আন্তর্জাতিক

টুপি ও সুগন্ধি নিতে শেষমুহূর্তে ক্রেতাদের ভিড়

ডেস্ক রিপোর্ট: আর মাত্র একদিন বাকি। দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে ঘিরে মানুষের কেনাকাটা প্রায় শেষের দিকে। এখন বাকি টুকিটাকি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। এরমধ্যে অন্যতম আতর, টুপি ও জায়নামাজ।

ঈদের নামাজের জন্য এসব অনুষঙ্গ যেমন প্রয়োজন, তেমনি এসব ছাড়া ঈদের নামাজের পরিপূর্ণতাও অনেকটা না হওয়ার মতো। আর সেজন্য ঈদের বাজারে এখন ভিড়টা বেশি দেখা যাচ্ছে টুপি, আতর, সুরমা ও জায়নামাজের দোকানগুলোতে। এই কেনাকাটা চলবে ঈদের দিন নামাজের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা, নিউ মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে টুপি, জায়নামাজ, আতর, সুরমা ও তসবিহর জমজমাট বিকিকিনি।

টুপি৷ জায়নামাজ আর সুগন্ধী নিতে ক্রেতার ভিড়

আন্দকিল্লাহ মসজিদ মার্কেট স্থায়ী দোকানসহ শহরের বিভিন্ন মোড় ও মসজিদের সামনে ভাসমান দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড় ছিল।

থরে থরে সাজানো বাহারি রঙের টুপি। আকর্ষণীয় নকশা আর নানা কারুকার্যে তৈরি এসব টুপির প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। দেশী টুপির পাশাপাশি নানান ধরনের নকশার আর আকৃতির বিদেশী টুপিও পাওয়া যাচ্ছে এসব দোকানে।

নকশার সঙ্গে মিল রেখে এসব টুপির চমকপ্রদ সব নাম দিয়েছেন বিক্রেতারা। কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, কাজ ও মানভেদে এসব টুপি ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এরধ্যে দেশি তৈরি সাধারণ টুপি ১০ থেকে শুরু করে ১০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। অন্য দিকে পাকিস্তানি টুপি ২০০ থেকে ৮০০ টাকা, চীনা টুপি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ইন্ডিয়ান টুপি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, সৌসি টুপি ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এরমধ্যে ভারতের গুজরাটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, সিডনি ৪০০, পাঠান ৪৫০ এবং ছোট পুঁতির সঙ্গে সোনালি কাজ করা প্রতিটি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া নেটের তৈরি চীনা টুপি ১৫০ টাকা ও তুর্কি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছে দোকানিরা।

ভাসমান দোকানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে বাহারি রঙের টুপি 

বাবার সাথে টুপি কিনতে আসা হোসাইন আরাফাত বলেন, বাসায় অনেক টুপি আছে। ঈদের দিন নতুন জামার সাথে নতুন টুপি পরার আনন্দ অন্যরকম। তাই বাবার সাথে টুপি কিনতে এসেছি। আমার দুই ভাইয়ের জন্যও টুপি নেব।

ক্রেতাদের টুপি দেখাতে দেখানে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, রমজানের শুরু দিকে ভাল বিক্রি হয়েছে। মাঝামাঝি সময়ে একটু ঠান্ডা ছিল। তবে এখন শেষ পর্যায়ে এসে ভাল বেচাকেনা হচ্ছে। দেখছেন তো ক্রেতাদের কেমন ভীড়। এ ভীড় চাঁদরাতে আরও বেড়ে যাবে। প্রতিবছরই এমন হয়।

বয়স্করা সাদাসিধা টুপি নিচ্ছেন। আর তরুণদের পছন্দ নানান রঙের নকশা করা ঝিকজাক টুপি। ঈদের বাজারে শিশু ও তরুণদের টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই ব্যবসায়ীরা।

নিউ মার্কেট এলাকার টুপি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, করোনার পর গত কয়েক বছর ব্যবসা ভালো হয়নি। সে তুলনায় এবছর ভাল বেচাকেনা হচ্ছে। টুপি এবার বেশি দামে আনতে হয়েছে। তাই দামও একটু বেশি নিতে হচ্ছে। এবার ইন্ডিয়ান আর পাকিস্তানি টুপির চাহিদা বেশি।

এদিকে আন্দরকিল্লার মসজিদ মার্কেটের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, টুপির সাথে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে অন্যতম অনুষঙ্গ সুগন্ধি আতর ও জায়নামাজ। মান ভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি বিদেশ আতর-জায়নামাজ। এরমধ্যে দেশি আতর প্রতি মিলি ৪০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অন্য দিকে বিদেশ থেকে আনা প্রতি মিলি আতর বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত। জায়নামাজও ৪০০ থেকে শুরু করে ৩০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম নেওয়া হচ্ছে।

দম ফেরার ফুরসত নেই সুগন্ধীর দোকানে 

মো. শওকত আলি নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদের দিন পাঞ্জাবিতে সুগন্ধি আতর মেখে ঈদগাহে যাব। তাই ৩ মিলি আদর নিয়েছি ২০০ টাকায়। এমনে সব সময় কিন্তু ব্যবহার করি না। ঈদ উপলক্ষে কেনা হচ্ছে।

একই মার্কেটে এসেছেন স্কুল পড়ুয়া তাশরিফ। তিনি আসছেন জায়নামাজ কিনতে। ঘরে অনেক জায়নামাজ থাকলেও নতুন জায়নামাজে ঈদের আনন্দটা অন্যরকম থাকে। তিনি বলেন, ঘরে আগের জায়নামাজ আছে। আমার আর দাদার জন্য দুটি জায়নামাজ কিনতে এসেছি।

আন্দরকিল্লা মসজিদ মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে আতর বিক্রি করছেন মো. শোয়াইব। তিনি বলেন, আগের চেয়ে আতুর-সুরমা বিক্রি বেড়েছে। একসময় কিছু নির্দিষ্ট মানুষে এসব সুগন্ধি ব্যবহার করেও বর্তমানে প্রায় মানুষে ব্যবহার করে। তাই আগের তুলনার বিক্রি বেড়েছে। আর এখন তো ঈদের মৌসুম, এখন আরও বেড়েছি। মানুষ টুপির সাথে আতরও নিচ্ছে। অনেক আবার বেশি পরিমাণের নিয়ে যাচ্ছে, উপহার দেওয়ার জন্য। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত আমাদের ব্যবসা জমজমাট থাকে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *