সারাদেশ

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হবে: তারেক রহমান

ডেস্ক রিপোর্ট: আমরা জনগনের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে আবারও সংযুক্ত করতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (০২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসাবে খুলনা বিভাগের সভায় তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মালিকানা এদেশের মানুষের আর স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তার ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার নির্বিঘ্ন করতে দলীয় সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করেছিল। কিন্তু ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে, জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করার লক্ষ্যে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার সেটা সংবিধান থেকে মুছে দিয়ে তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত রেখেছে।

বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষের নিরাপত্তা, বাক স্বাধীনতা, শান্তিতে ব্যবসা বাণিজ্য করার অধিকার, তরুণ ও যুবকের কর্মসংস্থান, নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, গোষ্ঠী সমতল পাহাড়ি নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান রাষ্ট্রেীয় অধিকার নিশ্চিত করা, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা, বিচার আইন ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করাই বিএনপি রাজনীতির অগ্রাধিকার।

এ সময় নেতাকর্মীদের আবেগের সাথে তারেক রহমান বলেন, যে বাড়িতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাস করেছেন, যে বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চিতে তার ও তার ভাইয়ের শৈশব কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে বাড়ি তার মায়ের সংসারের সূচনা আর বেদনার স্বাক্ষী সেই বাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে কতটা অসম্মানজনক ও অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেটা দেশবাসী দেখেছে, বিনা চিকিৎসায় তার একমাত্র ভাইকে নিদারুণ অবহেলায় মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে দলের তৃণমূলের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে মামলা হামলায় জর্জরিত হয়ে, পরিবার পরিজন বিসর্জন দিয়ে, ব্যবসা চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে হয় কারাগারে নয়তো আত্মগোপনে আর অগণিত নেতাকর্মী অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন দেশকে ভালোবেসে, গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে।

তিনি তৃণমূলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তারা যেমন অতীতের মত প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না তেমনি তিনি এবং দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়াও জানেন যে, দেশের মানুষও গত সতেরো বছর বাংলাদেশ নামের এক বৃহত্তর কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করেছেন। সুতরাং আজ হিংসা নয় বরং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সকল অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ বঞ্চনা সহ্য করে বিএনপি আজ জনগণের যে আস্থা আর ভালোবাসা অর্জন করেছে দলের কিছু বিপথগামীদের হঠকারিতায় মানুষের সেই আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা ক্ষতিগ্রস্থ হবে সেটা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। সেটা তিনি যেই হোন না কেন।

তিনি সমবেতদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট কারীদের চিহ্নিত করুন, প্রতিরোধ করুন, দল তাদের শুধু বহিষ্কারের অঙ্গীকারই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিচ্ছি।

তিনি দলের তৃণমুলের ওপর তার অগাধ আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে এক এগারোর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, দলের সকল সংকটকালে তৃণমূলই ছিল বিএনপির শক্তি, এরা শত প্রলোভন আর নির্যাতন উপেক্ষা করে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দিয়ে দলকে ধরে রেখেছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *