্যান দিয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘এই টন টন ধ্বংসাবশেষ গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য প্রাণঘাতী হুমকিতে পরিণত হয়েছে। কারণ, ওই ধ্বংসাবশেষে অবিস্ফোরিত অস্ত্র এবং ক্ষতিকর পদার্থ থাকতে পারে।’

ইউএনডিপির আরব দেশগুলোর আঞ্চলিক ব্যুরোর পরিচালক আবদুল্লাহ আল-দারদারি বলেছেন, ‘গত প্রায় ৪০ বছরে গাজায় মানব উন্নয়নের জন্য যত বিনিয়োগ করা হয়েছিল, তার সবই জলে ভেসে গেছে। আমরা বলতে গেলে ১৯৮০–এর দশকে ফিরে গেছি।’

গাজার ধ্বংসাবশেষ সরাতে শতাধিক ট্রাক এবং ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএনইপি বলেছে, কিছু ধ্বংসাবশেষের ভেতর মারাত্মক বিষাক্ত খনিজ অ্যাসবেস্টস রয়েছে; যা ক্যানসারসহ ফুসফুসের নানা রোগের সৃষ্টি করে।

এ ছাড়াও হামলায় ধসে পড়া ভবনগুলোর পাহাড়সমান ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মৃতদেহ চাপা পড়ে আছে। সেগুলো পচে-গলে নানা দূষণ ছড়াচ্ছে।

এর আগে ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর প্রায় ২৪ লাখ টন ধ্বংসাবশেষ সরাতে হয়।

ইউএনইপি হিসাব করে বলেছে, ২০০৮ সাল থেকে গাজায় নানা যুদ্ধে যে পরিমাণ ধ্বংসাবশেষের সৃষ্টি হয়েছিল, এবারের যুদ্ধে ওই সব ধ্বংসাবশেষের চেয়ে ১৩ গুণ বেশি জঞ্জালের সৃষ্টি হয়েছে।

গত মাসে ইসরায়েলের সামরিক রেডিওতে সেনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল, গত বছর ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৫০ হাজার বোমা নিক্ষেপ করেছে। ওই বোমাগুলোর মধ্যে দুই থেকে তিন হাজার বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

গত মে মাসে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) থেকে দেওয়া এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধে ধ্বংস হওয়া বাড়িগুলো বিনির্মাণে করতে ২০৪০ সাল লেগে যাবে। খরচ হবে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

সে সময় ইউএনডিপির আরব দেশগুলোর আঞ্চলিক ব্যুরোর পরিচালক আবদুল্লাহ আল-দারদারি বলেছিলেন, ‘আমরা ১৯৪৫ সালের পর এ রকমটা আর দেখিনি।’

গাজায় যে পরিমাণ ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তাতে ফিলিস্তিনি এই উপত্যকাটি প্রায় ৪০ বছর পিছিয়ে গেছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *