সারাদেশ

‘প্রবাসীদের প্রতি সরকার উদাসীন’

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের বৈদেশিক সম্পদ অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস হলো রেমিট্যান্স। প্রবাসীদের পাঠানো ডলারেই চলছে দেশের অর্থনীতি। তবে সেই প্রবাসীদের প্রতি সরকার উদাসীন।

রোববার (১০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়, প্রবাসীদের সম্ভাবনা সংকট ও সুরক্ষা শীর্ষক বিষয় নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।

বক্তারা বলেন, রেমিট্যান্স হলো দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি এবং উন্নয়নের ভিত্তি, স্বপ্নের সোনালি সোপান ও অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বৈদেশিক সম্পদ অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস হলো রেমিট্যান্স। তাদের আনা ডলারেই চলছে দেশের অর্থনীতি। তবে সেই প্রবাসীদের প্রতি সরকার উদাসীন।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী হিসেবে অবস্থান করছেন, যদিও বেসরকারি হিসেবে প্রায় দুই কোটি। যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ শতাংশ। কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা, জীবন ও জীবিকার তাগিদে, উচ্চশিক্ষা ও উন্নত জীবনযাপনের লক্ষ্যে বিপুল সংখ্যক এই বাংলাদেশি নাগরিক তাদের শ্রম ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে উপার্জিত বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক অর্থ বাংলাদেশে প্রেরণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বিদায়ী ২০২৩ সালে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ১৯০ কোটি (২১.৯০ বিলিয়ন) ডলার। ২০২২ সালে এসেছিল ২ হাজার ১৩০ কোটি ডলার। এর মানে ২০২৩ সালে দেশে প্রবাসী আয় প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে।

তবে প্রবাসীদের কল্যাণে কোন কাজ করে না সরকার। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের থেকে যে সকল সুবিধা পাওয়ার কথা প্রবাসীদের তার ২০ ভাগও পাচ্ছেন না দেশের বাইরে বা বিদেশ গমনকৃত শ্রমিকরা।

বিদেশে মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিদের দেশে আনতে কোন প্রক্রিয়া নেই সরকারের ৷ বছরের পর বছর লাশগুলো পরে আছে বিদেশের মাটিতে। স্বজনদের আহাজারি, কান্নায় বুক ভাসছে বছরের পর বছর। কিন্তু সেদিকে নজর নেই সরকারের।

এসময় প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের মরদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে আনাসহ ১০ দফা দাবি জানান স্বজনরা।

অনুষ্ঠানে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, দেশে সরকার শুধু তামাশা করে। দেশে যাদের সত্যিকারের সম্মান পাওয়া জরুরি তারা পায় না। অর্থ সংকটে পড়লে প্রবাসীদের দাম বাড়ে, আর দেশে আসলেই ওই প্রবাসী হয়ে যায় ৩য় পর্যায়ের নাগরিক। প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার যতদিন আদায় হবে না ততদিন এ দেশ উন্নত হবে না। আমি প্রবাসীদের ১০ দফা দাবির সমর্থন জানিয়ে তা বাস্তবায়নের দাবি জানাই।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে কষ্ট করে ঘাম ঝরিয়ে টাকা পাঠায়, আর দেশের রাঘব বোয়ালরা সে টাকা বিদেশে পাচার করে। দিন শেষে তারাই বাহবা পায়। আর প্রবাসীরা ধুকে মরে। এটা কোন সভ্য দেশের পরিচয় হতে পারেনা। আমি জোর দাবি জানাই প্রবাসীদের অধিকার বাস্তবায়নের।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের স্বজনরা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *