সারাদেশ

আ. লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল নির্বাচন করতে পারবে না: রিজভী

ডেস্ক রিপোর্ট: বাহিনী হিসেবে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের সম্মান-ইজ্জত কোথায় রইলো, এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদ নজিরবিহীন দুর্নীতি করেছেন। অপরদিকে, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজকেও যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে। সংসদ সদস্য আনারকে কলকাতায় নিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে।

একটা ইনস্টিটিউশন হিসেবে এখন সেনাবাহিনীর অবস্থা কী! সেনাবাহিনীর সম্মান-ইজ্জত কোথায় থাকে, যখন তার সাবেক সেনাপ্রধানকে স্যাংশন দেওয়া হয়! পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা কোথায় থাকে, যার সাবেক প্রধানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়! এরা (আওয়ামী লীগ সরকার) দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে।

সোমবার (৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ সব কথা বলেন।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল সরকারের সমালোচনা করে বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। এই সময়টা তৈরি করেছে বর্তমান সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছর ধরে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে, জোর করে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে।

এ সরকার ভোট না দেওয়ার কারণ হলো, ভোট দিলে তারা ১০টার বেশি আসন পাবে না। এসরকার বলে, আমরা নাকি ভালো জিনিস দেখতে পারি না! ভালো জিনিস হচ্ছে, তোমাদের (আওয়ামী লীগ) জন্য! তোমরা মেগা প্রজেক্টের নাম দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করেছো! আজকে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের নামে দুর্নীতি করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার দলীয় সরকারের অধীনে যে তিনটা নির্বাচন করেছে, এ সব প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, এভাবে বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এর মানে হলো, আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তাতে কোনো দলই নির্বাচনে আসে না। ৬৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে যায়নি। আজকে নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে! আজকে এই সরকার শুধু রাজনীতিকেই ধ্বংস করেনি বরং পুরো দেশটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে!

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে, আমাদের নিজেদেরকে সংগঠিত করার। আমরা চেষ্টা করছি, জেল খাটছি, আমরা বারবার জেলে যাচ্ছি কিন্তু আমরা এখনো চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি।

এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য আমাদের সংগঠনকে আরো দৃঢ় করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে দূর করে ফেলতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে এক জোটে নামতে হবে। কারণ, এটা বিএনপির সমস্যা না, এটা বাংলাদেশের সমস্যা! এটা জাতির সমস্যা!

এই জাতি ভবিষ্যতে টিকবে কি টিকবে না, আপনার ছেলেরা ভবিষ্যতে চাকরি পাবে কি পাবে না, তারা স্বাধীনভাবে চলতে পারবে কি পারবে না, তার পুরোটাই নির্ভর করছে, এই সরকারকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরাজিত করতে না পারা পর্যন্ত!

বিএনপির মহাসচিব ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশে বলেন, তারা চুরি করতে করতে এমন অবস্থা তৈরি করেছে, এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন। জিয়ার আহ্বানেই দ্বিধাবিভক্ত জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটা সরকার মুছে ফেলতে চায়। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনো অস্বীকার করি না। ৪৩ বছর পরেও জিয়াকে এদেশের মানুষ ভোলেনি। যারা তার অবদানকে অস্বীকার করে, তারা তো দেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করে। কারণ, তিনি তো স্বাধীনতার ঘোষক।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল ড. শাহিদা রফিক প্রমুখ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *