মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে বাংলাদেশি কৃষক গুলিবিদ্ধ
ডেস্ক রিপোর্ট: শীতের রুক্ষ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিস্তা নদীও তার রূপ পরিবর্তন করেছে। জলস্রোত কমে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে তিস্তা। আর সেই তিস্তার বুকে জেগে ওঠা ধু-ধু বালুচরেই স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা, ফলিয়েছেন সবুজ ফসল। তাদের শ্রম ও ঘামে তিস্তার বালুচর এখন সবুজ অরণ্য। পতিত এসব চরে ফলছে চিনা বাদাম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, পুঁইশাক, লাউশাকসহ রবি মৌসুমের নানা ধরণের ফসল। নদীভিত্তিক এই অর্থনৈতিক পরিবর্তনে বদলে যাচ্ছে হাজারো অসহায় কৃষকের ভাগ্য।
রংপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন চরে গত বছরে ৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে রবি শস্যের আবাদ হলেও এবার আরো ৫০০ হেক্টরের বেশি নতুন জমি যোগ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী বেষ্টিত কাউনিয়া, পীরগাছা, গংগাচড়া বিভিন্ন অঞ্চলে বালুর উপর পলি মাটির স্তর পড়েছে। ফলে এসব চর হয়ে উঠেছে উর্বর। আর সেখানে কৃষকদের ভালোবাসার ছোঁয়া লাগতেই ফলছে নানা ফসল।
তিস্তার চরে রবি শস্য চাষ কাউনিয়া ঢুষমারা চর এলাকার কৃষক মতিন মিয়ার বলেন, প্রায় আড়াই বিঘা জমির উপর পেঁয়াজ চাষ করছি। ফলনও বেশ ভাল হইছে। এখন শুধু ফসল তুলে ঘরে নেওয়ার অপেক্ষায় আছি।
গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর অঞ্চলের কৃষক আমির আলী বলেন, ধান গম আবাদ করলে যে লাভ হয় তার চেয়ে দ্বিগুণ লাভ হয় রবি শস্যে। বিশেষ করে ভুট্টা চাষে লাভ বেশি। তাই জমিতে ভুট্টা চাষ করছি। বিঘা প্রতি ভুট্টা চাষে ব্যয় হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর ভুট্টা বিক্রি করা যায় ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফলে বেশ বড় অংকের লাভ হবার সম্ভাবনা আছে।
মহিপুর চরাঞ্চলের আরেক কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, ৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করছি। চরে পলিমাটির কারণে স্বল্প ব্যয়ে মিষ্টি কুমড়ার গাছ ভালো হয়। ক্ষেতে কোন রোগ বালাই না হইলে ফলন ভালো হইবে। মিষ্টি কুমড়া দিয়া লাভবান হবার পামু।
রংপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (কৃষিবিদ) রিয়াজ উদ্দিন বলেন, তিস্তা নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় জেগে ওঠা ছোট বড় চরে রবি শস্য চাষ করে নিঃস্ব কৃষক পরিবারগুলো এখন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। এসব চাষীদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। গতবার আমন ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় যেসব জমি পতিত ছিল সেগুলো আগাম জাতের রবি শস্য চাষ করতে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।