সারাদেশ

রাজধানীতে পাহাড়ি প্রাণের উৎসব বৈসাবি পালিত

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীতে পাহাড়ি প্রাণের উৎসব বৈসাবি পালিত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ব্যাপক আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পাহাড়ি প্রাণের উৎসব বৈসাবি-২০২৪ পালিত হয়েছে। রাজধানীতে বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাহারি সাজে সজ্জিত হয়ে বৈসাবি উৎসবে অংশ নেয়। প্রতিবছর এ উৎসবের আয়োজনকারী হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ বৈসাবি উৎসব র‌্যালিতে অংশ নেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.মশিউর রহমান এনডিসি প্রধান অতিথি হিসেবে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে বর্ণিল সাজে সজ্জিত বৈসাবি র‌্যালিটি সকাল ৯ টায় ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র হতে শুরু হয়ে বেইলি রোড ও রমনা পার্কের ভিতর দিয়ে প্রদক্ষিণ করে পার্কের লেকের প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়। পরে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রমনা লেকের পানিতে নর-নারী ও শিশুরা ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে এ উৎসবের সমাপ্তি হয়। রাজধানীতে বসবাসরত তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এ আনন্দঘন র‌্যালিতে অংশ নেন।

বৈসাবি উৎসবের শোভাযাত্রার উদ্বোধক ও রমনার জলে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করার জন্য সকলে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাব। সেখানে কোনো হানাহানি বিদ্বেষ থাকবে না। শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ব এবং সেই একই লক্ষ্যে মূল ধারার সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পার্বত্যবাসীর উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান অব্যাহত থাকবে।

সচিব মশিউর রহমান এনডিসি আরও বলেন, পার্বত্য তিন জেলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করা এবং ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটানোসহ পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার একটি অন্যতম অংশ হলো এই ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। এখানে তিন পার্বত্য জেলার ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রতা ফুটে ওঠেছে। পার্বত্য অঞ্চলের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠান এবং সংস্কৃতির অবস্থাকে তুলে ধরতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজধানীতে প্রতি বছর ২৯শে চৈত্র পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ঐতিহ্যবাহী এ বৈসাবি উৎসবের আয়োজন করে আসছে।

সচিব মশিউর রহমান এনডিসি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানগুলো রাজধানীবাসীসহ সারাদেশে পরিচয় করিয়ে দিতেই ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রের প্রধান কাজ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগুলোর গবেষণা ও সংরক্ষণ করা। তিনি বলেন, ঢাকা ও দেশের অন্যান্য এলাকায় বসবাসরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায় পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবে এখানে সমবেত হয়। বৈসাবি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পার্বত্যবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধ ও আস্থা আরও সুদৃঢ় হচ্ছে- যার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান শান্তি অব্যাহত থাকবে এবং দেশের উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করছি। সচিব মো.মশিউর রহমান এনডিসি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈসাবি উৎসবের মাধ্যমে সকল পার্বত্যবাসী ও বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করেন।

এসময় অন্যান্যের মাঝে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ জিয়াউল করিম, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি বিধান ত্রিপুরা পিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার প্রধান তিনটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সমাজের বর্ষবরণ উৎসব হলো বৈসাবি। এটি তাদের প্রধান সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এই উৎসবটি ত্রিপুরাদের কাছে বৈসুব, বৈসু বা বাইসু, মারমাদের কাছে সাংগ্রাই এবং চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের কাছে বিজু নামে পরিচিত। বৈসাবি নামরকরণও করা হয়েছে এই তিনটি উৎসবের প্রথম অক্ষরগুলো নিয়ে।

বাড্ডায় অটোরিকশা গ্যারেজে আগুন

ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুল ইয়াসিন নগরে একটি অটোরিকশা গ্যারেজে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বাড্ডা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার বার্তা২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রোজিনা আক্তার বলেন, সাতারকুল ইয়াসিন নগরে অটোরিকশা গ্যারেজে আগুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে বাড্ডা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের চেষ্টায় ১টা ৪৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা আমরা জানতে পারি নাই। আর আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট আসলে বলা যাবে।

;

এবার ঈদ উৎসবে বান্দরবানে নেই পর্যটক, হতাশ ব্যবসায়ীরা

এবার ঈদ উৎসবে বান্দরবানে নেই পর্যটক, হতাশ ব্যবসায়ীরা

এবার ঈদ উৎসবের পরপরই পহেলা বৈশাখ দরজায় কড়া নাড়ছে। ঈদের একদিন পরেই আজ থেকে নানান আনুষ্ঠানিকতায় শুরু হতে যাচ্ছে পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি।

ঈদ ও পহেলা বৈশাখ কে কেন্দ্র করে পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিদের উৎসব উৎযাপন উপলক্ষে বেশ কয়েকদিনের সরকারি ছুটি যোগ হয়েছে। প্রতিবছর এমন ছুটিতে বান্দরবানের বিভিন্ন হোটেল, মোটেল ও রির্সোটগুলো বুকিং হতো ১০০ শতাংশ।

ঈদের ছুটি আর নৃগোষ্ঠীদের বর্ষবরণকে ঘিরে পাহাড়ি কন্যা হিসেবে পরিচিত পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সবসময় পর্যটকদের আনাগোনা ও পাহাড়ে মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকলেও এবার যেন তার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।

বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকরা সকল বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দীর্ঘ এই ছুটিতে পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।

বান্দরবান আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, রুমা ও থানচির ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানকে কেন্দ্র করে সকল হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট  বুকিং বাতিল হচ্ছে।  যদিও বা ঘটনাস্থল শহর এলাকা থেকে অনেক দূরে। এখানে তেমন কোনো প্রভাব নেই। শহর থেকে রুমা ৪৭ কিলোমিটার দূরে আর থানচির দূরত্ব ৮৫ কিলোমিটার।

দীর্ঘদিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ও পরবর্তীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লম্বা সময় ধরে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা, ফলে দীর্ঘ সময় পর পর্যটন ব্যবসায় লাভের আশা করছিলেন তারা।

হিল ভিউ আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক লিমন সরকার জানান, এবার ঈদ এবং বৈসাবি ঘিরে কোনো বুকিং নেই। বুকিং যা ছিল সবকটাই বাতিল হয়েছে।

বান্দরবানের নীলাচল রোডের প্রবেশ মুখে অবস্থিত আবাসিক হোটেল নীলাদ্রির ব্যবস্থাপক ইউনুস বিন কবির বলেন, আমরা এর আগে ঈদ পরবর্তী সময়ে কোন ছাড় না দিয়ে শতভাগ রুম বুকিং কনফার্ম করতাম। এবার সর্বোচ্চ ছাড় দিয়েও পর্যটক পাচ্ছি না। ভয়ে আতঙ্কে সকলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

বান্দরবানের চাঁদের গাড়ীর ড্রাইভার মিঠু সিকদার বলেন, পুরো রমজান মাস ধার কর্য করে চলেছি, ভেবেছিলাম ঈদের পর পর্যটক আসলে বাড়তি আয় রোজকার হবে। ঋণ শোধ করে ভালো চলতে পারবো। সবকিছু কেমন যেন হয়ে গেলো। আতঙ্কে কেউ পাহাড়ে বেড়াতে আসছে না।

বান্দরবান জীপ মাইক্রোবাস মালিক সময়বায় সমিতির লাইন পরিচালক মো.কামাল  জানান, পর্যটকদের সেবার জন্য বান্দরবানে প্রায় ৪ শতাধিক গাড়ী সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতো, তবে এবার বুকিং কম, আশানুরুপ ব্যবসা হবে না।

হোটেল থেকে বুকিং বাতিল করা একটি বেসরকারি  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক  শামিমুল ইসলামকে ফোন দিয়ে কারন জানত চাইলে তিনি বলেন, সবার আগে নিরাপত্তা।  আমরা পরিবার নিয়ে  নিরাপদ বোধ করছি না। তাই বুকিং বাতিল করেছি। বান্দরবান খুবই সুন্দর যায়গা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, সুযোগ পেলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাবো।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, বান্দরবানের সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে বড় ধরনের আতংকের কিছুই নেই। দীর্ঘ ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকরা অনায়াসে আসতে পারবে এবং ভ্রমন করতে পারবে। রুমা এবং থানচি ছাড়া বান্দরবানের অন্যান্য উপজেলাগুলোতে অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে এবং সেখানে ভ্রমণ করতে আমরা পর্যটকদের উৎসাহিত করছি।

 ট্যুরিস্ট পুলিশের বান্দরবান জোনের পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, আবাসিক হোটেল-মোটেলে খবর নিয়েছি, সবাই একই রকম কথা বলছে। কোনো বুকিং নেই। বুকিং যা ছিল তাও বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এবার কোনো পর্যটক থাকবে বলে মনে হয় না। এবার কেবল স্থানীয় লোকজনই শহরে কয়েকটি পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়াবে।

;

ঈদ আনন্দ পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে দিতে বিশেষ আয়োজন

ঈদ আনন্দ পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে দিতে বিশেষ আয়োজন

ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদের এই আনন্দ পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে দিতে ব্যতিক্রম এক র‍্যালির আয়োজন করেছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার পাইককান্দি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক তরুণ। তবে র‍্যালিতে সব বয়সের মানুষই স্বত:স্ফুর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করেছেন।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১০ টায় বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের পাইকান্দি যুব সংঘ নামের একটি সংগঠন এই ঈদ আনন্দ র‍্যালির আয়োজন করেন। র‍্যালিটি পাইককান্দি ঈদগাহ ময়দান থেকে শুরু হয়ে ৩ টি গ্রামের ৮ টি পাড়ার অলিতে গলিতে প্রদক্ষিণ করে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের আগেই একই রঙের টি-শার্ট পড়ে পাইকান্দি ঈদগাহ ময়দানে জড়ো হতে থাকে সবাই। বেলা ১০ টা বাজার সাথে সাথে র‍্যালিটি যাত্রা শুরু হয়। র‍্যালি শুরুর আগে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন র‍্যালিতে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তারপর শুরু হয় যাত্রা। র‍্যালিটিতে প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেলে চড়ে তারা গ্রামীণ আকাঁবাঁকা রাস্তা প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় নারী-পুরুষ সবাই র‍্যালিতে অংশগ্রহণকারিদের হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান।

পাইককান্দি গ্রামের বাসিন্দা মুন্নাফ মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, তাঁর বয়স ৬০ বছর। এই ৬০ বয়সে তিনি অনেক ঈদ কাটিয়েছেন। কিন্তু এবারের আয়োজনটা তাকে বেশ আনন্দ দিয়েছে। সে নিজেও র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানান।

র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করা যুবক নোমান, নিশান, তারিক বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রতিটি ঈদেই তাদের গ্রামে দুইদিনের ঈদ উৎসবের আয়োজন করা হয়। গ্রামীণ খেলাধোলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে গ্রামের সব বয়সের মানুষ খুবই আনন্দ পায়। এবার একটু ব্যতিক্রম আয়োজন ছিল।

ক্রিয়েটিভ আইডিয়াল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক খোন্দকার মাকসুদুর রহমান রনি বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় পাইককান্দি যুব সংঘটি কাজ করছে। গ্রামের প্রতিটি মানুষকে ঈদের অনাবিল আনন্দে সম্পৃক্ত করতে এই ব্যতিক্রম আয়োজন।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আকরাম খান ও রিশা শিল্পী গোষ্ঠীর পরিচালক গোলাম মোর্তবা রিজু বার্তা২৪.কমকে জানান, পাইককান্দি গ্রামের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। ঈদকে ঘিরে এই গ্রামের মানুষ নানা ধরণের আয়োজন করে থাকেন। যেটা আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে দেখে আসছি। এবারের আয়োজনে র‍্যালি ছিল। মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্নই ছিল র‍্যালিটির মূল উদ্দেশ্যে। যার কারণে র‍্যালিটিতে তরুণদের বেশি সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

র‍্যালিটির মূল আয়োজন বদিউজ্জামান ফারুক মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন উৎসবকে উপলক্ষ করে তারা নানা ধরণের আয়োজন করে থাকেন। তার মধ্যে র‍্যালি অন্যতম। আমিও ভেবেছিলাম এবার আমার নিজ গ্রামে ঈদকে কেন্দ্র করে সবার মাঝে একটি সৌহার্দ্য- সম্প্রীতি বজায়ে রাখার লক্ষ্যে পাড়ায় পাড়ায় ঈদের উৎসব ছড়িয়ে দিতে। সেই ভাবনা থেকেই আজকের এই আয়োজন। আগামিতে এটি আরো বড় আকারে করার চেষ্টা করবো।

;

হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ায় চিকিৎসককে মারধর

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ার অভিযোগে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসককে বেধড়ক পিটিয়েছে আহতের অনুসারীরা।

বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে পটিয়া পৌরসভার বেসরকারি পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই চিকিৎসকের নাম রক্তিম দাশ। তিনি শরীর ও মাথায় আঘাত পেয়েছেন।

এ ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্তলাল সেনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। তারা মারধরের শিকার চিকিৎসকসহ হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

এদিকে হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান এস এইচ খাদেমী ৫ জনকে এজাহারনামীয় ও ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পটিয়া থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সৈয়দকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন- মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ মুকুল, মোহাম্মদ টিপু, রফিক হাসান।

অভিযোগে বলা হয়, বুধবার রাত পৌনে ১১টায় পৌরসভা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ পলাশকে (৪২) আহত অবস্থায় পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. রক্তিম তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অপারেশন রুমে পাঠান। অপারেশন রুমে যেতে দেরি হওয়ায় ডা. রক্তিমকে হাসপাতালে মারধর করা হয় এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়।

ডা. রক্তিম দাশ বলেন, ওই রোগীর ঠোঁট এবং থুতনিতে কেটে গিয়ে রক্ত ঝরছিল। নার্সকে ফার্স্ট এইড দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করার নির্দেশ দিই। এরপর মাথায় আঘাত আছে কী না তা নিশ্চিত হতে এক্স-রে করতে পাঠায়। এক্সরে করে আসার পর সেলাইয়ের জন্য ওটিতে পাঠানো হয়। এসময় নিজের কক্ষে আরও চারজন রোগী দেখছিলাম। ওটিতে যেতে দেরি হচ্ছে কেন, সে অভিযোগ তুলে তারা আমাকে মারধর করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সৈয়দ দাবি করেন, চিকিৎসকের অবহেলার কারণে তর্ক হয়েছে। মারধর করা হয়নি।

সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, কয়েকজন রোগী দেখে ওটিতে যেতে চিকিৎসকের ১০ মিনিটের মতো দেরি হয়েছিল। তাই একজন পলিটিক্যাল লিডারের নেতৃত্বে চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত মোহাম্মদ সৈয়দ জানান, ডাক্তার অবহেলা করায় বাকবিতণ্ডা হয়েছে। মাধরের অভিযোগ সত্য নয়।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছৈয়দের নেতৃত্বে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *