আন্তর্জাতিক

কেঁচো সারে ভাগ্যবদল আবু তাহেরের

ডেস্ক রিপোর্ট: চাঁদপুর সদর উপজেলায় কেঁচো সার (ভার্মিং কম্পোস্ট) উৎপাদন করে কৃষক আবদুল্লাহ আবু তাহের (৫৫) স্বাবলম্বী হয়েছেন। কেঁচো সার উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন সৌদি আরবের খেজুরের বাগানসহ সমন্বিত কৃষি খামার। কেঁচো সার উৎপাদনে এখন মাসে আয় করেন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।

সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক আবদুল্লাহ আবু তাহের বাড়ির উঠানে দোচালা টিনের ঘরের নিচে স্থাপন করেন রিং স্ল্যাব। কৃষি অফিস থেকে প্রথমে ৬টি সিমেন্টের তৈরি রিং স্ল্যাব দেয়া হলেও পর্যায়ক্রমে কৃষক শহীদুল্লাহ ১২৫ টি রিং স্ল্যাব তৈরি করে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। পরবর্তীতে হাউজের মাধ্যমে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। এসব রিং স্ল্যাবে তিন বছর ধরে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন তিনি। রিং স্ল্যাবে গোবর, মুরগির বিষ্ঠা ও কলাগাছ টুকরা টুকরা করে কেটে মিশ্রণ করা হয়। সব রিং স্ল্যাবে ছেড়ে দেয়া হয় কেঁচো। তারপর চটের বস্তা দিয়ে রিং স্ল্যাব ঢেকে রাখা হয়।

কৃষক আবদুল্লাহর উৎপাদিত কেচোঁ সার প্রতি কেজি ২৫ টাকা ও কেঁচো ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তার উৎপাদিত কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এছাড়া উৎপাদিত কেঁচো সার উৎপাদনের পাশাপাশি মুরগীর ফার্ম ও বস্তায় আদা চাষও করেন তিনি ।

স্থানীয় কৃষক কালাম মিজি, স্বপন ও কাদির বলেন, ‘এই কেঁচো সার ফসলে ব্যবহার করে আমরা ভালো ফলন পাচ্ছি। তাই ক্ষতিকারক রাসায়নিক সারের পরিবর্তে এখন কেঁচো সার ব্যবহার করছি।’ 

কেঁচো সার উদ্যোক্তা আবদুল্লাহ আবু তাহের জানান, ‘প্রথম দিকে কিছুটা কষ্ট হলেও এখন আর পিছনে তাকাতে হচ্ছে না। কৃষি বিভাগের সার্বিক পরামর্শে বাড়িতে আমি কেঁচো সার উৎপাদন করি। কেঁচো সার উৎপাদনে আমার স্ত্রী আমাকে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে থাকেন। প্রতি মাসে যে টাকা আয় হয় তাতে আমার সংসার চলে যায়। কেঁচো সার উৎপাদন করে এখন আমি সাবলম্বী।’ 

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. তপন রায় বলেন, ‘ভার্মি কম্পোস্ট সার ফসল উৎপাদনে খুবই উপযোগী একটি সার। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এ সার উৎপাদন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা কৃষক পর্যায়ে এ সারের ব্যবহার বাড়াতে কাজ করছি।’ 

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী জানান, ‘জেলার বিভিন্নস্থানে পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদনে ১৪ জন উদ্যোক্তা আছেন। তাদেরকে উদ্বুদ্ধকরণের কারণে আরও নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের কারণে নতুন উদ্যোক্তারাও লাভবান হচ্ছে। ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রাকৃতিকভাবে খুবই নিরাপদ। মাটির গুণাগুণ রক্ষার্থে কাজ করে। জৈব সার বৃদ্ধিতে ভার্মি কম্পোস্ট ভালো ভূমিকা রাখে।’ 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *