সারাদেশ

ইবির খালেদা জিয়া হল পরিত্যক্ত নাকি সংস্কার?

ডেস্ক রিপোর্ট: সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

০৭:০২ পিএম | ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ২০ ভাদ্র ১৪৩১ | ২৮ সফর ১৪৪৬

অভিযুক্ত আসামিরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি শাহরিয়াজ মোহাম্মদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী সাংবাদিক বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

এর আগে, গত ১৯ জুলাই রাত পৌনে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে শাহরিয়াজ মোহাম্মদকে মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের অন্তত ২৫ জন নেতা-কর্মী।

মামলার আসামিরা হলেন, আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী খালেদ মাসুদ, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইনের অনুসারী আকিব জাভেদ, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী এস, এম, ফয়সাল প্র. ফয়সাল সরকার,সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী হাসান মাহমুদ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী সৌরভ ভূঁইয়া, আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী ইয়াছিন আরফাত,সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী তানভির আলম তুষার, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী মামুন মিয়া, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী অনুপ সরকার আকাশ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী মাহিন রুবেল, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী ইসহাক আলম ফরহাদসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জন।

মামলার এজাহারে শাহরিয়াজ উল্লেখ করেন, আমি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স বর্ষে অধ্যয়নরত এবং পাশাপাশি দৈনিক পূর্বদেশ ও ctgkhobor.com পত্রিকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছি। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নির্বাচিত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। গত ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে হল ছাড়ার নির্দেশ প্রদান করেন। ১৯ জুলাই প্রশাসনের নির্দেশকে উপেক্ষা করে কিছু সংখ্যক ছাত্র অন্যায়ভাবে বিভিন্ন হলে অবস্থান করার সংবাদ পেয়ে আমিসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক সকাল দশটার দিকে সরেজমিনে খোঁজ খবর নিতে যাই এবং দেখতে পাই যে, বর্ণিত আসামিরাসহ আরও অন্তত ১৫০ জন ছাত্র অন্যায়ভাবে বিভিন্ন হলে অবস্থান করছে। আমি এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাই। এরপর এ বিষয়ে একটি সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রস্তুতি নিলে বর্ণিত আসামিগণ খবর পেয়ে পরিকল্পিতভাবে আমাকে মারধর করে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ১নং আসামির (খালেদ মাসুদ) নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিগণ জিরোপয়েন্ট এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে আমার পেছন দিক থেকে এসে অতর্কিত ভাবে আমার চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এ সময় আমি কিছু বুঝে উঠার আগে খালেদ মাসুদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মাথা বরাবর হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করতে চেষ্টা করে, কিন্তু তা আমার আমার ডান কাঁধে লেগে মারাত্মক আঘাত পাই।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, এ সময় (২-১১) নং আসামিগণ আমাকে এলোপাতাড়ি ভাবে কিল-ঘুষি লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নীলাফুলা জখম করেন। ২নং আসামি (ফয়সাল) আমাকে সজোরে লাথি মারিয়া মাটিতে ফেলে দেয়। একপর্যায়ে ২ নং আসামি (ফয়সাল) আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাতে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। অন্যদিকে ৫ নং আসামি (সৌরভ ভূঁইয়া) গাছের বাটাম দ্বারা আমার ডান পায়ে হাঁটুর নিচে উপর্যুপরি আঘাত করে মারাত্মক জখম করেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৪নং আসামি (হাসান মাহমুদ) আমার ব্যবহৃত পাওয়ার ব্যাংক জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এবং উক্ত সময় ৩ নং আসামি (ফয়সাল) পকেটে থাকা নগদ দুই হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।

এক পর্যায়ে আমার চিৎকারে আশেপাশের ছাত্র জনতা ও সাক্ষীগণ এগিয়ে আসলে আসামিগণ আমাকে এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে সাক্ষীগণ আহত অবস্থায় আমাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা করান। চিকিৎসা শেষে আমি এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেশ ও ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না বলে জানায়।

ভুক্তভোগী শাহরিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধ ঘোষণা করার পরও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলে অবস্থান করছিল। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সে কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় আমি হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি। আমার সাথে ঘটে যাওয়া এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. নুরুল আলম বলেন, মামলাটি কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলার তদন্ত হবে।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *