সারাদেশ

ডলারের দর বাড়ানোর পর বেড়েছে রেমিট্যান্স

ডেস্ক রিপোর্ট: ডলারের দর বাড়ানোর পর বেড়েছে রেমিট্যান্স

ছবি : সংগৃহীত

ডলার সংকটের কারণে ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। পরিস্থিতি সামলাতে গত মাসে ডলারের আনুষ্ঠানিক দর এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে আমদানি খরচ আরও বেড়ে মানুষের ওপর চাপ বাড়ছে। তবে ডলারের দর বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে রেমিট্যান্স।

গত মে মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২২৫ কোটি ডলার দেশে এসেছে। গত ৪৬ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। আর এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার। আর পুরো অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার।

এক মাস বাকি থাকতেই আগের অর্থবছরের প্রায় সমান রেমিট্যান্স এসেছে। আর গত মে পর্যন্ত বেড়েছে ১৯৬ কোটি ডলার, যা ১০ শতাংশের বেশি। গত এপ্রিলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ২০৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন। আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার। সাধারণভাবে প্রতি বছর ঈদের আগে রেমিট্যান্স বেড়ে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের সঙ্গে ব্যাংকের দরে পার্থক্য অনেক কমেছে। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স বাড়াতে ব্যাংকগুলো অনেক চেষ্টা করছে। এতে করে রেমিট্যান্স বাড়ছে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলো এখন বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১১৮ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত দরে রেমিট্যান্স কিনছে। প্রবাসীর সুবিধাভোগী পাচ্ছেন ১১৭ টাকা। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনাসহ পাচ্ছেন ১২০ টাকার মতো।

আগে ১১০ টাকা দর নির্ধারিত থাকলেও ব্যাংকগুলো ১১৩-১১৫ টাকায় কিনত। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে দর বৃদ্ধির ফলে আমদানিতে খরচ আরও বেড়েছে। এমনিতেই ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির এ সময়ে মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে।

অর্থ পাচার ঠেকানোর কার্যকর উদ্যোগ না নিলে কতদিন রেমিট্যান্স বাড়বে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ব্যাংকারদের মনে। বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, দুর্নীতি বা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা দেশের বাইরে অর্থ নেয়, তাদের কাছে দর কোনো বিষয় না। সুতরাং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে অর্থ পাচার ও হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। তা না করে শুধু দর বাড়ালে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। এ ছাড়া রপ্তানি আয় সময় মতো দেশে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি ঋণসহ বিভিন্নভাবে রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গত ২৯ মে ১৮ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আগের মাস এপ্রিল শেষে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ২১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভের রেকর্ড হয় ২০২১ সালের আগস্টে। নানা উপায়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে।

মূলত বেসরকারি খাতে নতুন করে ঋণ না এসে, উল্টো আগের দায় শোধ করতে হচ্ছে। অনেকে আগের বিনিয়োগ ফেরত নিচ্ছে। এসব কারণে আর্থিক হিসাবে গত মার্চ পর্যন্ত ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি হয়েছে। গত অর্থবছর যেখানে ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগে সাধারণত সব সময় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা এখন থেকে কেবল নগদে

ছবি: সংগৃহীত

এখন থেকে একমাত্র মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে নগদ লিমিটেড প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ভাতা বিতরণ করবে।

রোববার (২ জুন) বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এবং নগদ লিমিটেডের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা নগদ একমাত্র মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে এই ভাতা বিতরণ করবে।

চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। আরও ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হক এবং ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তরুণ কান্তি শিকদার।

চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) স্মৃতি কর্মকার। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ডাক অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আবু তালেব। এবং নগদ লিমিটেডের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নগদের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম।

২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় সহায়তা করার জন্য এই ট্রাস্ট গঠনের উদ্যোগ নেন। যাত্রার শুরু থেকে বিভিন্ন শিক্ষা ক্ষেত্রে সহায়তার পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাতা বিতরণ করা হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে এই ভাতা বিতরণ করা হয় ডিজিটাল মাধ্যমেও। সে সময় থেকে গত বছর পর্যন্ত এই ভাতার উল্লেখযোগ্য একটা অংশ বিতরণ হতো নগদের মাধ্যমে। তবে এখানে অন্য মোবাইল আর্থিক সেবাও দায়িত্ব পালন করত। এবারের চুক্তির ফলে এমএফএসগুলোর মধ্যে নগদ এককভাবে এই ভাতা বিতরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা, প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ভাতা স্বচ্ছভাবে বিতরণ করায় নগদের সাফল্যের কারণেই ডাক বিভাগের এই ডিজিটাল সেবাকে একক দায়িত্ব দিয়েছেন তারা। এছাড়া একাধিক মোবাইল আর্থিক সেবাকে দায়িত্ব দিলে হিসাব রাখা জটিল হয় এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় না বলে এককভাবে এই প্রতিষ্ঠানটিকে তারা বেছে নিয়েছে।

নগদের সাথে এই চুক্তি করায় সন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছায় এই শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গড়ে উঠেছে। আমরা চাই, এই ট্রাস্ট যেভাবে অসহায় ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেয়, তা যেন স্বচ্ছভাবে বিতরণ করা হয়। বাংলাদেশ এখন সফলভাবে ডিজিটাল হয়েছে। সেজন্য আমরা সব সেবাই ডিজিটাল মাধ্যমে দিতে চাই। নগদ বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবা হিসেবে সরকারের সাথে মিলে ডিজিটালাইজেশনের কাজ করছে। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ভাতা সফলতা ও স্বচ্ছতার সাথে বিতরণ করছে। সেজন্যই নগদের ওপর আস্থা রেখেছে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট।

অনুষ্ঠানে নগদের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম বলেন, নগদ শুধু ব্যবসা করার জন্য কাজ করে না। সরকারের অংশীদার হিসেবে দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছি আমরা। তার অংশ হিসেবে ২৭টি মন্ত্রণালয়ের ভাতা সাফল্যের সাথে বিতরণ করছে নগদ। এবার প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ভাতা বিতরণের জন্য একমাত্র এমএফএস হিসেবে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা এই আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।

করোনার সময় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা বিতরণের মাধ্যমে নগদ ভাতা বিতরণের কাজ শুরু করে। এরপর সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা ও প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণে তাদের দারুণ স্বচ্ছতা ও সাফল্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে উৎসাহিত করেছে।

;

ইজিবাইকের জ্বালানি খরচ সব থেকে কম

ছবি: সংগৃহীত

ইজিবাইকে প্রতি কিলোমিটারে জ্বালানি খরচ হয় মাত্রা ৯৭ পয়সা আর প্রাইভেটকারে ৮.৬০ টাকা। বাসযাত্রায় খরচ হয় ২ টাকা ১৫ পয়সা। ইজিবাইকের প্রকৃত খরচ তার থেকেও কম বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

রোববার (২ জুন) সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট’-এর (ক্লিন) উদ্যোগে সম্পাদিত ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতে ইজিবাইকের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন দাবি করা হয়।

‘ক্লিন’-এর গবেষণা কর্মকর্তা সেজিনা খান বলেন, দুর্ঘটনাপ্রবণ হলেও ইজিবাইক অন্তত ট্রাক, লরি, বাস ও মোটরসাইকেলের তুলনায় নিরাপদ। বিগত সাত বছরের (২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল) দুর্ঘটনা প্রতিবেদন অনুসারে, মোট দুর্ঘটনার ৮.৬ শতাংশের জন্য ইজিবাইক দায়ী। অথচ ট্রাক ও ভারী যানবাহনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, ২৭ শতাংশ। মোটরসাইকেলের কারণে ২৪.৬ শতাংশ এবং বাসের কারণে ১৫.৭১ শতাংশ।

সেজিনা খান বলেন, শহরের সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের তুলনায় ইজিবাইক সব থেকে সবুজ যানবাহন। প্রতি কিলোমিটারে ইজিবাইক (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) ৪৯.৫৬ গ্রাম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ করে।

পক্ষান্তরে, একটি ১৫০০ সিসি প্রাইভেটকার থেকে নির্গত হয় ১৫৯.১৬ গ্রাম ও মাইক্রোবাস থেকে ১৯৮.০৩ গ্রাম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রায় ১৪ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) আছে। এর অধিকাংশই এদেশের স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি।

ইজিবাইক নির্মাণ, চালনা, মেরামত ও চার্জিংয়ের সঙ্গে প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষের কর্মসংস্থান যুক্ত হয়ে আছে। দেশে যথাযথ জনপরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামীণ ও শহুরে সাধারণ যাতায়াতকারীদের জন্য ইজিবাইক বা অটোরিকশা একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। প্রায় আড়াই কোটি মানুষ স্বল্প দূরত্বের যাতায়াতের জন্য ইজিবাইক ব্যবহার করে থাকেন।

গবেষণাটির অন্যতম গবেষক কানিজ রাবেয়া বলেন, এই যানবাহন দেশের অর্থনীতিতে প্রতিবছর প্রায় ৯৭ হাজার ৬শ ২৫ কোটি টাকার অবদান রাখে। এর মধ্যে ইজিবাইক নির্মাণখাত ৭ হাজার ৫শ কোটি, ব্যাটারি তৈরি ও বাজারজাতখাত ৮ হাজার কোটি টাকা এবং চালনা, মেরামত ও চার্জিংখাত ৮২ হাজার ১শ ২৫ কোটি টাকার ভূমিকা পালন করে।

‘ক্লিন’-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী বলেন, বিদ্যুৎখাতের অলস সক্ষমতা কমাতে ইজিবাইক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিবছর ইজিবাইকে চার্জ দিতে প্রায় ৪শ ৯০ কেটি ৫০ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ দরকার হয়, যা ৬শ ৫৯ মেগাওয়াটের সমান। বর্তমানে বিদ্যুৎখাতে ৬৪.২ শতাংশ অতিরিক্ত সক্ষমতা রয়েছে। ইজিবাইকগুলো এর অন্তত ৫.৬৪ শতাংশ কমানোয় ভূমিকা পালন করছে।

ইজিবাইক আরো নিরাপদ ও সবুজ করার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

;

সোনা গায়েব শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদের ইসলামী ব্যাংকের বক্তব্য

ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী ও তার কন্যা নাসিয়া মারজুকা যৌথ নামে ২০০৬ সাল থেকে ব্যাংকের একটি লকার ব্যবহার করে আসছেন। প্রতিটি লকার খোলার জন্য ২টি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক ও অপরটি ব্যাংকের নিকট থাকে। গ্রাহকের চাবি ব্যতীত শুধুমাত্র ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে কোনভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়। ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহককে তার লকারের মূল চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে একমাত্র গ্রাহক ব্যতীত ব্যাংকার বা অন্য কোন ব্যক্তির জানার সুযোগ নেই।

গত ৮ এপ্রিল উক্ত গ্রাহক লকার ব্যবহারের জন্য ব্যাংকে আসেন। ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রাহকের উপস্থিতিতে মাস্টার কি (চাবি) দিয়ে লকার আনলক করেন। পরবর্তীতে গ্রাহক যথারীতি তার নিকট রক্ষিত চাবি ব্যবহার করে পরিপূর্ণভাবে লকার খুলে তার কাজ শেষে লকার বন্ধ করে ব্যাংকারকে অবহিত করে চলে যান। যেহেতু লকার হোল্ডারের চাবি দিয়ে বন্ধ করা হয় সেহেতু লকার বন্ধ করার সময় নিয়ম মোতাবেক ব্যাংকের কারো উপস্থিত থাকার সুযোগ নেই। একমাত্র তিনিই তার লকার বন্ধ করতে পারেন।

উল্লেখ্য, লকার হোল্ডার লকার বন্ধ না করা পর্যন্ত তার চাবি বের করে আনা যায় না। গ্রাহক নির্দিষ্ট লকারে কী নিয়ে গেছেন বা রেখে গেছেন তা ব্যাংকের জানার সুযোগ নেই। গ্রাহক যাওয়ার সাথে সাথে ব্যাংক কর্মকর্তা লকার রুমের মূল ফটক নিয়ম মাফিক তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন।

গত ২৯ মে উক্ত লকার হোল্ডার তার লকার ব্যবহার করতে এসে তার গহনা খোয়া গেছে বলে জানান। অথচ এর আগে তিনি নিজে লকার বন্ধ করে চাবি নিয়ে গেছেন। তারপর লকার হোল্ডার একবার বলেন তার ৩০০ ভরি সোনা নাই, কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরি সোনা নাই এবং কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরির মধ্যে অর্ধেক পেয়েছেন, বাকি অর্ধেক পান নাই। তিনি এ ধরণের স্ববিরোধী বিভ্রান্তকর তথ্য প্রদান করেন। কিছুক্ষণ পর চট্টগ্রামের চকবাজার থানার পুলিশ ফোর্স সরেজমিন লকার রুম পরিদর্শন করেছেন।

ইতোমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তথ্যানুসন্ধান কমিটি গ্রঠন করেছে। এ কমিটির প্রদত্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

;

দক্ষ জনবল তৈরিতে মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই: এফবিসিসিআই

ছবি: সংগৃহীত

দেশের শিল্প কারখানায় দক্ষ জনশক্তির অভাবে মেশিনারিজ ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনায় অতিরিক্ত লোকবল দরকার হয়। অনেক সময় কারখানার মেশিনারিজ পরিচালনা করতে বিদেশ থেকে লোকবল আনতে হয়। বিনিময়ে উচ্চ বেতনের সম্মানি প্রদান করতে হয় তাদের। এছাড়া দক্ষতার অভাবে বিদেশে গিয়েও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর শ্রমিকদের তুলনায় কম বেতনে কাজ করতে হয় বাংলাদেশি শ্রমিকদের। এই অবস্থায় দেশে দক্ষ জনবল তৈরিতে উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর আরও জোর দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিক্ষা অন্তর্ভুক্তিসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়াগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

শনিবার (১ জুন) বিকেলে এফবিসিসিআইর দক্ষতা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম।

এসময় তিনি দেশের জনবলের দক্ষতা উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীগণ, সরকারি কর্মকর্তা, শিল্পমালিক, ব্যবসায়ীসহ স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এফবিসিসিআইতে একটি সেমিনার আয়োজনের পরামর্শ দেন।

এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, বাংলাদেশের বিপুল জনসংখ্যা দেশের জন্য সম্পদ। এ সম্পদকে কাজে লাগাতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন জরুরি।

তিনি বলেন, দক্ষ জনবল তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও স্বদিচ্ছা রয়েছে। সরকারকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করতে হবে আমাদের ব্যবসায়ীদের।

কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ শোয়েব বলেন, বর্তমান যুগ রোবটিকস, অটোমেশনের যুগ। অনেক শিল্প কারখানা আছে রোবটিকস, অটোমেশনে চলছে। কিন্তু তারপরেও গার্মেন্টস, স্পিনিং ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু দক্ষতার অভাবে চীন, জাপানের তুলনায় এখানে উৎপাদন কম। এখানে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন খাতভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের বিষয় একাডেমিক কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য দক্ষতা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। দক্ষতার অভাব থাকলে উৎপাদনশীলতা, রফতানি ও রফতানি আয় বৃদ্ধি-সবকিছুই বাধাগ্রস্ত হবে।

সভায় বাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্র ও করণীয় নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। প্রেজেন্টেশনে উন্নত শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ প্রাপ্তি সহজিকরণ, শিল্পের সাথে একাডেমির সমন্বয়, উন্নত প্রযুক্তির সাথে সমন্বয় করে একাডেমিক কারিকুলাম সাজানো, লিঙ্গবৈষম্য কমানো ইত্যাদির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক নিয়াজ আলী চিশতী, কমিটির কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ, সদস্যবৃন্দ।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *