ক্ষেতলাল

ক্ষেতলালে সেচ পাম্প মালিকের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট:

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে হেরাকুলা শাখারুঞ্জ এলাকার দীর্ঘ দশ বছর যাবত ডিজেল চালিত সেলো মেশিন দিয়ে সেচ দিত ওই এলাকার কৃষকরা। খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে সেচ পরিচালনা করতে গেলে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠে গাজিউল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এনিয়ে ভুক্তভোগি কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ।

জানাগেছে, বর্তমান সরকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে ভর্তুকীর মাধ্যমে স্বল্প খরচে প্রতিটি এলাকায় কৃষকের নিজ জমিতে নির্দিষ্ট পরিমান দূরত্বে গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিচ্ছেন। এজন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের অফিসে নলকূপ স্থাপনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয় কৃষকদের। আবেদন করার পর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শনের পর তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা সেচ কমিটির কাছে দাখিল করার নিয়ম রয়েছে।

সেচ কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আফতাবুজ্জামান আল ইমরান এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিএডিসি অফিসের ক্ষেতলাল উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ) ও সদস্য হিসেবে রয়েছেন আরো ৫ জন সরকারি কর্মকর্তা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে কৃষকদের পক্ষে সম্পদ হোসেন নামের একজন ব্যক্তি সাধারণ মানুষের পক্ষে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করেন৷ কিন্তু এতেই বাধে বিপত্তি। পার্শ্ববর্তী গভীর নলকূপের মালিক হয়ে এতে বাদী হোন। তিনি তার গভীর নলকূপের দূরত্ব নিয়ে আদালতে একটি মামলা করলেও সেটি আদালত না মঞ্জুর করেন। তিনি বলেন প্রশাসন আমার হাতের মুঠোয়। দেখি কে তোদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়৷সম্পদ চৌধুরীকে কোনরকম বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া যাবে না। এর জন্য আমি ধারাবাহিক মামলা করব৷ যত টাকা লাগে লাগুক, তবুও তোদের বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে দেবনা৷ ভুক্তভোগী কৃষকরা শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদয় অবগতি হন ৷ 

চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ক্ষেতলাল উপজেলায় হেরাকুলা শাখারুজ এলাকার কৃষক স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তদন্তপূর্বক আবেদন করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষেতলাল অফিসে।

উপজেলার হেরাকুলা চৌধুরীপাড়ার গ্রামের জুলফিকার আলী চৌধুরীর ছেলে সম্পদ চৌধুরী জানান, আমার হেরাকুলা মৌজার, ১২১ জে,এল, ৬১০১৯ দাগে ২০১৪ সালের যথানিয়মে কৃষকের চাহিদা মাফিক নলকূপ (সেচ) স্থাপন করা হয়৷ শাখারুঞ্জ গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন চৌধরীর এর  ছেলে গাজিউল হক চৌধুরী গভীর নলকূপের ২০০ গজ দূরত্বে সম্পদ চৌধুরীর ডিজেল চালিত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়  এখন ওরা বহুদিন থেকে বিদ‍্যুৎ সংযোগও পাচ্ছিনা। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় দীর্ঘ ১০ বছর যাবত সম্পদ চৌধুরীর গভীর নলকূপ সেলো ইঞ্জিল ডিজেল চালিত ১৮০ বিঘা জমিতে দিয়ে সেচ দিয়ে আসছেন। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেও আমাদের এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ার ফলে সময় মতো জমিতে সেচ দিতে পারছি না গভীর নলকূপটি বিদ্যুতের আওতায় আসলে আমরা জমিতে তিন ফসলি চাষাবাদ করতে পারবো।

তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষেতলাল উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ) মুনছুর রহমান বলেন, সেচ কমিটির মিটিংয়ে এব‍্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কৃষকরা যাতে হয়রানি না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান জানান, সেচ কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে। উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করে দুটি অভিযোগ দিয়েছে। কমিটি সিদ্ধান্ত জানালে আমরা উভয়পক্ষকে জানিয়ে দিব।

মোঃ আমানুল্লাহ আমান।

 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় ডেইলি জয়পুরহাট-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *