সারাদেশ

আশুগঞ্জে ১০৪ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি পালনের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০৪ জনের নাম উল্লেখ করে দুইটি মামলা হয়েছে। মামলায় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনার কলি, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রিফাত সিকদার, একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে আসামি করা হয়েছে।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হাসান এজাহার দুটিকে মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করার জন্য আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। 

গত ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত আশুগঞ্জ গোল চত্ত্বরসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি পালনের সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলার চরচারতলার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী জয়ন্তী বিশ্বাস বাদী হয়ে ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। জয়ন্তী উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। 

একইদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর ও তদসংলগ্ন রাস্তার পাশে ভোজন বিলাস রেস্টুরেন্টে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একই গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী নাদিম ইসলাম বাদী হয়ে ৪৪ জনকে আসামী করে বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নাদিমের মামলায় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক আনার কলিকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আলী শিকদার রুবেল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত শিকদার, আড়াইসিধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম মিয়া, লালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের মোস্তফা সারোয়ার, চরচারতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হুমায়ুন সরকার ও তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোলায়মান মিয়াসহ ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

জয়ন্তির মামলায় আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রুবেল শিকদার, উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের শফিকুল ইসলাম ও আড়াইসিধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সায়েম, তালশহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলায়মান মিয়া এবং আড়াইসিধা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া ও শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিনসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলাগুলোর এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর ও তদসংলগ্ন রাস্তার পাশে ভোজন বিলাস রেস্টুরেন্টের সামনে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ মিছিল করে। আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠি, দা, কাঠের রোল, বল্লম, হকিস্টিক ও পিস্তল নিয়ে ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালায়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মামলার আসামিরা জয়ন্তী বিশ্বাসের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি করেন। এক পর্যায়ে তারা ৫টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। মামলার আসামীরা ভোজন বিলাস রেস্টুরেন্টের আসবাবপত্র ও মালামাল ভাঙচুর করে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি করে।

মামলার আইনজীবী নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, আদালত দুটি মামলা গ্রহণ করেছে। দুটি এজাহারকে মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করার জন্য আশুগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *