জুয়ার সাইটের আড়ালে মাসে ২৫ কোটি টাকা পাচার, গ্রেফতার ৭
ডেস্ক রিপোর্ট: অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওয়ানএক্সবেটের (1xbet) ম্যানেজারসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ১৭টি বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন ও ৯টি এজেন্ট সিমসহ মোট ২২টি সিম উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ আজাদ রহমান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাইফ বিন ওহিদুল (৩০), মো. জামিল হোসেন (৪২), মো. রাসেল শেখ (২৩), মো. সাব্বির হোসেন (২২), মো. সোহাগ হোসেন (২৪), মাইনুদ্দিউদ্দিন শিকদার ছোটন (২৫), ও মো. ইমন হোসেন (২৩)।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে সিআইডি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ওয়ানএক্সবেটসহ বাংলাদেশে যতগুলো বেটিং সাইট রয়েছে তার বেশিরভাগই মূলত রাশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসেবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেয়। আবার জুয়ার এজেন্টরা এ সমস্ত অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক নিয়োগ দেন।
আরও বলা হয়, ওয়ানএক্সবেটের অন্যতম একজন বাংলাদেশি এজেন্ট হচ্ছে বরিশালের তারেক রহমান (তুহিন) নামের এক ব্যক্তি। জুয়ার এজেন্টের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সে গ্রেফতার সাইফ বিন ওহিদুলকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেয় এবং পরবর্তীতে তাকে পার্টনার হিসেবে এজেন্টশিপ দেয়। এই বিপু আবার এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গ্রেফতারকৃতদেরকে নিয়োগ দেয় যারা টেকনোলজিতে বেশ দক্ষ। এরা বিপু এবং তুহিনের জুয়ার চ্যানেলে সকল লেনদেন এবং অ্যাপস পরিচালনা করে থাকে।
ওয়ানএক্সবেটের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া টাকার সিংহভাগ দেশের বাইরে পাচার হতো জানিয়ে সিআইডি জানায়, এই চক্র প্রতিমাসে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন করে। অনলাইন জুয়ার লেনদেনের এই টাকার সিংহভাগ দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। দেশের হাজার হাজার লোক অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে।
অনলাইন জুয়া খেলার জন্য আলাদা আলাদা বেটিং সাইট বা ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথমেই একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের পরে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অঙ্কের একটি ব্যালেন্স যোগ করতে হয়। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরে টাকা পাঠালে ব্যালেন্স যোগ হয়ে যায়। ব্যালেন্সযুক্ত হওয়ার পরে সাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলার যে অপশন রয়েছে সেগুলো থেকে যেকোনো একটি পছন্দ অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট হোল্ডার খেলতে পারেন। এক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি জিতলে অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স জমা হবে। আর হেরে গেলে টাকা চলে যায় জুয়ার সাইট পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে। যেমন- ক ও খ দুইটি ক্রিকেট টিমের খেলা চলাকালীন সময়ে অনলাইন জুয়ার সাইটে অফার দেওয়া হলো যে, ক টিম যদি খেলায় জিতে যায় তাহলে জুয়াড়িরা পাবে ২ হাজার টাকা আর যদি হেরে যায় তাহলে বিনিয়োগকৃত টাকা চলে যাবে সাইট পরিচালনাকারীদের কাছে।
গ্রেফতারকৃতদের পল্টন (ডিএমপি) থানার মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। সেই সঙ্গে ওয়ানএক্সবেটের অন্যতম একজন বাংলাদেশি এজেন্ট বরিশালের পলাতক তারেক রহামান তুহিনসহ এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে সিআইডি তৎপর রয়েছে বলে জানােনো হয়।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।